আচরণবিধি লঙ্ঘন ও ছাত্রদলের ‘অযাচিত হস্তক্ষেপের’ অভিযোগ ছাত্রীসংস্থার
Published: 6th, October 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও ছাত্রদলের ‘অযাচিত হস্তক্ষেপের’ অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে জামায়াতে ইসলামী–সমর্থিত নারী শিক্ষার্থীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা। আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে চাকসু ভবনের নিচে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের সাত দফা ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোটের কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল গতকাল (রোববার) আমাদের ও এক হল প্রভোস্টের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছে। আমরা সেই অভিযোগের প্রতিবাদ জানাতে এবং নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের ইশতেহার প্রকাশ করতে এখানে এসেছি।’
জান্নাতুল বলেন, ‘গত আগস্টে শিক্ষার্থীদের অনুরোধে ছাত্রী হলে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ফার্স্টএইড বক্স দিয়েছিলাম। এটি কোনো নির্বাচনী প্রচারণা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক উদ্যোগের অংশ। কিন্তু ছাত্রদল সেটিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে।’ তিনি জানান, ছাত্রদলের অভিযোগের পর নির্বাচন কমিশনের শোকজের জবাব তাঁরা দিয়েছেন এবং কমিশনের নির্দেশে বক্সটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, শামসুন্নাহার হলের অন্য ভিপি প্রার্থী শেখ সাদিয়া আচরণবিধি ভেঙে বাদামি রঙের লিফলেট ছাপালেও নির্বাচন কমিশন তা উপেক্ষা করেছে। এ ছাড়া অদম্য শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী ফাইরোজ ফেরদৌসের ফেসবুক আইডি হ্যাক করা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক প্রার্থী তাসমিনকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রার্থী আয়েশা আক্তারকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগও তোলা হয়।
জান্নাতুল বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তবে আগের ঘটনার মতো এবারও সুষ্ঠু সমাধান পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা করছি। আমরা চাই নির্বাচনটি যেন লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ডে, নারী হয়রানিমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করতে সাত দফা ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—প্রতিটি হলে নিপীড়নবিরোধী মনিটর সেল গঠন, অনলাইন অভিযোগ প্ল্যাটফর্ম চালু, দ্রুত জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, আইনি সহায়তা ও কাউন্সেলিং ডেস্ক স্থাপন, সচেতনতা ও নেতৃত্ব বিকাশ কর্মসূচি, সহপাঠী সহায়তা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধিতে নারী হয়রানি ও সাইবার বুলিংকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে সংযোজন।
জান্নাতুল বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটি হয়রানিমুক্ত, নিরাপদ ও নারীবান্ধব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গড়া। নীরবতা নয়, প্রতিবাদই হোক আমাদের সংস্কৃতি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজয় ২৪ হলের ভিপি প্রার্থী উমাইমা শিবলী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের ভিপি প্রার্থী সুমাইয়া নুসরাত, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদপ্রার্থী নাজিফা তাসফিয়াহ এবং শামসুন্নাহার হলের ভিপি প্রার্থী ফাইরোজ ফেরদৌস।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দর নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ: সিইসি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) সাতটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপ শুরু হয়েছে। সংলাপের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোও জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে দশটায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে দুই পর্বের এই সংলাপের প্রথম পর্ব শুরু হয়।
সংলাপে অংশ নেওয়া বাকি পাঁচটি দল হলো বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) ও বাংলাদেশ লেবার পার্টি।
সংলাপের শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, সংলাপের মূল উদ্দেশ্য দুটি। আচরণবিধি পরিপালন নিয়ে আলোচনা এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে দলগুলোর সহযোগিতা নিশ্চিত করা। নির্বাচন কমিশন একা নয়, সুন্দর–গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোও জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আচরণবিধির খসড়া করার সময় নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের দেওয়া অনেকগুলো সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি ওয়েবসাইটে দিয়ে জনগণ ও রাজনৈতিক দলের মতামত পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে সুন্দর নির্বাচনের জন্য আচরণবিধি প্রস্তুত নয়, পরিপালনটাই গুরুত্বপূর্ণ।
গত কয়েকটি নির্বাচনের কারণে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রবিমুখ হয়েছে উল্লেখ করেন নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, জনগণের মধ্যে একটা ভাবনা ছিল যে ভোট হয়তো আগেই দেওয়া হয়ে গেছে।
ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের অঙ্গীকার করার আহ্বান জানান সিইসি।
বেলা আড়াইটায় বিএনপি, গণ অধিকার পরিষদসহ আরও ছয়টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির সঙ্গে সংলাপের কথা রয়েছে ইসির।