রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টানা শাটডাউন কর্মসূচির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনের সড়কের এ কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, টানা তৃতীয়বারের মতো পেছানো হয়েছে রাকসু নির্বাচন। সিন্ডিকেট মিটিংয়ে পোষ্য কোটা আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মানে আবারও আগামী ১৬ অক্টোবরের আগে পোষ্য কোটার মতো একটা মীমাংসিত ইস্যুকে সামনে এনে রাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হতে পারে। আর সেই হালে বাতাস দিচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলো। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই ষড়যন্ত্র আর মেনে নেবেন না।

ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ) বলেন, ‘এত কিছু হয়ে যাওয়ার পরও তাঁরা পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনতে চান। কতিপয় শিক্ষকেরা, যাঁরা নির্দিষ্ট একটা দলের প্রতিনিধিত্ব করেন, যাঁদের পৃষ্ঠপোষকতা করা ছাত্রসংগঠন রাকসু নির্বাচনে হেরে যাবে—এই ভয়ে তাঁরা পোষ্য কোটা ইস্যু সামনে আনতে চান। তাঁরা মূলত শিক্ষার্থীদের সার্বিক অধিকার, একাডেমিক কার্যক্রম, পড়াশোনার পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশকে বিনষ্ট করতে চান। তাঁদের আরেকটা এজেন্ডা হলো রাকসু নির্বাচন পেছানোর অপরাজনীতি করে রাকসুকে বানচাল করা। এই ষড়যন্ত্র ৩৫ বছর ধরেই হয়ে আসছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের আমরা বলে দিতে চাই, সবকিছু মনে রাখা হবে।’

মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে রাকসু নির্বাচনের স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী আবদুর নূর বলেন, গরিব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের টাকা প্রশাসনকে লিচুতলায় বসে থাকার জন্য দেওয়া হয় না। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকার হরণ করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে ক্লাসরুম-লাইব্রেরি খুলে দিয়ে শিক্ষার অধিকার ফিরিয়ে দিন।

চলছে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি। আজ দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের লিচুবাগান এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ষড়যন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

এবার সাত কলেজে একযোগে মানববন্ধন করলেন শিক্ষকেরা

ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে একীভূত করে প্রস্তাবিত কাঠামোয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগে আপত্তি জানিয়ে এবার একযোগে নিজ নিজ কলেজে মানববন্ধন করেছেন ওই সব কলেজের শিক্ষকেরা। শিক্ষকেরা বলছেন, প্রস্তাবিত কাঠামো বাস্তবায়িত হলে কলেজগুলোর উচ্চশিক্ষা ও নারী শিক্ষার সংকোচন এবং কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো ও ঐতিহ্য বিলুপ্ত হবে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের (শিক্ষক) পদও বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। প্রকারান্তরে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ হবে।

শিক্ষকেরা বলছেন, সাত কলেজের জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় হোক, সেটির বিপক্ষে তাঁরাও নন। কিন্তু সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস অবশ্যই পৃথক স্থানে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর সেই বিশ্ববিদ্যালয়টি হবে অধিভক্তিমূলক। কোনোভাবেই কলেজের সম্পদের মালিকানা প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে হস্তান্তর করা যাবে না। তা কলেজগুলোর নামে অক্ষুণ্ন রাখতে হবে।

আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একযোগে এই মানববন্ধন করেন সাত কলেজের শিক্ষকেরা। সরকারি এই সাত কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ।

দুপুরে ঢাকা কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষক মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে অংশে নেওয়া শিক্ষকেরা সেখানে সাংবাদিকদের বলেছেন তাঁরাও গুণগত শিক্ষার পক্ষে। এ জন্য বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করা হোক। কিন্তু যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা বলা হচ্ছে, তাতে কলেজগুলোর সমস্যা বাড়বে। ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজে নারী শিক্ষার সুযোগ সংকোচন হয়ে যাবে। মোটাদাগে উচ্চশিক্ষা সংকোচন হবে। কিন্তু তাঁরা নারী শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা সংকোচন হোক, তা চান না। আবার এই সাত কলেজের মধ্যে ঢাকা কলেজসহ পাঁচটি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক আছে। উচ্চমাধ্যমিকের মান কমে যাওয়া বা উচ্চমাধ্যমিকের অবকাঠামোগত সংকোচনের পদক্ষেপ তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আর শিক্ষা ক্যাডারের পদগুলোর সুরক্ষা চান তাঁরা।

আরও পড়ুনএবার বিরোধিতায় নামল বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রীরা২০ ঘণ্টা আগে

মানববন্ধন থেকে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবির কথা জানানো হয়। এগুলোর মধ্যে আছে সাত কলেজের নাম বা কাঠামো পরিবর্তন করে কোনো অনুষদে অথবা স্কুলে রূপান্তর করা যাবে না। কলেজের লোগোসহ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নিজ নিজ কলেজের নামে অক্ষুণ্ন রাখতে হবে। বিদ্যমান কোনো বিষয় বিয়োজন করা যাবে না। প্রয়োজনে প্রস্তাবিত ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’–এর ক্যাম্পাস অবশ্যই পৃথক স্থানে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সাত কলেজকে পরীক্ষাগার বা গিনিপিগ বানিয়ে কোনো পরীক্ষামূলক বিশ্ববিদ্যালয় মডেল চাপিয়ে দেওয়া যাবে না ইত্যাদি।
এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় করার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সামনে এই সাত কলেজের কয়েক শ শিক্ষক মানববন্ধন করেছিলেন। পরে তাঁরা ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।

৭ কলেজে উচ্চশিক্ষা ও নারী শিক্ষার সংকোচন, কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো ও ঐতিহ্য বিলুপ্তির প্রচেষ্টা এবং শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণের রোধে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে বিসিএস জেনারেল এডুকেশন এসোসিয়েশন। ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বেলা একটায় ছবিটি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবার সাত কলেজে একযোগে মানববন্ধন করলেন শিক্ষকেরা
  • চাকসু নির্বাচনের তারিখ পেছানো নিয়ে যা জানা গেল
  • দেশকে বিপর্যয়ে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে: ইসমাইল জবিউল্লাহ
  • বিএনপি নেতা এ্যানির বক্তব্যে ক্ষুব্ধ ইসলামী আন্দোলন, প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি
  • বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়
  • শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় কর্মবিরতি, নেপথ্যে রাকসু বানচালের চেষ্টা
  • ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতের কড়া সমালোচনায় বিএনপির এ্যানি
  • বিসিবির নির্বাচন ৬ অক্টোবর: ষড়যন্ত্র হলে ঘেরাওয়ের হুমকি
  • রাবি শিক্ষকদের ওপর হামলায় চবি শিক্ষক সমাজের নিন্দা