রাউজানে দেড় শ বছরের পুরোনো পুকুর ভরাট, জনপ্রতিনিধিসহ ৫ জন কারাগারে
Published: 10th, August 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে দেড় শ বছরের বেশি পুরোনো পুকুর ভরাট করার অভিযোগে একজন জনপ্রতিনিধিসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে শুনানি শেষে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহমুদুল হক এই আদেশ দেন। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার করা একটি মামলার শুনানিতে তাঁরা হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুহাম্মদ খোরশেদুল ইসলাম (৫০), একই ইউনিয়নের পূর্ব কচুখাইন গ্রামের বাসিন্দা মুহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম (৪৮), আলী আকবর (৬০), মকবুল আহমদ (৫৫) ও মুহাম্মদ খোরশেদ (৫২)। ২০২৩ সালের ৩১ মে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজারুল ইসলাম বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা করেছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কচুখাইন মুহম্মদীয়া দরবার শরিফ–সংলগ্ন ১৬০ বছর আগে খনন করা পুকুরটি ২০২১ সালে ভরাটের কাজ শুরু করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় তা বন্ধ হয়। এরপর ২০২৩ সালের শুরুতে আবারও কর্ণফুলী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে পুকুরটি ভরাটের কাজ শুরু করেন তাঁরা। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ দেন। সে সময় পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনার তদন্তে গিয়ে সত্যতা পান। এরপরও তখনকার জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ওই পুকুর ভরাট করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দাবি, তাঁরা সামাজিকভাবে কবরস্থান বানানোর জন্য মালিকদের সম্মতি নিয়ে এটি ভরাট করেছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের গবেষণা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পুকুর ভরাটের ওই মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিতে গেলে আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ক র ভর ট ম হ ম মদ
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লার সেই বিএনপিকর্মী ইব্রাহিম মারা গেছেন
ফতুল্লার বিএনপি কর্মী ইব্রাহিম (৫২) মারা গেছেন। সে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ছিলেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীনবস্থায় মারা যান।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে হাজিগঞ্জ জামে মসজিদে নিহতের নামাজের জানাজা শেষে পাঠানটুলি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত ইব্রাহিম ফতুল্লা থানার ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড হাজীগঞ্জের আব্দুল জলিলের পুত্র। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।
জানা যায়,২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে বিএনপির ডাকা মহা সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদলের ব্যানারে সে অংশগ্রহণ করে।
সমাবেশের শেষের দিকে মুল মঞ্চের পেছনের দিকে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা,কর্মীও সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। সে সময় পুলিশ বিএনপি নেতা- কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের কে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
ইব্রাহিম পুলিশের হামলায় মারাত্নক আহত হয়ে রাস্তায় পরে থাকে। সে সময় সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। ঘটনার চারদিন পর তার সহোযোগিরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে খুঁজে পায়। দীর্ঘদিন সহোযোগিরা নিজেদের অর্থায়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর আল বারাকা নামের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা করায়।
পরবর্তীতে ইব্রাহিমকে নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন হলে বিএনপি নেতা ও শিল্পপতি আবু জাফর আহমেদ বাবুল তার চিকিৎসার দ্ধায়িত্ব নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পিজি হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানেই রোববার রাতে তিনি মারা যান।
ফতুল্লা ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ পারভেজ মিয়া জানান,নিহত ইব্রাহিম ২০২৩ সালে ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ঘোষিত পল্টন পার্টি অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি ও ইউনিয়ন যুবদলের সাথে ঢাকায় গিয়েছিলেন ।
সমাবেশ চলাকালে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন টিপু ও নিহত ইব্রাহিম এবং তিনি সহ আরো নেতা-কর্মীরা পল্টন পার্টি অফিস সংলগ্ন চায়না টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয়। এতে করে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পরে।
অতর্কিত হামলায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার পর প্রায় চার দিন পর পত্রিকার নিউজে দেখতে পায় ইব্রাহিম নামে একজন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সেই সংবাদের পর তার পরিবারের লোকজন এবং ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন আলী ঢাকা মেডিকেলে খোঁজ নেওয়ার পরে তারা নিশ্চিত হন যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে থাকা চিকিৎসারতি হচ্ছে তাদের নিখোঁজ ইব্রাহিম।
ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা শেষ করে তাকে বাসায় আনা হয়। বাসায় আনার পরে উনি আবার অসুস্থ হয়ে পরে। ফলে ৮ নং ওয়ার্ডের সকল নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় পুনরায় তাকে মদনপুর আল বারাকা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় তিন মাস চিকিৎসা শেষে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পরেন।
এমতাবস্থায় নাসিক ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক রিপন তাকে দেখতে আসলে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ পায়। প্রকাশিত সংবাদের পর বিএনপি নেতা শিল্পপতি প্রাইম বাবুল ভাই তার চিকিৎসার দ্ধায়িত্ব নেন।
বাবুল ভাই নিজে এসে তার দাত্ব নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পিজি হাসপাতালে ভর্তি করান। দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমান ১১ টা ৪০ মিনিটের সময় তিনি ইন্তেকাল করেন।