বাংলাদেশে থাকা ৭১ ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর পাশে মাস্তুল ফাউন্ডেশন
Published: 14th, August 2025 GMT
বাংলাদেশের স্বনামধন্য মানবিক সংগঠন মাস্তুল ফাউন্ডেশন বাংলাদেশে অবস্থানরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য এক বিশেষ মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। চলমান সংঘাতের কারণে বিপর্যস্ত ৭১ জন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ও পড়াশোনা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে সংগঠনটি।
সম্প্রতি ফিলিস্তিন দূতাবাসের মাধ্যমে এই সহায়তা হস্তান্তর করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত খরচ মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মাস্তুল ফাউন্ডেশন দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে থেকে কাজ করে আসছে। এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে তা আবারো প্রমাণ হলো।
এছাড়া মাস্তুল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘Stand with Palestine’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনের মানুষের সংগ্রামের কথা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা এবং ছাত্রদের সহায়তা প্রদান করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান।
শুধু তাই নয়, মাস্তুল ফাউন্ডেশন ২০২৪ সালের রমজান মাস থেকে গাজায় যুদ্ধ বিধ্বস্ত মানুষের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অনাথ শিশুদের দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে তারা জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করে। সেই কার্যক্রম এখনও চলমান রয়েছে।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, “গাজার মানুষ ও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের মানবিক দায়িত্ব। আমরা চাই, তারা যেন পুনরায় স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে যেতে পারেন। এই অবস্থায় তাদের প্রতি আমাদের এই সমর্থন তাদের মনবলকে আরো দৃঢ় করবে। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আমরা তাদের সহায়তায় কাজ চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফিলিস্তিনের এক শিক্ষার্থী বলেন, “বাংলাদেশে আমরা পরিবার থেকে দূরে, কিন্তু মাস্তুল ফাউন্ডেশনের সহায়তা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা একা নই।”
মাস্তুল ফাউন্ডেশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত একটি স্বনামধন্য ও সেবামূলক জাতীয় প্রতিষ্ঠান। বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মাস্তুল ফাউন্ডেশন দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ ও শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।
প্রতিষ্ঠানটির মানবিক কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- করোনা মহামারির সময় দাফন সেবা প্রদান, ২০২২ ও ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জরুরি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, ২০২৩ সালের তুরস্কের ভূমিকম্পে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা প্রদান।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের অন্যতম সফল প্রকল্প ‘যাকাত স্বাবলম্বী’ এর মাধ্যমে অসংখ্য অসহায় ব্যক্তি ও যুব সমাজের জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে, যা তাদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলছে। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিন বিনামূল্যে অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিতদের একবেলার খাবার পৌঁছে দিচ্ছে সংগঠনটি।
এছাড়াও, ঢাকার হাজারীবাগ বারইখালি এলাকায় নিজস্ব মাদ্রাসা, শেল্টারহোম, এতিমখানা ও মেহমানখানা রয়েছে।
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সহ য ত র জন য ম নব ক
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের
থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।
থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এফএওর সূচক কমেছেপ্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।