ইসরায়েলের ব্যাপক হামলার আতঙ্কে ফিলিস্তিনিরা
Published: 16th, January 2025 GMT
গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। এর মাধ্যমে শেষ হতে যাচ্ছে দীর্ঘ ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। চুক্তিটি কার্যকর হবে আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির খবরে গাজাবাসীর মনে স্বস্তি ফিরে এলেও নিরাপদ বোধ করতে পারছেন না তারা। তাদের শঙ্কা, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার আগের ৭২ ঘণ্টায় গাজায় তীব্র হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পর মিশ্র অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন গাজাবাসীরা। একদিকে যুদ্ধবিরতির স্বস্তি, অন্যদিকে হামলা জোরদারের শঙ্কা। তার ওপরে তো স্বজন হারানো শোক রয়েছেই।
আরো পড়ুন:
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যা বলছেন বিশ্বনেতারা
যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৪০
গাজার বাসিন্দাদের শঙ্কা, চুক্তিটি আগামী রবিবার থেকে কার্যকর হবে- এর অর্থ হলো এখনও ৭২ ঘণ্টা সময় আছে। এ সময়ে ইসরায়েলি বিমান হামলা আরো জোরদার হতে পারে।
ফিলিস্তিনিরা বুঝতে পারছেন যে চুক্তিটি আগামী রবিবার কার্যকর হবে। এর অর্থ হল আমাদের কাছে এখনও ৭২ ঘন্টা আছে যা .
ফিলিস্তিনিরা জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) ভোরেও তারা আকাশে ইসরায়েলি ড্রোন ও যুদ্ধবিমান দেখেছে; যা মাটিতে থাকা সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলেছে।
বেসামরিক লোকেরা এখনও উপত্যকায় হামলার মাত্রা বৃদ্ধির বিষয়ে ভীত হয়ে রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
গত ২৪ ঘন্টায়, গাজায় আবাসিক ভবন ও বেসামরিক সমাবেশে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বেসামরিক বাসিন্দারা খোলা জায়গায় বা যেকোনো ধরনের বিপদের ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় থাকা এড়িয়ে নিরাপদ থাকার জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
এদিকে হামাস কর্মকর্তা খলিল আল-হায়া বলেছেন, “ফিলিস্তিনিরা মনে রাখবে কারা তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে, কারা গণমাধ্যমে নৃশংসতার ন্যায্যতা প্রমাণ করেছে এবং কারা তাদের ঘরবাড়িতে বোমা ফেলেছে।”
বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি আরো বলেন, “ইসরায়েলি দখলদারিত্ব এবং তার সমর্থকরা ৪৬৭ দিন ধরে যে বর্বর যুদ্ধ চালিয়েছে ... তা আমাদের জনগণ এবং বিশ্বের স্মৃতিতে আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ গণহত্যা হিসেবে চিরকাল খোদাই করা থাকবে।”
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড বা কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা বিএনপি সমর্থন করে না। দলের এই অবস্থান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা চাচ্ছে, তাদের বক্তব্য যদি সত্য হয় তাহলে তারা সেই অভিযোগটা আদালতে উত্থাপন করতে পারে।
আদালতের মাধ্যমেই এ বিষয়ে ফয়সালা হওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার পাশাপাশি জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই প্রেক্ষাপটে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ প্রসঙ্গে দলের অবস্থান তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড বা কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা নির্বাহী আদেশে, সেটা আমরা সমর্থন করি না। আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি অনেক আগে যে বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ করার যে বিষয়টি সেটা নির্ধারিত হোক। লেট দ্য কোর্ট ডিসাইড (আদালতকে নির্ধারণ করতে দিন)।’
আইনি প্রক্রিয়ায় যদি কোনো দলের বিরুদ্ধে গণহত্যা বা মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণিত হয়, তাহলে আদালত সেই দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে বলে উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি নির্ধারিত হয়, সেটা নির্বাচন কমিশন মানতে বাধ্য। এ ছাড়া অন্য যেকোনো প্রক্রিয়ায় নির্বাহী আদেশের মধ্য দিয়ে যদি আমরা রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ চাই তাহলে সেটা হবে একটা ভয়ংকর চর্চা। কারণ, এখন যাঁরা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা চাচ্ছেন, তাঁদের বক্তব্য যদি সত্য হয় তাহলে তাঁরা সেই অভিযোগটা আদালতে উত্থাপন করতে পারে, আইন তো আছে, বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেটা নিশ্চিত হোক।’
তবে আওয়ামী লীগের বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘তারা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী। তারা রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য দায়ী। সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের যারা প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মামলা দায়ের হয়েছে, আরও হবে, বিচার চলছে।’
রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিই সর্বপ্রথম আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি তুলেছিল বলে উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। আদালত নির্ধারণ করবে তারা এ দেশে রাজনীতি এবং নির্বাচন করতে পারবে কি পারবে না। সেই প্রক্রিয়ায় যদি আরও কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ থাকে, সেটা আদালতে উত্থাপন করা যেতে পারে।’
আরও পড়ুনকয়েকটি অভিন্ন দাবিতে একযোগে বিক্ষোভে নামছে ৭টি দল১০ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক হস্তক্ষেপের ঝুঁকির বিষয়েও সতর্ক করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হয় তাহলে দেশে একটা সাংবিধানিক শূন্যতা বিরাজ করতে পারে। সেই শূন্যতার মধ্যে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হবে। ঐক্য বিনষ্ট হলে সেটার সূত্র ধরে কথিত ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে এবং তাদের হাত ধরে আঞ্চলিক শক্তিগুলো এখানে জড়িত হয়ে যেতে পারে পরস্পরের বিরুদ্ধে এবং একটি বৈশ্বিক শক্তিও সেই সুযোগটা নিতে পারে। স্থিতিশীল রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা না করতে পারলে এই আশঙ্কাগুলো একদম উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, যারা এই ব্যবস্থার পক্ষে, তারা যেন নির্বাচনী ইশতেহারে তা তুলে ধরে জনগণের ম্যান্ডেট নেয়। জনগণের ইচ্ছা ছাড়া পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
নির্বাচন বিলম্বিত বা বাধাগ্রস্ত করার যেকোনো রাজনৈতিক কৌশল জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে বলেও মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এ দেশের মানুষ ১৬-১৭ বছর ধরে রক্ত দিয়েছে, শহীদ হয়েছে। সুতরাং এই পথে যারাই বাধা সৃষ্টি করতে চাইবে কৌশলে রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য, দলীয় হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য, সেটা জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। এখন শেষবিচারে জনগণই হচ্ছে বিচারক।’
আরও পড়ুনজামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ২ ঘণ্টা আগে