প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি শুরু ২০ জানুয়ারি, যেভাবে চলবে প্রক্রিয়া
Published: 16th, January 2025 GMT
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের একই উপজেলা বা থানার ভেতরে অনলাইন বদলি কার্যক্রম শুরু হতে চলেছে। আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে এ বদলি চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া, সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, বদলির জন্য শিক্ষকদের অনলাইনে আবেদনের সময়সীমা ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ২৫ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে সহকারী শিক্ষকের আবেদন যাচাই করা হবে। ২৬ থেকে ২৯ জানুয়ারির মধ্যে সহকারী উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার যাচাই সম্পন্ন করবেন এবং আগামী ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে যাচাই ও অগ্রায়ন সম্পন্ন করা হবে। এরপর ৪ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সহকারী শিক্ষকের আবেদন যাচাই ও অনুমোদন সম্পন্ন করবেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
বদলির শর্তের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষকরা পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ ৩টি বিদ্যালয় নির্বাচন করবেন। কোনো শিক্ষকের একাধিক পছন্দ না থাকলে শুধুমাত্র এক বা দুটি বিদ্যালয়ও পছন্দ করতে পারবেন। তবে আবেদনের পর বদলির আদেশ জারি হয়ে গেলে তা বাতিল করতে পরবর্তীতে কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
যাচাইকারী কর্মকর্তারা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর জারি করা সর্বশেষ ‘সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা, ২০২৩’ অনুযায়ী আবেদনকারীর আবেদন ও অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করে অগ্রায়ণ করবেন।
যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ যাচাইয়ের পর কাগজপত্র পাঠিয়ে দিলে তা পুনর্বিবেচনা করার আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
আবেদনকারীর পছন্দক্রম অনুসারেই যে বদলি হবে, সেই নিশ্চয়তা নেই বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, একাধিক আবেদনকারী যদি একই বিদ্যালয় নির্বাচন করে থাকেন, সেক্ষেত্রে সফটওয়্যারের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে। এক্ষেত্রে কোনোরকম ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর করব ন সহক র পছন দ
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি জমিতে সস্তায় সচিবদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ তদন্তে কমিটি, কার্যক্রম স্থগিত
সরকারি জমিতে সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দের বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এহসানুল হককে। অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব।
তদন্ত কমিটি গঠনসংক্রান্ত আদেশ আজ রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। ১৪ জুন প্রথম আলোয় ‘সরকারি জমিতে সস্তায় ফ্ল্যাট নেন সচিবেরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান উল্লিখিত ফ্ল্যাট প্রকল্পের নির্মাণ এবং হস্তান্তর কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য সেতু বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের জানিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেন উপদেষ্টা। এ ছাড়া সচিবসহ কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে সেতু বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, সেতু বিভাগের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন ও তদন্ত কমিটির পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটি গঠনের আদেশে কমিটির কার্যপরিধি উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, কী পদ্ধতিতে, কিসের ভিত্তিতে এবং কাদের নামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ করা হয়েছে, তা তদন্ত কমিটি নির্ধারণ করবে। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে কি না, তা নির্ধারণ এবং দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করবে। এ ছাড়া যাঁদের নামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কিংবা জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো জমি বা ফ্ল্যাট পেয়েছেন কি না, তা–ও যাচাই করবে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটিকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করবে।
সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্বে (পিপিপি) ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য আবাসন নির্মাণের জন্য কেনা ৪০ একর জমি থেকে ১ দশমিক ১৫ একর জমি নিয়ে ৪টি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে আমলা ও কর্মচারীদের জন্য। এর মধ্যে তিনটি ভবন সচিব ও বড় আমলাদের জন্য। তাতে ১৬৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ইতিমধ্যে ১৪০টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ হয়ে গেছে। বাকিগুলো ভবিষ্যতে সচিব ও কর্মকর্তাদের মধ্যে বরাদ্দের চিন্তা রয়েছে বলে সেতু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। চারটির মধ্যে একটি ভবন রাখা হয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের জন্য, যেখানে ফ্ল্যাট রয়েছে ১১২টি।
ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে উত্তরা মডেল টাউনে (তৃতীয় ধাপ), যা দিয়াবাড়ি এলাকা নামে পরিচিত। সেখানে বিভিন্ন সময় সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদে থাকা সচিবেরা ফ্ল্যাট নিয়েছেন। ফ্ল্যাট পেয়েছেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের প্রভাবশালী আমলারা। ফ্ল্যাট পাওয়া সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার সংখ্যা ৩২। তাঁদের মধ্যে চারজন চাকরিতে রয়েছেন, দুজন অবসরের পর বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকে (এডিবি) সরকারের পক্ষ থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন, বাকিরা অবসরে গেছেন। সচিবদের বাইরে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিবসহ বিভিন্ন পদের কর্মকর্তারা পেয়েছেন ফ্ল্যাট।
সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ ঘনিষ্ঠরাও পেয়েছেন পানির দামের ফ্ল্যাট। যেসব কর্মকর্তা সচিব পদে থেকে এসব ফ্ল্যাট নিয়েছেন, তাঁদের অনেকের আবার রাজউকের প্লট রয়েছে। সরকারি পদে থেকে তাঁরা ঢাকায় জমি ও ফ্ল্যাট—দুটোই নিয়েছেন।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১০ সালে। এর আওতায় বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত উড়ালসড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্প এখনো শেষ হয়নি।
আরও পড়ুনসরকারি জমিতে সস্তায় ফ্ল্যাট নিয়েছেন সচিবেরা, তালিকায় কারা রয়েছেন১৪ জুন ২০২৫