রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিবের সঙ্গে বিরোধে জড়ালেন আহ্বায়ক। জেলার সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকারের তত্ত্বাবধানে সম্মেলনের মাধ্যমে হওয়া কমিটি আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ স্থগিত করে দিয়েছেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার বলছেন, বিষয়টি তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানাবেন।

এ ব্যাপারে দুর্গাপুর উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজশাহী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তখন প্রেস ক্লাবে জেলার সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকারও উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি সংবাদ সম্মেলনে বসেননি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব জোবায়েদ হোসেন।

আরো পড়ুন:

গণভোট ও পিআরের দাবি জাতিকে বিভক্ত করছে: সালাহউদ্দিন

সাংবাদিক মেরেছি, ওনারে মারতে কি আমার সময় লাগে: বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুর্গাপুরের ইউনিয়ন কমিটিগুলো করার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ছয় সদস্যের কমিটি করে দেন। এর প্রধান করা হয়েছিল জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকারকে। এই কমিটির তত্ত্বাবধানে গত ২০ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত উপজেলার নওপাড়া, কিসমত গণকৈড়, পানানগর, দেলুয়াবাড়ি ও জয়নগর ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রত্যেক ইউনিয়নে পাঁচজন করে নির্বাচিত হন। এরপর তারা আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটিও করেন।

এরইমধ্যে এই কমিটির বিরোধী কিছু নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সেগুলো বাতিলের দাবি করেন। এরপর সোমবার (৬ অক্টোবর) জেলার আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ তার একক স্বাক্ষরে ওই ছয় ইউনিয়ন কমিটি বাতিল ঘোষণা করেন। এর চিঠি তিনি নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যারা ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা তারাই ইউনিয়নগুলোতে নেতৃত্বে এসেছিলেন। কিন্তু জেলার আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ নিজের স্বার্থে এসব কমিটি স্থগিত ঘোষণা করেছেন। কেন্দ্রের নির্দেশনায় কমিটির তত্ত্বাবধানে সম্মেলনের মাধ্যমে আসা ইউনিয়ন কমিটি তিনি স্থগিত ঘোষণা করতে পারেন না বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুজ্জামান আয়নাল, পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান লাল্টু, জেলা কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান মন্টুসহ ছয় ইউনিয়নের সদ্য স্থগিত করা কমিটির সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার বলেন, ‘‘কেন্দ্রের নির্দেশনায় সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটিগুলো করেছি। কোনো ধরনের অনিয়ম এক্ষেত্রে হয়নি। আহ্বায়ক কেন কমিটি স্থগিত করেছেন সেটা বলতে পারব না। তার সঙ্গে আমার কথা হয়নি। তিনি একক স্বাক্ষরে এটা পারেন না। এ বিষয়টি আমি দ্রুতই কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের জানাব।’’ 

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সন্ধ্যায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে ফোন করা হলে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাই বিষয়টি নিয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/কেয়া/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ দ র গ প র উপজ ল স ঈদ চ ন কম ট কর ছ ন কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

বেবি শার্ক গান বানিয়ে কোম্পানির বাজার মূলধন প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা

যাদের বাসায় এখন ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশু আছে, তাঁরা জানেন, গত এক দশকে সেই শিশুরা কোন কোন ছড়া/গান শুনেছে। এ প্রজন্ম ইউটিউব ভিডিওর সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। ফলে এই বয়সী শিশুদের জন্য কনটেন্ট বানিয়ে অনেকেই বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।

বিষয়টি হলো ‘বেবি শার্ক’ নামের ৯০ সেকেন্ডের এক শিশুতোষ গানের ভিডিও এখন ইউটিউবের সর্বাধিক দেখা কনটেন্ট, ভিউ ছাড়িয়েছে ১৬ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৬০০ কোটি। ২০২০ সালেই এটি ইউটিউবের সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিও কনটেন্টের স্বীকৃতি পায়। এরপর তা থেমে থাকেনি—অগ্রগতি চলছেই।

ফলে এই ভিডিও যারা বানিয়েছে, অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান পিংকফংয়ের বাজার মূলধন ৪০০ মিলিয়ন ডলার বা ৪০ কোটি ডলার বা ৪ হাজার ৯০৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ারবাজারে পিংকফংয়ের লেনদেন শুরু হয়। প্রথম দিনেই শেয়ারের দাম ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। এর মূল কারণ যে এই বেবি শার্ক ডু ডু ডু, তা নিশ্চয়ই আর বলার অপেক্ষা রাখে না। খবর বিবিসি।

এর জনপ্রিয়তা কেমন, সে বিষয়ক এক বাস্তব উদাহরণ দেওয়া যাক। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের এক মা ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, সন্তানকে ঘুম পাড়ানোর পর বা অনেক ক্ষেত্রে কাজের সময় তাঁর কানে যেন এক শিশুতোষ ছড়াগান বাজতে থাকে। সেটি হলো, বেবি শার্ক ডু ডু ডু, বেবি শার্ক। যাদের বাড়িতে ইন্টারনেট এবং ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশু আছে, তাঁদের মধ্যে খুব কম মানুষই আছেন, যিনি এই গান শোনেননি। আরও পরিষ্কারভাবে বললে, যাদের বাড়িতে ইন্টারনেট আছে, সেই বাড়ির ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুরা এই গান শোনেনি, এমন নজির খুঁজে পাওয়া কঠিন।

এই ভিডিও দুনিয়াজোড়া ঠিক কেমন আলোড়ন তুলবে, সেটি নিশ্চিতভাবেই কেউ আগে ভাবেননি। ২০১৬ সালের জুনে ভিডিওটি প্রকাশের অনুমতি দেন পিংকফংয়ের প্রধান নির্বাহী কিম মিন-সিওক। তিনি বলেন, ‘আমরা ভাবিনি, এটি অন্য কনটেন্ট থেকে আলাদা কিছু হবে। পরে বুঝেছি, এটি আমাদের বৈশ্বিক যাত্রাপথের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।

২০১০ সালে ‘স্মার্টস্টাডি’ নামে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানি মূলত ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করত। মাত্র তিনজন কর্মচারী নিয়ে শুরু করে পরবর্তীকালে ছোট শিশুদের দিকে মনোযোগ দিয়ে কনটেন্টে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে। একপর্যায়ে কর্মীর সংখ্যা ১০০ জনে পৌঁছায়। এরপর তারা সহজ, শিক্ষাভিত্তিক গেম ও কনটেন্টকে অগ্রাধিকার দেয় এবং তখনই বেবি শার্কের বাজার মাত করে।

ব্রিটিশ মিডিয়া বিশ্লেষক কেভিন চিউর মতে, বেবি শার্ক গানটি ‘শিশুদের কাছে আকর্ষণীয়, যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে সম্ভবত বিরক্তিকর। তবে কিম মিন-সিওকও এই গানে আসক্তি ধরানোর ক্ষমতা সম্পর্কে অবগত। তিনি বলেন, ‘এটি কে-পপ গানের মতো—খুব দ্রুতলয়ের ও ছন্দময়। ফলে আসক্তি তৈরি করতে পারে।’

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শিশুদের মধে৵ এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। অনলাইনে এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বেবি শার্ক গানটি ইউটিউবের সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিওর স্বীকৃতি অর্জন করে। এমনও হয়েছে, ভিডিওটি প্রকাশের পর প্রথম দিকে এই কোম্পানি যত আয় করেছে, তার প্রায় অর্ধেক এসেছে এই গান থেকে। সেই সঙ্গে নিত্যনতুন কনটেন্ট তো তারা বানিয়েছে।

একটি গাননির্ভর নয়

২০২২ সাল থেকে পিংকফং কোম্পানির অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি যেমন বেবেফিন ও সিলুকেরও দ্রুত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। তবে কোরিয়া ইউনিভার্সিটির প্রভাষক মিন জাং কিম বলেন, কোম্পানিকে প্রমাণ করতে হবে, এই সফলতা শুধু বেবি শার্কের ওপর নির্ভরশীল নয়।

কিম মিন-সিওকের জোর দাবি, বেবি শার্ক ছাড়া অন্যান্য কনটেন্ট থেকেও তাদের ব্যবসা বাড়ছে। বর্তমানে পিংকফংয়ের আয়ের প্রায় এক-চতুর্থাংশ আসছে বেবি শার্ক থেকে। বেবেফিন থেকে আসছে কোম্পানির আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ।

স্টক মার্কেটে অভিষেক থেকে প্রায় ৫২ মিলিয়ন বা ৫ কোটি ২০ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছে পিংকফং। কিম জানান, এই অর্থ কনটেন্ট ও চরিত্রের উন্নয়নে ব্যবহৃত হবে।

উদ্ভাবনে পিছিয়ে থাকতে চায় না তারা। মানুষের পছন্দ কী, সে বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করে প্রযুক্তিভিত্তিক কনটেন্ট বানাতে চায় তারা। কিম বলেন, অনেক নির্মাতা সারা জীবন ধরে যে স্বপ্ন দেখেন, পিংকফং এরই মধ্যে তা অর্জন করে ফেলেছে। এখন বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে হবে, তারা কেবল একটি হিট গান–নির্ভর কোম্পানি নয়।

আইনি চ্যালেঞ্জ

পিংকফংয়ের যাত্রাপথ একেবারে কণ্টকমুক্ত ছিল না। ২০১৯ সালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। অভিযোগ—এক মার্কিন সংগীতজ্ঞের সুর তারা নকল করেছে; কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার সুপ্রিম কোর্ট এই অভিযোগ খারিজ করে দেয়। আদালত বলেন, জনপরিসরে প্রচলিত লোকগান থেকে তারা সুর নিয়েছে।

আদালতের এই রায়ে তারা জোর পায়। সেই ধারাবাহিকতায় এখন তারা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোল করার পর পেনাল্টি হজম এবং তারপর দুঃখ প্রকাশ নেইমারের
  • নিজেকে বোরিং পারসন মনে করেন মুশফিক
  • ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের নতুন দাবি
  • কক্সবাজারের পেনোয়ার গান কেন আপনাকে শুনতে হবে
  • ‘সেঞ্চুরিতে’ সেঞ্চুরির ফুল ফুটিয়ে মুমিনুলের পাশে মুশফিকুর
  • আমানতের টাকা ফেরতের দাবিতে সপ্তম দিনের মতো মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ঘেরাও
  • বেবি শার্ক গান বানিয়ে কোম্পানির বাজার মূলধন প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা
  • সলিল চৌধুরীর ১০০ বছর, সুরের জাদুকরকে কতটা চেনেন
  • অলরাউন্ড নেওয়াজ জেতালেন পাকিস্তানকে
  • স্বামীর জন্য পাঞ্জাবির নকশা করতে গিয়ে শুরু, এখন তিনি সফল উদ্যোক্তা