বিস্মৃত প্রতিভা হারানো মনাস্ট্রি
Published: 20th, September 2025 GMT
সূর্যাস্তে
তীব্র হতাশার মধ্যেও আমি তোমার ডাক শুনতে পাই
সেই আমার সবচেয়ে বড় সুখ;
আমার কষ্ট আমার উত্তর তোমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
হয়তো তুমি আমার ভাষা পড়তে পারো না।
হয়তো আমি তোমার ভাষায় উত্তর দিতে পারি না
ব্যাখ্যাবিহীন চিহ্ন, অমূলক কর্তৃত্ব, নির্লজ্জ ক্ষরণ
তবুও তোমার কণ্ঠস্বর আমার কাছে পৌঁছায়
আমি ক্রমাগত উত্তর দিই,
আমার ক্রোধ শীতের মতো ম্লান হয়ে যায়
গ্রীষ্মের সন্ধ্যার বাতাসে
আমার কোমলতা
তোমার উত্তর হয়ে ভাসে
মেডিসিন ক্যাবিনেটের অস্পষ্ট ঘোলা আয়নার পেছনে ফ্রেম করা মুখ—
বিক্ষিপ্ত মেঘের বাষ্পে
সকালে গোছানো বেগুনি বিছানা
যেখানে উঁচু–নিচু পাহাড়ে বৃক্ষের সমতলে
কোনো বাইসন সারা রাত চরেছে
বিনিদ্র সন্ধ্যা থেকে ভোর;
খোলা পিঠে খসখসে গাল,
এখন শেভিং ফোমের সর্পিল রক্তের ফোঁটায়
গোলাপি প্রবাল দ্বীপ
শীত ঠেলে গাড়িটি বেরিয়ে গেল—
হাতের চিকন ব্লেডে বাষ্প কাটা উন্মুক্ত দরজায়
হিমায়িত কাচের পেছনে বিদায় জানিয়ে
পতিত পাতার স্তূপে চাপা পড়ল যুবক
রয়ে গেল রুপালি তৈজসপত্রে ঠাসা সিনক-বোঝাই
খালি কফি কাপের উপেক্ষা
শরীর অক্ষত রেখেছে আকৃতি।
তাহলে কি ফিরে যাব?
বাতাসের ধাক্কায় ইউক্যালিপটাসরা এখানে পাথর,
শাখারা মুকুল ঝরিয়ে ক্লান্ত,
এখনো সেই ছত্রাক ছায়ার কান্নায়
সাদা অন্ধকারে নিশ্বাস ফেলছে
ঝুমকোলতায় আলোকিত কপারবাগান
বিস্মৃত প্রতিভা হারানো মনাস্ট্রি
সূর্যের আলোতে মেলে দিয়েছিল তারা—
আমাকে আবার
রোদে শুকাতে আমার আত্মা,
আমার শরীর, হাত,
পায়ের আঙুল
প্রতিস্থাপিত করতে আমার বোধ
আমার দুচোখ ফাঁকা ছিল,
চেয়েছিল কোটরে স্থাপন করতে নতুন দৃষ্টি
পালিয়ে এসেছি আমি
রূপান্তরিত নতুন দেহে
পুরোনো কোকুন
উঁকি দেওয়া পাশের বাসার হলুদ বারান্দায়
প্রতিবেশী দাঁড়কাক
রি-ইনফোর্সিং বারে চড়ুইয়ের ঘর
দৃষ্টি এখনো সেই দোতলা বাড়ির ছাদে—
পেছনে পুরো একটা জীবন
সেখান থেকে রাস্তার দুপাশে
নাগরিক কোলাহল
জানালায় প্রেমিকার অপেক্ষা
ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়িয়ে সুদূরে
কাছে আসা দিনের ক্লান্তি
ধীরে ধীরে সূর্যের বিপরীতে দৃশ্যমান স্ট্রাইপড শার্ট
হাতে ব্যাগ, নিষ্পাপ চাহনি
আশ্বস্ত করতে উত্থিত অনুসন্ধানী ভ্রু
যত কাছে আসতে চেয়েছি, তত বেড়েছে দূরত্ব
ভালোবাসাই দূরত্ব যখন:
দূরে গিয়েছি যত
তত ফিরে এসেছি কাছে
ই–মেইল: [email protected].
