ফার্গুসন-ওয়েঙ্গারের মতো কিংবদন্তিদের পেছনে ফেলে গার্দিওলার ইতিহাস
Published: 6th, October 2025 GMT
পেপ গার্দিওলা আবারও ইতিহাস লিখলেন। ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার সিটির রোববার (০৫ অক্টোবর) রাতের জয় তাকে নিয়ে গেল এক নতুন উচ্চতায়, প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত ২৫০ জয় পাওয়া কোচ হিসেবে। মাত্র ৩৪৯ ম্যাচেই এই অসাধারণ মাইলফলকে পৌঁছে গেছেন স্প্যানিশ এই মাস্টারমাইন্ড।
এই যাত্রায় পেছনে ফেলেছেন ফুটবল ইতিহাসের দুই মহাতারকা- ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন (৪০৪ ম্যাচে ২৫০ জয়) এবং আর্সেনালের প্রাক্তন কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার (৪২৩ ম্যাচে ২৫০ জয়)।
আরো পড়ুন:
মাত্র ১৪ বছর বয়সেই সূর্যবংশীর ছক্কার বিশ্বরেকর্ড
বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়
রবিবারের ম্যাচে ব্রেন্টফোর্ডকে ১-০ গোলে হারায় সিটি, একমাত্র গোলটি করেন আরলিং হালান্ড এবং ম্যাচের প্রথমার্ধে নবম মিনিটে। এই জয়ের ফলে লিগ টেবিলে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
প্রিমিয়ার লিগে ২৫০ জয়ের মাইলফলক ছোঁয়া কোচের সংখ্যা কম নয়, কিন্তু গার্দিওলার মতো দ্রুত কেউ পারেননি। যেখানে ডেভিড ময়েসকে এই সংখ্যায় পৌঁছাতে লেগেছে ৬৪৫ ম্যাচ, সেখানে গার্দিওলা তা করেছেন প্রায় ৩০০ ম্যাচ কমে। এটি প্রমাণ করে কেন গার্দিওলার ফুটবল দর্শন, তার কৌশল আর শৃঙ্খলা আধুনিক ফুটবলের এক অনন্য পাঠ।
মৌসুমের শুরুটা তেমন সুখকর ছিল না ম্যানচেস্টার সিটির জন্য। টানা দুটি ম্যাচ হেরেছিল টটেনহ্যাম ও ব্রাইটনের বিপক্ষে। কিন্তু এরপর থেকেই যেন আবার পুরনো ছন্দে ফিরেছে ‘দ্য সিটিজেনস’। সবশেষ চারটি লিগ ম্যাচে অপরাজিত তারা, আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা সাত ম্যাচে অজেয়।
এই ধারাবাহিক পারফরম্যান্সই গার্দিওলার দলের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে, এবং লিগ টেবিলেও তাদের অবস্থান দিন দিন মজবুত হচ্ছে।
তবে রবিবারের জয়েও দুশ্চিন্তা আছে একটা, রদ্রির ইনজুরি। ম্যাচের মাত্র ২০ মিনিটের মাথায় মাঠ ছাড়তে হয় স্প্যানিশ মিডফিল্ডারকে। যদিও তিনি হেঁটে মাঠ ছাড়েন। কিন্তু ব্যথায় তার মুখের অভিব্যক্তি বলছিল ভিন্ন কথা। গার্দিওলার দলে রদ্রির ভূমিকা অপরিসীম, ফলে তার অনুপস্থিতি সিটির জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।
নরওয়ের গোলমেশিন হালান্ড যেন আবার আগুনে ফর্মে ফিরেছেন। নতুন মৌসুমে এখন পর্যন্ত সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মাত্র ৯ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা ১২। তবে নিজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স সত্ত্বেও হালান্ড জানিয়েছেন, ইউরোপের শীর্ষ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে হ্যারি কেইন ও কিলিয়ান এমবাপ্পের চাপ তিনি টের পাচ্ছেন। “চাপ সবসময় থাকে,” বলেছেন হালান্ড, “কিন্তু আমি সেটাকেই প্রেরণা হিসেবে নিচ্ছি।”
গার্দিওলার এই ২৫০তম জয় তাই শুধু একটি পরিসংখ্যান নয়, এটি এক যুগান্তকারী অধ্যায়। যেখানে ফুটবল কৌশল, দৃঢ়তা আর নেতৃত্ব মিলেমিশে তৈরি করেছে এক নতুন ইতিহাস। যা আগামী প্রজন্মের কোচদের জন্য হবে এক অনুপ্রেরণার পাঠ।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র কর ড ফ টবল ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
