সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ৪৭০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি
Published: 15th, August 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ৪৭০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এখন পর্যন্ত এ স্থলবন্দর দিয়ে ১৩ ব্যবসায়ীকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সোনামসজিদ উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক সরিম ঘোষ।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ১৩ জন আমদানিকারককে ৪৭০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুজন আমদানিকারক চারটি ট্রাকে ১০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করেছেন।
আরো পড়ুন:
দাম বাড়ছে পেঁয়াজের, কী বলছেন ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা
সবজি, পেঁয়াজ, মাছ ও ডিমের দাম বেড়েছে
প্রায় সাড়ে ৪ মাস পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল, উল্লেখ করে সরিম ঘোষ আরো জানান, চলতি বছরের এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। গত বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ১৪ আগস্ট আবারও পেঁয়াজ আমাদনি শুরু হয়েছে। এবার একেকজনকে ৩০ ও ৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, আমদানির খবরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে।
শিবগঞ্জ বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আলাউদ্দিন বলেছেন, কয়েকদিন ধরে রকমভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এখন পেঁয়াজের দাম ২ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
এ বিষয়ে আরো জানতে যোগাযোগ করা হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের এক্সপার্ট কিউরার মোহা.
ঢাকা/শিয়াম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আমদ ন ম ট র ক টন প বগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
হিলিতে আমদানিকৃত চাল খালাস করছেন না আমদানিকারকরা
দীর্ঘ চার মাস পর চাল আমদানিতে সরকারের অনুমতি পেলেও কাস্টমস শুল্ক-কর বেশি থাকায় চাল আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। শুল্ক-কর কমার আশায় অনেক আমদানিকারক ব্যাংকে এলসি করলেও আর্থিক লোকসানের ভয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ রেখেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে চালের ডিউটি কমেছে এমন কোনো আদেশ পাওয়া যায়নি।
এদিকে, গত মঙ্গলবার-বুধবার দুপুর পর্যন্ত ভারত থেকে ১৫টি ট্রাকে চাল আমদানি করা হয়েছে। তবে চালের চালান দেশে আনা হলেও শুল্ক বেশি হওয়ার কারণে কাস্টমস থেকে খালাস করছেন না আমদানিকারকরা।
চাল আমদানিকারকরা বলছেন, এই অবস্থায় চাল আমদানি করলে প্রতি কেজিতে কাস্টমস শুল্ক-কর পড়বে ৩১ টাকা। আবার ভারতে চালের আমদানি মূল্য প্রতি মেট্রিকটন ৫৩০-৫২০ ডলার। তাতে প্রতি কেজি চাল বাংলাদেশি টাকায় ৬৩-৬৫ টাকা পড়ে। সবমিলিয়ে প্রতি কেজি চাল আমদানি করতে পড়বে ৯৫-৯৬ টাকা। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে চাল আমদানি সম্ভব না। সরকার যদি পূর্বের মতো চাল আমদানিতে দুই শতাংশ শুল্ক-কর বসায় তাহলে আমদানি করা যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে চালের মজুত ও ভোক্তা পর্যায়ে দাম স্বাভাবিক রাখতে সরকার বেসরকারিভাবে পাঁচ লাখ মেট্রিকটন সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য ২৩ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে দেশের আমদানিকারকদের কাছে আবেদন আহ্বান করে। আমদানিকারকরা আবেদন করলে সরকার প্রথম পর্যায়ে গত ১০ আগস্ট ২৪২ জন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির অনুমতি দেয়।