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম র ক
এছাড়াও পড়ুন:
ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড ফিলিপাইন, নিহত ৬৬
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘কালমেগি’র তাণ্ডবে অন্তত ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন চার লাখের বেশি মানুষ।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বুধবার (৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
জ্যামাইকায় আঘাত হানতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়
ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কালমেগির প্রভাবে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহর প্লাবিত হয়েছে। কর্দমাক্ত বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে গাড়ি, ট্রাক এমনকি বিশাল আকারের কনটেইনারও।
বুধবার স্থানীয় রেডিও চ্যানেল ডিজেডএমএম-কে এক সাক্ষাৎকারে সেবুর প্রতিরক্ষা অফিসের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানান, কেবল সেবুতেই এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, টাইফুনের প্রভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ জনে। আরো ২৬ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
সরকারি মৃতের সংখ্যায় সেবুর দক্ষিণে মিন্দানাও দ্বীপে একটি সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় সেটির ছয়জন ক্রু সদস্য রয়েছেন, যা ত্রাণ তৎপরতায় সহায়তা করার জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার আগুসান দেল সুরের কাছে সামরিক হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। সাহায্যের জন্য পাঠানো চারটি হেলিকপ্টারের মধ্যে এটি একটি ছিল।
ফিলিপাইনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, হেলিকপ্টারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। ছয়টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যা পাইলট ও ক্রুদের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়ভাবে টিনো নামে পরিচিত টাইফুনটি মঙ্গলবার ভোরে ফিলিপাইনের স্থলভাগে আঘাত হানার পর থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছে, তবে ৮০ মাইল প্রতি ঘণ্টা (১৩০ কিমি/ঘন্টা) এরও বেশি বেগে বাতাস বইতে থাকে।
আজ বুধবার এটি ভিসায়াস দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চল পেরিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরের উপর দিয়ে চলে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
প্রাদেশিক গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, “সেবুর পরিস্থিতি সত্যিই নজিরবিহীন। আমরা ভেবেছিলাম প্রবল বাতাসই বিপদ ডেকে আনবে। কিন্তু... প্রকৃত ঝুঁকির কারণ হচ্ছে পানি। বন্যার পানিতে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, বেশিরভাগ মানুষই পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
ত্রাণ প্রচেষ্টা সহজতর করার জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বারিকুয়াত্রো সেবুতে দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণা করেছেন। সেবুতে আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, অনেক ছোট ঘর স্রোত ভেসে গেছে এবং বন্যার পানিতে শহর জুড়ে কাদার ঘন স্তুর পড়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘরের ভেতরে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা ব্যবহার করেছে।
বুধবার জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার এক প্রতিবেদন অনুসারে, এই দুর্যোগে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে অন্তত ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পর সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সুপার টাইফুন রাগাসা, যা স্থানীয়ভাবে নান্দো নামে পরিচিত, আঘাত হানে এবং তার পরেই আঘাত হানে টাইফুন বুয়ালোই, যা স্থানীয়ভাবে ওপং নামে পরিচিত।
; যা প্রায়ই এমন অঞ্চলে তাণ্ডব চালায় যেখানে লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের মাঝে বসবাস করে। দেশটির আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ভারিলা বলেন, টাইফুন কালমেগির মধ্য দিয়ে দেশটি ইতোমধ্যে সেই বার্ষিক গড় সংখ্যায় পৌঁছে গেছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে আরও তিন থেকে পাঁচটি ঝড় আসার আশঙ্কা রয়েছে।
ফিলিপাইন গত সেপ্টেম্বরে দুটি শক্তিশালী ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছিল, যার একটি ছিল সুপার টাইফুন রাগাসা। ওই সময় ফিলিপাইনে তাণ্ডব চালিয়ে প্রতিবেশী তাইওয়ানেও আঘাতে রাগাসা। এতে তাইওয়ানে অন্তত ১৪ জন নিহত হন।
প্রতি বছর ফিলিপাইনে গড়ে ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে।
পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পর সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সুপার টাইফুন রাগাসা, যা স্থানীয়ভাবে নান্দো নামে পরিচিত, আঘাত হানে এবং তার পরেই আসে টাইফুন বুয়ালোই, যা স্থানীয়ভাবে ওপং নামে পরিচিত।
আগের মাসগুলোতে, বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়, যা নিম্নমানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিক্ষোভের জন্ম দেয়, যার জন্য দুর্নীতিকে দায়ী করা হয়।
৩০ সেপ্টেম্বর, মধ্য ফিলিপাইনে ৬.৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়, যার ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল সেবুতে।
টাইফুন কালমায়েগি ভিয়েতনামে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যেখানে ইতিমধ্যেই রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