ফতুল্লায় বাউল শিল্পীঅনিকার রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী আটক
Published: 4th, October 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাউল শিল্পি আনিকা আক্তার অনিকার (১৯) রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবার দাবী পারিবারিক কলহের জের ধরে অনিকাকে হত্যা করেছে তার স্বামী হাবিবুর রহমান(২৫)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিহতের স্বামী হাবিবুর রহমান কে আটক করেছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফতুল্লার ভুইগড় এলাকার ভাড়া বাসা থেকে অনিকার মৃত দেহ তার স্বামী হাবিবুর রহমান স্থানীয় একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হাবিবুর রহমানকে আটক করে অনিকার লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন।
নিহত আনিকা আক্তার অনিকা (১৯) মাদারীপুর জেলার মোস্তফাকুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর কারন জানাযাবে।
হাবিবুর ও অনিকা ফতুল্লার ভুইগড় এলাকায় মাস্টারের ভাড়াটিয়া বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। এ ভাড়াটিয়া বাসায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
অনিকার বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, ৫ বছর আগে অনিকাকে হাবিবুর ভালোবেসে বিয়ে করে।
তাদের বিয়ের পর জানতে পেরেছি স্ত্রীর সাথে সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলেই নতুন করে আবার বিয়ে করতেন। এভাবে হাবিব পর্যায়ক্রমে অনিকার আগে ৪টি বিয়ে করেছে। ৪ মাস আগে অনিকার একটি কন্যা সন্তান হয়েছে। সেই সন্তান কোলে নিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকের পাশে অবস্থিত একাধীক বাউল ক্লাবে গিয়ে গান করতেন। সারারাত গান গেয়ে যে টাকা উপার্জন করতেন সেই টাকা বাসায় আসলেই অনিকার কাছ থেকে জোড় করে নিয়ে যেত হাবিবুর রহমান।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি মালা নামে এক বাউল নারী শিল্পিকে হাবিবুর বিয়ে করেন। হাবিবুরের কাছে সেই বিয়ের সত্যতা জানার চেষ্টা করেন অনিকা। এ নিয়ে হাবিবুর ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে গ্রামের বাড়ি চাদপুর চলে যায়। সেখান থেকে কয়েকদিন আগে অনিকাকে তালাকের প্রথম নোটিশ পাঠায়। অনিকা সেই নোটিশ নিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে নালিশ করেন। এতে হাবিবুর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে স্বর্না নামে আরেকজন নারী বাউল শিল্পিকে দিয়ে অনিকাকে হত্যার চেষ্টা করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে অনিকার বাসায় গিয়ে হামলা চালায় স্বর্না। এসময় বেধরক মারধর করে অনিকার পরিহিত নাকের গলার ও হাতের স্বর্ণের অলংকার খুলে নেয়। তখন অনিকার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে অনিকাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়। ওইসময় কৌশলে স্বর্ণা পালিয়ে যায়।
অনিকার বাবাসহ তাদের পরিবারের দাবী পরিকল্পিত ভাবে অনিকাকে হত্যা করে তা আড়াল করতেই হাবিবুর মৃত দেহ নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছে। এ হত্যাকান্ডের সর্বচ্চো শাস্তি দাবী করেন নিহতের পরিবার।
এবিষয়ে হাবিবুর রহমান জানান, অনিকাকে সে হত্যা করেনি। গ্রামের বাড়ি চাদপুর থেকে এসে অনিকার খোজে তাদের ভাড়া নেয়া ভুইগড়ের ফ্ল্যাট বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে দরজায় অনেক সময় ধাক্কা ধাক্কি করেন। তখন দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে দেখি অনিকার নিথর দেহ জানালার গ্রীলের সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে। এরপর তাকে নিয়ে সাইনবোর্ড প্রোঅ্যাকটিব হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অনিকাকে মৃত ঘোষনা করেন।
তিনি আরো বলেন, অনিকাকে যে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছি সেটি ভুয়া তাকে ভয় দেখানোর জন্য পাঠিয়ে ছিলাম।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হ ব ব র রহম ন অন ক র অন ক ক
এছাড়াও পড়ুন:
না.গঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন হওয়ায় ঐক্য পরিষদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়াই অত্যান্ত শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা সম্পন্ন হওয়ায় জেলার সর্বস্তরের মানুষ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা তথা সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, আনসার বাহিনী, বিজিবি, সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল সার্জন, রেডক্রিসেন্ট, জেলা রোভার, স্বেচ্ছাসেবক, সকল রাজনৈতিক দল ও সাংবাদিকদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে জেলা ও মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে পরিষদের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে দেয়া এক বিবৃতির মাধ্যমে জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস ও মহানগরের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল এ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, এবার কোন রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ও শঙ্কা ছাড়াই সুষ্ঠু, সুন্দর, উৎসবমুখর পরিবেশে নারায়ণগঞ্জে শারদীয় দূর্গোৎসব সম্পন্ন হয়েছে। পূজোর এ আয়োজনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতি মুহুর্তে আমাদের পূজো মন্ডপগুলোতে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিমের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন, এনএসআই, ডিবি, ডিএসবি, সিআইডি, ট্রাফিক পুলিশ, আনসার, বিজিবি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিসসহ প্রশাসনের বিভিন্ন ইউনিট, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও সনাতনী সম্প্রদায়ের সকল নেতৃবৃন্দদের আন্তরিকতা ও সহযোগিতার কারণে আমাদের পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এজন্য আমরা সকলরর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সর্বদা অটুট রাখতে সবাই কিভাবে এক ও অভিন্ন হয়ে কাজ করা যায়, তারই অন্যন্য নজির হচ্ছে এবারের এই শারদীয় দুর্গোৎসব।
আমি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ আমাদের ঐক্য পরিষদ ও অন্যান্য সনাতনী সংগঠনগুলো যারা নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা সমাপ্ত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সকলের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সার্বিক সহযোগীতার কারণেই শারদীয় দুর্গা উৎসব নারায়ণগঞ্জে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছিল। আশা করি, আগামী দিনগুলোতেও এরকম সহযোগীতা ও নিরাপত্তা বজায় থাকবে। আমরা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।