অন্তর্বর্তীকালীন সিন্ডিকেট গঠনের প্রস্তাব ছাত্রদলের
Published: 16th, January 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন দেওয়ার ৬০ দিন আগে বিদ্যমান সিন্ডিকেট প্রতিস্থাপন করে নিরপেক্ষ সদস্যদের নিয়ে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সিন্ডিকেট’ গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে ছাত্রদল। এ ছাড়া ডাকসুর ভোটকেন্দ্র হল থেকে সরিয়ে একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর করার কথা বলেছে তারা।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মাঠে সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবনার বিস্তারিত তুলে ধরেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। এর আগে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রস্তাবনা জমা দেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সিনিয়র সহসভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন শাওন প্রমুখ।
ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কার প্রস্তাবে সহসভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচন না দিয়ে সভাপতি পদে সরাসরি ছাত্রদের নির্বাচনের প্রস্তাব করেছে ছাত্রদল। বর্তমানে উপাচার্য ক্ষমতাবলে ডাকসুর সভাপতি থাকেন। নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্বাহী কমিটির দুটি সহসভাপতি ও দুটি সাধারণ সম্পাদক পদ তৈরি করে একটি করে ছাত্র ও একটি করে ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ দু’জন ভিপি ও দু’জন জিএস থাকবেন।
বর্তমানে কোষাধ্যক্ষ পদে উপাচার্য ক্ষমতাবলে একজনকে নিয়োগ দেন। কিন্তু অর্থ সম্পাদক পদে শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাহী কমিটিতে নতুন ৫টি সম্পাদক পদ তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে তারা। পদগুলো হলো মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক, জেন্ডার সমতা ও অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক সম্পাদক, গবেষণা ও উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক এবং কর্মসংস্থান ও সক্ষমতা বৃদ্ধিবিষয়ক সম্পাদক।
‘স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক’ পদের নাম পরিবর্তন করে ‘মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক সম্পাদক’ পদে রূপান্তর করার প্রস্তাব দিয়েছে ছাত্রদল। একই সঙ্গে এই পদের কার্যাবলির নাম অনুযায়ী পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে তারা। ১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালের সিপাহি-জনতার বিপ্লব, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, ২০০৭ সালের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের চেতনা সমুন্নত রাখার পাশাপাশি গণতন্ত্র, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, সাম্য ও সবার জন্য সমান সুযোগের মতো আদর্শগুলোর প্রসারে এই পদে নির্বাচিত সদস্য কাজ করবেন।
বর্তমান ডাকসুর সাহিত্য সম্পাদক ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদকে সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক পদে একীভূত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাহী কমিটির সদস্যপদ ১৩টি থেকে ১৫টি করে মোট ৩৩টি পদ তৈরির প্রস্তাব রেখেছে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে এবং কার্যনির্বাহী কমিটির নিয়মিত নির্বাচন নিশ্চিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, ১৯৭৩-এ যথাযথ সংশোধন আনা একান্ত জরুরি বলে মনে করছে ছাত্রদল।
হল সংসদ ও কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের জন্য উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রস্তাবও করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের উপদেষ্টা পরিষদে আহ্বায়ক থাকবেন উপাচার্য। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), কোষাধ্যক্ষ, ডিনস কমিটির একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি, সিন্ডিকেটের অধ্যাপক ক্যাটেগরির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, ডাকসুর নির্বাহী কমিটির নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত সহসভাপতি সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন উপদেষ্টা পরিষদে। হল সংসদে হলের প্রাধ্যক্ষ আহ্বায়ক থাকবেন। জ্যেষ্ঠতা অনুসারে দু’জন হাউস টিউটর, সংশ্লিষ্ট হল অ্যালামনাইয়ের সভাপতি, হল সংসদের নির্বাহী কমিটির সহসভাপতি (সদস্য সচিবের দায়িত্বে) থাকবেন।
গঠনতন্ত্র সংস্কারের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের একক ক্ষমতা বাদ, উপদেষ্টা পরিষদের সুপারিশ অনুসারে বর্তমান গঠনতন্ত্র সংশোধন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া সভাপতির একক ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে তা নির্বাহী কমিটি এবং প্রস্তাবিত উপদেষ্টা পরিষদের হাতে ন্যস্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট ছ ত রদল ক ষমত সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন
সর্বস্তরের মানুষের অধিকার রক্ষা হয়, এমন বাংলাদেশ বিএনপি গড়ে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সৈয়দা আদিবা হোসেন। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম চায় দুর্নীতি বন্ধ হোক এবং ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে উঠুক। জাতি চায় সত্যিকারের সংস্কার। সত্যিকারের সংস্কার হবে জনগণের মাধ্যমে।
আজ শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের মুকামবাজার এলাকায় গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় সৈয়দা আদিবা হোসেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার বাবা প্রয়াত সৈয়দ মকবুল হোসেন লিচু মিয়া এ আসনে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলাকাবাসীর জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করেছেন। আমি তাঁর পথ অনুসরণ করে ধানের শীষের আদর্শে জনগণের জন্য কাজ করতে চাই।’
সামাজিক, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় জানিয়ে আদিবা হোসেন বলেন, ‘আমাদের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা উন্নয়নের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। শিক্ষা, যোগাযোগ, চিকিৎসা—সব দিক দিয়েই অনেক কাজ করতে হবে। আমরা একটা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে সর্বস্তরের মানুষের নাগরিক অধিকার রক্ষা হবে। সেই লক্ষ্যে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি সারা দেশে কাজ করছে।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সৈয়দা আদিবা হোসেনের প্রয়াত বাবা এই অঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করেছেন। তাঁরই রাজনৈতিক উত্তরসূরি সৈয়দা আদিবা হোসেন দীর্ঘদিন ধরে এখানকার গ্রাম, হাটে ঘুরে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এখন দুই উপজেলার প্রতিটি ঘরে গিয়ে তিনি বিএনপির ৩১ দফার পক্ষে জনমত গড়ে তুলছেন। তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত রাখতেও তিনি কাজ করছেন। জনবান্ধব এই নেত্রীকেই আগামী নির্বাচনে দল মনোনয়ন দেবে বলে কর্মী-সমর্থকেরা বিশ্বাস করেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাদেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারেক জলিল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হেলালুজ্জামান হেলাল, সহসভাপতি আবদুল কাদির সেলিম, আমুড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রুহেল আহমেদ, ভাদেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাদেক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মিলাদ আহমেদ, আলীনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন আহমেদ, লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু আহমেদ প্রমুখ।