পটিয়ায় চাকরিচ্যুতদের অবরোধ প্রত্যাহার, ৪ ঘণ্টা পর সচল হলো ২০ ব্যাংক
Published: 10th, August 2025 GMT
চট্টগ্রামের পটিয়ায় ব্যাংক অবরোধ কর্মসূচি প্রায় চার ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করা হয়েছে। দেশের ৬টি বেসরকারি ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে উপজেলার প্রায় ২০টি ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। পরে বেলা একটার দিকে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর এই কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। এরপর উপজেলায় সব ব্যাংকের লেনদেন ও সেবা চালু হয়েছে।
চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ব্যাংক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় পটিয়ায় সব ব্যাংকের শাখা কার্যালয়ে লেনদেনসহ ব্যাংকিং সেবা বন্ধ হয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীরা কোনো ব্যাংকের এটিএম বুথও গ্রাহকদের ব্যবহার করতে দেননি। চাকরিচ্যুত কর্মীরা বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর তাঁরা চাকরিচ্যুত হন।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, কোনো কারণ ছাড়াই প্রায় সাত হাজার কর্মীকে এসব ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এর অধিকাংশই চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা। তাই তাঁরা বেশ কিছুদিন ধরে চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
আন্দোলন চলাকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পৌর সদরের থানার মোড়ের একটি কার্যালয়ে আন্দোলনরত ব্যক্তিদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আসাদুজ্জামান, পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান ও পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান। বৈঠকের পর কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনচাকরিচ্যুতদের বিক্ষোভে চট্টগ্রামের পটিয়ায় ২০ ব্যাংকের সেবা বন্ধ৩ ঘণ্টা আগেআন্দোলনকারীদের একজন শিবলু আলম। তিনি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের চুয়াডাঙ্গা শাখার ক্যাশ অফিসার ছিলেন। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বৈঠকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাঁদের দাবির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন। এ কারণে তাঁরা অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন। একটার পর সব ব্যাংকের শাখায় লেনদেন শুরু হয়েছে।
পটিয়া থানার ওসি নুরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা বৈঠকে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। এখন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সবকিছু চলছে। জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দিনও তাঁদের ব্যাংকে লেনদেন শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা ব্যাংকের প্রধান ফটক খুলে দেওয়ার পর তাঁরা কার্যালয়ে প্রবেশ করেছেন। এরপর ব্যাংকের লেনদেন শুরু হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ কর চ য ত কর মকর ত ল নদ ন উপজ ল অবর ধ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ‘৮টি বিমান’ ভূপাতিত করা হয়েছে: ট্রাম্পের নতুন দাবি
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার আবার দাবি করেছেন, গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত তিনিই থামিয়েছিলেন। তবে তিনি এবার সংঘাতে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার সংখ্যায় বদল এনেছেন। ///এবার তিনি বলেছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের ভারতে হামলার সময় ‘আটটি বিমান’ গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বিশ্বের সব যুদ্ধ ও সংঘাত বন্ধে তাঁর করা বাণিজ্য চুক্তি ও শুল্কের হুমকি হচ্ছে বড় হাতিয়ার।
গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামির ‘আমেরিকান বিজনেস ফোরামে’ বক্তৃতাকালে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন শক্তির মাধ্যমে সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করছে। কারণ, কেউ তাদের সঙ্গে ‘ঝামেলা করতে আসবে না’।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যেসব বাণিজ্য চুক্তি করেছে, সেগুলোর উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, তাঁর প্রশাসন চীন, জাপান ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে। এরপর তিনি আবারও দাবি করেন, তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের আট মাসে তিনি ‘আটটি যুদ্ধ’শেষ করেছেন।
ভারত ও পাকিস্তানের ‘সংঘাতের অবসান’ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তিনি যখন দিল্লি ও ইসলামাবাদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সই করার প্রায় মাঝামাঝি সময়ে ছিলেন তখনই তিনি শুনতে পান, এই দুটি প্রতিবেশী দেশ ‘যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে’। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, তারা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তাঁর প্রশাসন কোনো দেশের সঙ্গেই কোনো চুক্তি করবে না।
বিজনেস ফোরামের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি দুই দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য চুক্তি করার মাঝামাঝি জায়গায় ছিলাম। তখনই আমি একটি নির্দিষ্ট খবরের কাগজের প্রথম পাতায় পড়লাম, তারা যুদ্ধ করতে যাচ্ছে। সাত বা আটটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। মূলত আটটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল।’
ট্রাম্পের এই সংখ্যা তাঁর আগের দাবির সংখ্যার থেকে ভিন্ন। প্রথমে তিনি বলেছিলেন তিনটি বিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। এরপর জুলাই মাসে তিনি সংখ্যাটি বাড়িয়ে পাঁচ করেন। পরে আগস্টে সংখ্যাটি আরও বাড়িয়ে সাত করা হয়। আর এখন, ট্রাম্পের কাছে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় গুলি করে নামানো বিমানের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ‘৮-এ’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বন্ধের হুমকি দেওয়ার পরই ‘আমি একটি ফোন কল পেলাম, তারা শান্তি চায়। তারা থেমে গেল। আমি বললাম ধন্যবাদ, চলুন ব্যবসা করি। এটা দারুণ না?’
ট্রাম্প এর আগেও বারবার দাবি করেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘পুরোপুরি ও দ্রুত’ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার কৃতিত্ব তাঁর প্রশাসনের।
তবে ভারত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারত জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইসলামাবাদের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কোনো ধরনের মধ্যস্থতার জন্য তৃতীয় পক্ষের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।