আসন ফেরাতে বাগেরহাটে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি
Published: 24th, September 2025 GMT
বাগেরহাটে চারটি আসন বহালের দাবিতে চলছে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি। সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কার্যালয়ের সামনে তারা অবস্থান নেন। এর আগে গতকাল বিকালে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে গণস্বাক্ষর কার্যক্রম শুরু করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
নেতারা জানান, দুর্গাপূজা পর্যন্ত গণস্বাক্ষর চলবে এবং এ সময়ের মধ্যে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি থাকছে না। তবে দাবি আদায় না হলে দুর্গাপূজার পর আরো কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির কো–কনভেনর ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম.
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন সংস্কার কমিটির প্রস্তাবে বাগেরহাটের চারটি আসনের একটি কমিয়ে তিনটি করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এরপর থেকেই স্থানীয়রা আন্দোলনে নামেন। ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে তিনটি আসন বহাল রাখে। এতে বাগেরহাটবাসীর দাবিকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
চূড়ান্ত সীমানা অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসন রাখা হয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এ জেলায় চারটি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল।
ঢাকা/শহিদুল/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘শিল্পবোধ ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ ঘটেছিল আনিস চৌধুরীর লেখায়’
‘খেয়াল খেলা কাজ’, ‘পড়বার নিয়ম’ অথবা ‘পাশের কামরার লোকটি’ এসব শিরোনামের লেখা প্রকাশিত হয়েছিল চল্লিশের দশকে। আজাদ, মুকুলের মহফিল, ইত্তেহাদ বা অগত্যা পত্রিকায় প্রকাশিত পাঠক সমাদৃত এসব বিষয়ের লেখক প্রয়াত আনিস চৌধুরী। সেসব লেখা একসঙ্গে করে প্রকাশিত হয়েছে ‘আনিস চৌধুরী হয়ে ওঠার লেখাজোখা’ বইটি। তাঁর লেখায় ধরা আছে সময় পরিক্রমার ইতিহাস। বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উঠে এল এসব কথা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির বেঙ্গল ফাউন্ডেশনে আয়োজিত হয় মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানটি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লেখক ও শিল্পসমালোচক হাসনাত আবদুল হাই। তিনি বলেন, ‘আনিস চৌধুরী আমাদের সাহিত্যিকদের পূর্বসূরি। একসময় উপন্যাস বের হওয়া ছিল আলোড়ন তোলা। তখনই তিনি আমাদের কাছে জনপ্রিয় লেখক ছিলেন।’ হাসনাত আবদুল হাই আরও বলেন, আনিস চৌধুরীর লেখায় শিল্পবোধ ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ ছিল। ডকুমেন্টেশনের ক্ষেত্রে এ বই এক দৃষ্টান্তমূলক প্রকাশনা।
কথাসাহিত্যিক পিয়াস মজিদ আনিস চৌধুরীর বইয়ের বিভিন্ন অংশ থেকে পাঠ ও আলোচনা করেন। তিনি রমনীয়তা ও রম্যতার বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন। আনিস চৌধুরীর কবিতা নিয়ে কম আলোচনা থাকলেও তিনি যথেষ্ট সিরিয়াস কবি ছিলেন বলে উল্লেখ করেন এই আলোচক।
প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক আলম খোরশেদ বলেন, পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে যে মানুষেরা সাহিত্য দিয়ে সমাজ নির্মাণ করে দেশকে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন, আনিস চৌধুরী তাঁদেরই একজন। তাঁরা স্বাধীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সম্মিলিত লড়াই করেছেন। আনিস চৌধুরীর লেখার প্রসঙ্গ ধরে আলম খোরশেদ স্মরণ করেন সদ্য প্রয়াত ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে।
আলোচনা পর্ব শেষে মোড়ক উন্মোচন হয় ‘আনিস চৌধুরী হয়ে ওঠার লেখাজোখা’ বইটির। পুরো আয়োজনের সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। প্রয়াত আনিস চৌধুরী তাঁর বাবা।
আনিস চৌধুরী প্রয়াত হয়েছেন ১৯৯০ সালে। নাট্যকার, গল্পকার, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং কবি আনিস চৌধুরী রেডিও, টেলিভিশনে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।
১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণকারী আনিস চৌধুরী নিজের সময়কালের টুকরো টুকরো ইতিহাস ধরে রেখেছিলেন সে সময়কার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও সাময়িকীতে নিজের লেখা দিয়ে। সেসব লেখাই তিনি সংরক্ষণ করতেন সযত্নে। সেই সব লেখা নিয়েই ‘আনিস চৌধুরী হয়ে ওঠার লেখাজোখা’ নামক গ্রন্থটি। বইটি প্রকাশ করেছে বেঙ্গল পাবলিকেশনস।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, প্রয়াত ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সহধর্মিণী সিদ্দিকা জামান, শিল্পী ঢালী আল মামুন, সাংবাদিক নাসিমুন আরা হক, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফসহ আরও অনেক বিশিষ্টজন।