মাদারীপুরে রাকিব হত্যা মামলার ২ আসামি গ্রেপ্তার
Published: 20th, September 2025 GMT
মাদারীপুরের শিবচরের আলোচিত রাকিব হত্যা মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) র্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেনের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে, গত রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড ও নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন খানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আরো পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে বড় ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে ছোট ভাই খুন
মদপান নিয়ে কথা-কাটাকাটি, টেকনাফে পান দোকানিকে গলা কেটে হত্যা
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার পূর্ব কাকৈর গ্রামের খালেক সরদারের ছেলে নুর আফজাল ওরফে রানা সরদার (৩২) ও কেরানীবাট গ্রামের হারুন সরদারের ছেলে সিয়াম সরদার (২২)।
নিহত রাকিব একই উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
র্যাব জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে শিবচর পৌর বাজারে একটি ব্যাংকের বুথের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন। স্থানীয়রা রাকিবকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পথেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এবং গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা পারুল আক্তার বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫-৭ জনকে আসামি করে শিবচর থানায় মামলা করেছেন। সেই মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে শিবচর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারদের সঙ্গে রাকিবদের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৬ মে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ মারা যান। সেই মামলায় জেল খেটে সম্প্রতি আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় এসেছিলেন রাকিব।
ঢাকা/বেলাল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য সরদ র শ বচর
এছাড়াও পড়ুন:
ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড ফিলিপাইন, নিহত ৬৬
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘কালমেগি’র তাণ্ডবে অন্তত ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন চার লাখের বেশি মানুষ।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বুধবার (৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
জ্যামাইকায় আঘাত হানতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়
ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কালমেগির প্রভাবে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহর প্লাবিত হয়েছে। কর্দমাক্ত বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে গাড়ি, ট্রাক এমনকি বিশাল আকারের কনটেইনারও।
বুধবার স্থানীয় রেডিও চ্যানেল ডিজেডএমএম-কে এক সাক্ষাৎকারে সেবুর প্রতিরক্ষা অফিসের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানান, কেবল সেবুতেই এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, টাইফুনের প্রভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ জনে। আরো ২৬ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
সরকারি মৃতের সংখ্যায় সেবুর দক্ষিণে মিন্দানাও দ্বীপে একটি সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় সেটির ছয়জন ক্রু সদস্য রয়েছেন, যা ত্রাণ তৎপরতায় সহায়তা করার জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার আগুসান দেল সুরের কাছে সামরিক হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। সাহায্যের জন্য পাঠানো চারটি হেলিকপ্টারের মধ্যে এটি একটি ছিল।
ফিলিপাইনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, হেলিকপ্টারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। ছয়টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যা পাইলট ও ক্রুদের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়ভাবে টিনো নামে পরিচিত টাইফুনটি মঙ্গলবার ভোরে ফিলিপাইনের স্থলভাগে আঘাত হানার পর থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছে, তবে ৮০ মাইল প্রতি ঘণ্টা (১৩০ কিমি/ঘন্টা) এরও বেশি বেগে বাতাস বইতে থাকে।
আজ বুধবার এটি ভিসায়াস দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চল পেরিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরের উপর দিয়ে চলে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
প্রাদেশিক গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, “সেবুর পরিস্থিতি সত্যিই নজিরবিহীন। আমরা ভেবেছিলাম প্রবল বাতাসই বিপদ ডেকে আনবে। কিন্তু... প্রকৃত ঝুঁকির কারণ হচ্ছে পানি। বন্যার পানিতে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, বেশিরভাগ মানুষই পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
ত্রাণ প্রচেষ্টা সহজতর করার জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বারিকুয়াত্রো সেবুতে দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণা করেছেন। সেবুতে আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, অনেক ছোট ঘর স্রোত ভেসে গেছে এবং বন্যার পানিতে শহর জুড়ে কাদার ঘন স্তুর পড়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘরের ভেতরে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা ব্যবহার করেছে।
বুধবার জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার এক প্রতিবেদন অনুসারে, এই দুর্যোগে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে অন্তত ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পর সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সুপার টাইফুন রাগাসা, যা স্থানীয়ভাবে নান্দো নামে পরিচিত, আঘাত হানে এবং তার পরেই আঘাত হানে টাইফুন বুয়ালোই, যা স্থানীয়ভাবে ওপং নামে পরিচিত।
; যা প্রায়ই এমন অঞ্চলে তাণ্ডব চালায় যেখানে লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের মাঝে বসবাস করে। দেশটির আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ভারিলা বলেন, টাইফুন কালমেগির মধ্য দিয়ে দেশটি ইতোমধ্যে সেই বার্ষিক গড় সংখ্যায় পৌঁছে গেছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে আরও তিন থেকে পাঁচটি ঝড় আসার আশঙ্কা রয়েছে।
ফিলিপাইন গত সেপ্টেম্বরে দুটি শক্তিশালী ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছিল, যার একটি ছিল সুপার টাইফুন রাগাসা। ওই সময় ফিলিপাইনে তাণ্ডব চালিয়ে প্রতিবেশী তাইওয়ানেও আঘাতে রাগাসা। এতে তাইওয়ানে অন্তত ১৪ জন নিহত হন।
প্রতি বছর ফিলিপাইনে গড়ে ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে।
পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পর সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সুপার টাইফুন রাগাসা, যা স্থানীয়ভাবে নান্দো নামে পরিচিত, আঘাত হানে এবং তার পরেই আসে টাইফুন বুয়ালোই, যা স্থানীয়ভাবে ওপং নামে পরিচিত।
আগের মাসগুলোতে, বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়, যা নিম্নমানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিক্ষোভের জন্ম দেয়, যার জন্য দুর্নীতিকে দায়ী করা হয়।
৩০ সেপ্টেম্বর, মধ্য ফিলিপাইনে ৬.৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়, যার ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল সেবুতে।
টাইফুন কালমায়েগি ভিয়েতনামে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যেখানে ইতিমধ্যেই রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