এমপি লিটন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল কাদেরের মৃত্যু
Published: 19th, January 2025 GMT
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ডা. আবদুল কাদের খান (৭৮) মারা গেছেন।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ভাগ্নে গাইবান্ধার একটি বেসরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হাবিবুর রহমান।
হাবিবুর রহমান জানান, সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আসামি ছিলেন তার মামা আবদুল কাদের খান। গত বছরের ৯ অক্টোবর ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগারে ব্রেন স্ট্রোক করেন তিনি। পরে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১৩ অক্টোবর আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৫ জানুয়ারি তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। আজ ১৯ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তিনি মারা যান।
আরো পড়ুন:
টেকনাফের পাহাড়ে আবারো বন্যহাতির মৃত্যু
সেফটিক ট্যাংকে যুবকের মরদেহ
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নিহত হন। এই ঘটনায় লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকলী বুলবুল সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলায় ৫-৬ জনকে নাম না জানা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। ঘটনার পর এই হত্যাকাণ্ডের জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করা হয়। সে সময় জামায়াত-শিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে ছিনতাইকারীদের ফেলে যাওয়া একটি ম্যাগাজিনের সূত্র ধরে ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার বাসা থেকে আবদুল কাদের খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ ছিলেন।
পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আবদুল কাদের খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক সাবেক সাংসদ আবদুল কাদের খানসহ সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এ ছাড়া লিটন হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া অস্ত্র আইন মামলায় আবদুল কাদের খানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
অপর সাতজন আসামি হলেন- আবদুল কাদের খানের একান্ত সহকারী (পিএস) মো.
ঢাকা/মামুন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবদ ল ক দ র খ ন র ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল