কালের কণ্ঠের ‘ডিক্লারেশন’ বাতিল চেয়ে সাবেক ১১ কর্মীর রিট
Published: 13th, October 2025 GMT
বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন দৈনিক কালের কণ্ঠের ‘ডিক্লারেশন’ বাতিল চেয়ে আদালতে রিট আবেদন করেছেন পত্রিকাটির সাবেক ১১ কর্মী। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আজ সোমবার রিটটি করা হয়। রিটটি শুনানির জন্য আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টে দাখিল করা হবে বলে আবেদনকারীদের আইনজীবী দেবাশীষ দেব জানিয়েছেন।
রিটে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, ঢাকা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর এবং কালের কণ্ঠের প্রকাশক ময়নাল হোসেন চৌধুরীকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটের প্রার্থনায় বলা হয়, নিয়মিত প্রকাশনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নিশ্চিতের কালের কণ্ঠ পত্রিকা কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা হারানোয় কেন পত্রিকাটির ঘোষণাপত্রের অনুমোদন বাতিল করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। কালের কণ্ঠ পত্রিকা থেকে পদত্যাগ করা বা বরখাস্ত হওয়া রিট আবেদনকারী/সাংবাদিকদের বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকাশকের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।
রিট আবেদনকারী ১১ জন হলেন মো.
রিট আবেদনের যুক্তি অনুযায়ী, বকেয়া পরিশোধের জন্য রিট আবেদনকারীরা গত ১৭ আগস্ট বিবাদীদের বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান। তবে বিবাদীরা (বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কালের কণ্ঠের প্রকাশক) বকেয়া পরিশোধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। নীরব ভূমিকা পালন করেছেন, যা আবেদনকারী/সাংবাদিকদের বঞ্চিত করার অভিপ্রায় প্রকাশ করে। পরিস্থিতিদৃষ্টে কালের কণ্ঠ পত্রিকার নিয়মিত প্রকাশনা অব্যাহত রাখার সক্ষমতা কর্তৃপক্ষ হারিয়েছে। কারণ, রিট আবেদনকারী বা সাংবাদিকদের দেওয়া চেক অপর্যাপ্ত তহবিলের জন্য প্রত্যাখ্যাত হয়।
রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী দেবাশীষ দেব প্রথম আলোকে বলেন, চেকগুলো ব্যাংকে জমা দিলে অপর্যাপ্ত তহবিল দেখিয়ে তা ফেরত দেওয়া হয়। এ কারণে কালের কণ্ঠ কর্তৃপক্ষ পত্রিকাটি চালানোর প্রয়োজনীয় অর্থ জোগানে সক্ষমতা হারিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। ১৯৭৩ সালের প্রিন্টিং প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস (ডিক্লারেশন অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন) অ্যাক্টের ২০ ধারা অনুসারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আর্থিক সক্ষমতা হারালে কোনো পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করতে পারেন। এসব যুক্তি তুলে ধরে কালের কণ্ঠের ডিক্লারেশন বাতিল চেয়ে এবং আবেদনকারীদের বকেয়া পাওনাদি পরিশোধের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর শ ধ প রক শ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে ফারুক হত্যা মামলায় জামায়াত-শিবিরের সব আসামি খালাস
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক জুলফিকার উল্লাহ চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন কেন্দ্রীয় আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, রাজশাহী মহানগরের তৎকালীন আমির আতাউর রহমানসহ ১১৪ জন আসামি ছিলেন।
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, ‘‘সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত সকলকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।’’
তিনি জানান, মামলার ১১৪ জন আসামির মধ্যে ৯ জন এরইমধ্যে মারা গেছেন। ১০৫ জন জীবিত আছেন। রায় ঘোষণার সময় ২৫ আসামি উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা অনুপস্থিত ছিলেন।
ফারুক হোসেন রাবির গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে হল দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষ হয়। এতে ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন নিহত হন। তার লাশ ম্যানহোলে পাওয়া যায়।
ঘটনার পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে ৩৫ জন জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জনকে আসামি করে নগরের মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর প্রায় আড়াই বছর পর ২০১২ সালের ২৮ জুলাই পুলিশ আদালতে ১২৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও রাবি ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ, সম্পাদক মোবারক হোসেন, নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসমত আলী, শহীদ হবিবুর রহমান হলের সভাপতি রাইজুল ইসলামসহ ১১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। দীর্ঘদিন পর অবশেষে এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
রায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, ‘‘রায়ে খুশি-অখুশি এখনই বলা যাবে না। আগে রায়টা দেখি, তারপর। তবে মামলাটা করার সময় প্রকৃত আসামিদের আড়াল করে রাজনৈতিক কারণে অন্যদের আসামি করা হয়েছিল।’’
ঢাকা/কেয়া/এস