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সায়রাম ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ললিত কেশরা বলেন, “সরকারের ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করা সম্ভব না। আমরা এলসি করে রাখব। সরকার যদি শুল্ক প্রত্যাহার করে বা পূর্বের ২ শতাংশ শুল্ক যেটা ছিল, সেই শুল্ক করা হয়, তাহলে চাল আমদানি করা যাবে। বর্তমান শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করতে প্রতি কেজিতে প্রায় ৩৫ টাকা শুল্ক দিতে হবে। আর চাল কিনতে পড়বে ৬৮-৭০ টাকা টাকা।”
তিনি আরো বলেন, “সবমিলিয়ে কেজিতে আমদানি ও সরকারের শুল্কসহ পড়বে ১০০ টাকার উপরে। আমরা আমদানিকারকরা চাই সরকার দ্রুত শুল্ক কমিয়ে যেন চাল আমদানি করার সুযোগ দেয়। না হলে আমদানি করা যাবে না। আমদানি করে দেশের বাজারে চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে আমরা তো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা লোকসানে পড়তে পারি না। বাজারে এখনো এমনিতেই চালের দাম কম আছে।”
অপর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিফা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আবুল বাশার বলেন, “এক হাজার মেট্রিকটন চাল আমদানির বরাদ্দ পেয়েছি। সরকার শুল্ক না কমালে আমরা এলসি করব না। শুধু আমি না, কেউ করবে না।”
ট্রাক ভর্তি চাল এভাবেই পড়ে আছে কাস্টমসের শেডে
তিনি জানান, সরকারের ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ দিয়ে চাল আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক পড়বে ৩১ টাকার উপরে। আবার ভারতে ৫৫০-৫২০ ডলারের বিপরীতে প্রতি কেজি চাল আমদানিতে বাংলাদেশি টাকায় খরচ পড়বে ৬৩-৬৫ টাকা। কাস্টমস শুল্ক ৩১ টাকা আর প্রতি কেজি কিনতে ৬৫ টাকা- তাহলে দেখা যায় ৯৬ টাকা পড়ছে প্রতি কেজি চাল আমদানিতে। বর্তমানে দেশের বাজারে ভালো মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
এদিকে, গত মঙ্গলবার ও বুধবার ভারত থেকে ১৫টি ট্রাকে চালের চালান দেশে পৌঁছেছে। নওগাঁর মিঠুন সাহা নামে এক আমদানিককারক তিনটি ভারতীয় ট্রাকে ১২৫ মেট্রিকটন ৯৪৪ কেজি চাল আমদানি করেন।
তিনি বলেন, “সরকার চালের ডিউটি কমাবে এই আশায় চাল আমদানি করেছি। কিন্তু সরকার এখনো চালের ডিউটি কমায়নি। বর্তমান কাস্টমস শুল্ক দিয়ে চাল খালাস করলে বড় ধরনের লোকমান গুনতে হবে। আমদানিকারকরা শুল্ক কমানোর জন্য সরকারের সাথে যোগাযোগ করছেন। দেখি কী হয়। শুল্ক না কমালে বাজারে আমদানি করা চালের দাম কমবে না। এতে সরকারের উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। দাম আরও বেড়ে যাবে।”
হিলি বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী ইউসুফ আলী বলেন, “বুধবার দুপুর পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দরের ৩২ জন আমদানিকারক ৪৫ হাজার মেট্রিকটন চাল ভারত থেকে আমদানি করার জন্য কৃষি অধিদপ্তরের খামারবাড়ি থেকে অনুমতি (আইপি) পেয়েছেন। পর্যায়ক্রমে আরো আমদানিকারক চাল আমদানির অনুমতি পাবেন। গত ১৬ এপ্রিল থেকে দেশে চাল আমদানি বন্ধ ছিল।”
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, “গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে চালের ডিউটি কমেছে এমন কোনো আদেশ আমাদের কাছে আসেনি। এমনকি কাস্টমস সার্ভারে চালের ডিউটির ব্যাপারে কোনো তথ্য আপলোড হয়নি। তাই বর্তমান যে ডিউটি আছে অর্থাৎ ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করে আমদানিকারকরা চাইলে তাদের চাল বন্দর থেকে খালাস করে নিতে পারবেন।”
ঢাকা/মোসলেম/এস