জাজিরায় ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ দেওয়ার দাবি, অন্যথায় পদ্মা সেতু ব্লকেডের ঘোষণা
Published: 12th, August 2025 GMT
পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধ ও এর আশপাশে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জাজিরার নাওডোবা ইউনিয়নের মঙ্গলমাঝি–সাত্তার মাদবর বাজারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে স্থানীয় বাসিন্দাসহ বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অংশ নেন।
সমাবেশে জাজিরায় ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানানো হয়। আগামী তিন দিনের মধ্যে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদনের ঘোষণা দেওয়া না হলে পদ্মা সেতু ব্লকেড করার ঘোষণা দেন নেতারা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসির উদ্দিন, সাবেক অর্থ সম্পাদক (কোষাধক্ষ) মজিুবর রহমান, জামায়াতের জাজিরা উপজেলা আমির মাসুম বিল্লাহ, গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ মুন্সি, এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী সবুজ তালুকদার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক আকরাম হোসেন প্রমুখ।
গত বছর নভেম্বর থেকে কয়েক দফায় ভাঙনে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধের এক কিলোমিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধের পাশে থাকা ৩৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ৫৭টি বসতবাড়ি গত দুই মাসে বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে অন্তত ২৫০টি বসতঘর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধের পাশের তিনটি গ্রামের ৬০০ পরিবার ও মঙ্গলমাঝি-সাত্তার মাদবর ঘাট ও বাজারের ২৪০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ঝুঁকিতে পড়েছে।
গতকাল বিকেলে জাজিরার মঙ্গলমাঝি-সাত্তার মাদবর বাজারে সমাবেশে নদীভাঙনের শিকার ভুক্তভোগী লোকজন অংশ নেন। পরে সন্ধ্যার দিকে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করা হয়।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, ‘ভাঙনে শত শত মানুষ ভিটেমাটি হারিয়েছেন। ভাঙন রোধে কোনো কার্যকর ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে না। গত দেড় মাসে ১ লাখ ৩০ হাজার বালুভর্তি জিওব্যগ ফেলার দাবি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ তথ্য আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমরা এর স্বচ্ছ হিসাব দাবি করছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পদক্ষেপ না নিলে পদ্মা সেতু ব্লকেড করে দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধ সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব পানি উন্নয়ন বোর্ডে জমা দেওয়া হয়েছে। এটি যাচাই-বাছাই শেষে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় তা অনুমোদন দিলে দ্রুততম সময়ে সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। দুই মাস ধরে ভাঙন ঠেকানোর জন্য বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। জিওব্যাগ ফেলার হিসাব স্বচ্ছতার সঙ্গে রাখা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ, নওগাঁয় ইউএনওর অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন
নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান ও ধামুইরহাট পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালামের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের শাস্তি ও ইউএনওর অপসারণের দাবিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, উপজেলার মঙ্গলকোঠা আবাসিক এলাকায় ধামুইরহাট পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার লোকজনের সঙ্গে এলাকাবাসীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। ময়লা ফেলতে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান ও পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালাম ঘটনাস্থলে যান। এ সময় ওই দুই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে মঙ্গলকোঠা এলাকার এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুই নারীকে মারধর করেন।
গৃহবধূ সামিরন খাতুন বলেন, ‘পৌরসভার লোকজন গাড়িতে করে আমাদের এলাকায় ময়লা ফেলতে এলে এলাকার সবাই মিলে বাধা দিই। বসতবাড়ির আশপাশে ময়লা ফেললে সমস্যা হবে বলে ইউএনওকে ময়লা না ফেলতে এলাকাবাসী অনুরোধ করেন। কিন্তু ইউএনও আমাদের কথা না শুনে আমাকেসহ মিতুকে (অন্তঃসত্ত্বা নারী) নিজেই লাঠি দিয়ে মারধর করেন। আমরা ইউএনওর অপসারণসহ তাঁর কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে স্থানীয় আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘ইউএনও আমার গর্ভবতী স্ত্রীর গায়ে তুলেছে সবার সামনে। একজন ইউএনওর আচরণ এমন হলে আমরা বিচার কার কাছে পাব?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান বলেন, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা একটি খাস জমিতে ময়লা ফেলতে গেলে স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য তিনি ওই এলাকায় গেলে এলাকার কিছু লোক তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সেখানে কয়েকজন অবৈধ দখলদার নারী-পুরুষ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আনসারদের গায়ে হাত তোলেন। নারীদের মারধরের অভিযোগের বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ‘সেখানে কারও গায়ে হাত তোলা হয়নি। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, আজ মানববন্ধন করে কিছু লোক ইউএনওর বিরুদ্ধে নারীকে মারধরের অভিযোগ করেন। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।