মহাসড়ক অবরোধ করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন
Published: 11th, August 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে এবার মহাসড়ক অবরোধ করে ওরিয়েন্টেশন (পরিচিতি অনুষ্ঠান) অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন শিক্ষকেরা।
আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন–৩–এর সামনে বগুড়া–নগরবাড়ী মহাসড়ক অবরোধ করে পরিচিতি অনুষ্ঠান হয়। এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন লোকজন।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি বিভাগের ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের বরণ ও ওরিয়েন্টেশন বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী মিলনায়তনে সকাল ১০টার দিকে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় ও মিলনায়তনের আসনসংখ্যা খুবই সীমিত হওয়ায় সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে মহাসড়কেই নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়েছে। এ সময় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের চেয়ারম্যান নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের মাধ্যমে স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিপিপি আগামী একনেক সভায় অনুমোদনের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আরও পড়ুনরবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ, প্রায় ২ ঘণ্টা ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ বন্ধ১০ আগস্ট ২০২৫এ সময় নবীন শিক্ষার্থী সুমন আহমেদ বলেন, ‘সত্যিই নতুন অভিজ্ঞতা। এই অভিজ্ঞতা আনন্দের ও বিষাদের। আজ যদি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস থাকত, তাহলে আমাদের হয়তো মহাসড়কে ওরিয়েন্টেশন হতো না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনেই স্থায়ী ক্যাম্পাসের আন্দোলনে নিজেকে যুক্ত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার দ্রুত আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়নের দাবি মেনে নেবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি দ্রুত অনুমোদনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আমাদের দাবি জানিয়েছিল যে ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন রাস্তায় নিতে হবে। আমাদের মিলনায়তন এত ছোট যে মাত্র ৬০ জন একসঙ্গে বসতে পারে। যেখানে নতুন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫০। ফলে আমাদের বাধ্য হয়ে রাস্তায় ওরিয়েন্টেশন করতে হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অংশীজন ডিপিপি হুবহু ও দ্রুত অনুমোদনের জন্য সরকারের সুনজর কামনা করছি। এতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন আরও প্রাণবন্ত ও সহজ হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নব ন শ ক ষ র থ আম দ র অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের
থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।
থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এফএওর সূচক কমেছেপ্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।