রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটার কবর দে’ স্লোগান দিয়ে উপ-উপাচার্যের গাড়িতে কয়েন ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রশাসন ভবন-১ এর সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আরো পড়ুন:

রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল: জোহায় অনশন, জুবেরীতে অবস্থান শিক্ষার্থীদের

গকসু নির্বাচন: জাহিদের প্রচারণায় সবুজের ডাক

জানা গেছে, বেলা আড়াইটার দিকে প্রশাসন ভবন-১-এর সামনে টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করেন অনশনরতসহ আন্দোলনকারী একদল শিক্ষার্থী। উপ-উপাচার্য তাদের সঙ্গে কথা বলতে আসলে শিক্ষার্থীরা তার গাড়ি লক্ষ্য করে টাকা ও কয়েন ছুড়ে মারেন। এ সময় তারা ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটার কবর দে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

অনশনরত শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম বলেন, “আমরা মৃত্যু পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাব। কাফনের কাপড় গায়ে দিয়ে এখানে বসেছি। এই অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল না হলে আমরা এক ফোঁটা পানিও মুখে নেব না।”

সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, “রাকসুর আমেজে আবারো পোষ্য কোটা ফিরিয়ে এনে রাকসু বানচালের অপচেষ্টা চলছে। তারা মূলত রাকসুকে জিম্মি করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন বলেন, “পোষ্য কোটা সংক্রান্ত একটা মামলা হাইকোর্টে তালিকাভুক্ত হয়েছে। আমাদের ইতোমধ্যে উকিল নোটিশের উত্তরও দিতে হয়েছে। এটাও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। আমরা তো আইনের বাইরে যেতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয় সচল রাখার জন্যই সব মিলিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “পোষ্যকোটার বিষয়তো তো আমার একার কোনো সিদ্ধান্ত না, প্রশাসনের সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে আমাকে বাসায় যেতে দিবে না, খেতে দিবে না এমন আন্দোলন আমি কখনো দেখিনি। এটা কি ধরণের আন্দোলন?”

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভর্তি কমিটির সভায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য শর্তসাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় (পোষ্য কোটা) ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এরপর থেকেই বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা পুনর্বহালের ঘোষণার পরপরই উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পরে রাত ১২টা পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলমান ছিল। এতে নতুন বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।

ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জোহা চত্বরে এক সমাবেশ করেন তাঁরা ৷ এক ঘণ্টার বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তাঁদের কর্মসূচি স্থগিত করেন।

এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম কাফনের কাপড় পরে এককভাবে আমরণ অনশনে বসেন। পরে আরো আট শিক্ষার্থী একাত্মতা প্রকাশ করে অনশনে যোগ দেন। তারা হলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সজিবুর রহমান, সমাজকর্ম বিভাগের আরিফ আলভি, আবু রাহাদ ও সৈয়দ ইসপাহানী, ফলিত গণিত বিভাগের তৌফিকুল ইসলাম, আরবি বিভাগের রমজানুল মোবারক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নাজমুল হক আশিক এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের রেদোয়ান আহমেদ রিফাত।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা। তারা ব্যর্থ হয়ে ফিয়ে যাওয়ার পরই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টিতে ভিজে অনশন কর্মসূচি পালন করায় দুজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য রাবি মেডিকেলে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ উপ চ র য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত না হলে তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির

জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর

দাবিগুলো হলো— আসন্ন জকসু নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত করতে হবে; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে; সব সংগঠনকে সমান সুযোগ দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে; অরাজনৈতিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা যখন জকসুর দাবিতে অনশন করছিলাম, তখন প্রশাসন ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের অনশন ভাঙিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি মহল নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে।”

তিনি বলেন, “ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা ও বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় ওই মাসে নির্বাচন অসম্ভব। তাই ২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচনের উপযুক্ত সময়।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা জানতে চাই, নির্বাচন পেছানোর মধ্য দিয়ে জকসু নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো প্রক্রিয়া চলছে কিনা। পুরান ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে একটি মহল নির্বাচন পণ্ড করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম ভোট হবে জকসু নির্বাচন—তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