তামিম বললেন, বাংলাদেশের প্রথম হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলা মুশফিকেরই প্রাপ্য
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগামীকাল টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহমানের টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি হবে শততম ম্যাচ। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার কীর্তি গড়বেন মুশফিক।
মুশফিকের সাবেক সতীর্থ তামিম ইকবাল মনে করেন, বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার মাইলফলকে পৌঁছানোর কৃতিত্ব সবার আগে মুশফিকেরই প্রাপ্য। এই কীর্তি তাঁর চেয়ে আর কেউ বেশি ‘ডিজার্ভ’ করেন না বলেও মন্তব্য করেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
তামিমের ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে আজ করা পোস্টে লেখা হয়, ‘তোকে নিয়ে বলার আছে অনেক কিছু্ই। সেই ছেলেবেলা থেকে একসঙ্গে খেলছি, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে, বিভিন্ন পর্যায়ে, রুমমেট ছিলাম অনেকবার। কাছ থেকে দেখেছি তোকে। কোনো একসময় কোনো এক উপলক্ষে কোনো প্ল্যাটফর্মে নিশ্চয়ই বলব সবকিছু। তবে আজকের দিনের জন্য শুধু একটিই কথা, বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার মাইলফলক তোর চেয়ে বেশি আর কেউ ডিজার্ভ করে না। আশা করি, ভবিষ্যতে এই অর্জনে তোর পাশে নাম লেখাবে আরও অনেকেই। কিন্তু তুই প্রথম, এটা তোরই প্রাপ্য।’
মুশফিকের সঙ্গে তামিমের খেলার শুরু অনূর্ধ্ব-১৫ বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে। তারপর ধাপে ধাপে বেড়ে উঠেছেন দুজন। তিন সংস্করণ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানে সবার ওপরে তাঁরা দুজন। ৫৩১ ইনিংসে ১৫৬৪৬ রান নিয়ে শীর্ষে মুশফিক। ৪৪৮ ইনিংসে ১৫১৯২ রান নিয়ে দুইয়ে তামিম। টেস্ট ক্রিকেটেও তাই—মুশফিক রানে শীর্ষে, তামিম দুইয়ে। ওয়ানডেতে অবশ্য তামিম শীর্ষে, মুশফিক দুইয়ে।
চলতি বছরের মার্চে মুশফিক ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ার পর ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় মুশফিককে ১০০ টেস্ট খেলতে দেখার প্রত্যাশা জানিয়েছিলেন তামিম, ‘এখনো তুই একটি সংস্করণে খেলবি—টেস্ট সংস্করণ। আমি সত্যিই আশা করি ও প্রার্থনা করি, তুই ভালো কর। অন্তত ১০০টি টেস্ট খেল, যেটা বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ক্রিকেটার খেলে নাই। আমি এটা আশা করব, ১০০তম টেস্ট অবশ্যই খেলবি।’
মুশফিক আজ যখন সেই মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে তখন শুধু তামিম নয়, আরও অনেকের শুভেচ্ছা বার্তাই পাচ্ছেন। যেমন বাংলাদেশ দলের সাবেক অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন। ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বাংলাদেশ দলে কাজ করা এই ভারতীয় অ্যানালিস্ট এখন আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের সঙ্গে আছেন।
মুশফিককে শুভেচ্ছা জানিয়ে শ্রীনিবাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে করা পোস্টে লেখা হয়, ‘মুশি ভাই! ১০০ টেস্ট। অবিশ্বাস্য এক মাইলস্টোন। পরিশ্রম, কঠোরতা ও শৃঙ্খলা—এ সবকিছুর মধ্য দিয়ে এগিয়ে গর্বের সঙ্গে বয়ে চলছ বাংলাদেশ ক্রিকেটকে। দেশের প্রথম হওয়ায় এটা আরও আইকনিক হয়ে উঠেছে। এগিয়ে যাও চ্যাম্প! তুমি চারপাশে সবার প্রেরণা। বিশেষ এই দিনে সেখানে থাকতে পারলে ভালো লাগত। অবিস্মরণীয় করে তোলো।’