সংস্কারের অভাবে কমলগঞ্জ-আদমপুর বেহাল সড়কে দুর্ভোগ বেড়েছে। সড়কটির ৫ কিলোমিটার অংশের বিটুমিন ও খোয়া উঠে গিয়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, সড়কটি মেরামতের জন্য দুই বছর আগে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও আর্থিক ক্ষতির কথা বিবেচনা করে কাজটি করা হয়নি। ফলে সড়কটি মেরামত না হওয়ায় দিন দিন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে আদমপুর বাজার পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ৭ কিলোমিটার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডির অর্থায়নে উপজেলার চৌমুহনী থেকে আদমপুর বাজার পর্যন্ত রাস্তার কার্পেটিং করা হয়। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছরে রাস্তাটিতে কার্পেটিং উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। দিন যত যাচ্ছে, ততই বিশাল হচ্ছে সড়কের ভাঙা অংশ।
রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করে এলজিইডি, মৌলভীবাজার সড়কটি মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল। ওই ঠিকাদার বাজারে পাথর ও বিটুমিনের দাম বাড়ার কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কাজটি না করে সরকারি বিধি অনুযায়ী ১০ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে চলে যান। ফলে রাস্তাটি মেরামত করতে হিমশিম খাচ্ছে এলজিইডি বিভাগ।
আদমপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা শাব্বির এলাহী ও নীলু সিংহের অভিযোগ, প্রায় ৩ বছর আগে থেকেই কমলগঞ্জ-আদমপুর সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আদমপুর, ইসলামপুর, কমলগঞ্জ সদর ও আলীনগর ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত গাড়ি জেলা ও উপজেলা সদরে চলাচল করে। ছয় বছর আগে সড়কটি একবার সংস্কার করা হয়েছিল। এর পর মেরামত না করায় সড়কের অনেক স্থানে বিটুমিন ও ইট-পাথর উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
কমলগঞ্জ-আদমপুর সড়কটির আলেপুর নামক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আদমপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কে কার্পেটিং উঠে গেছে। সড়কজুড়ে ছোট-বড় খানাখন্দ। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন।
অটোরিকশাচালক হোসেন আলী জানান, এই রাস্তার জন্য কিছু একটা না করলে তারা না খেয়ে মরবেন। রাস্তার দুরবস্থার কারণে যাত্রী পাচ্ছেন না। উপার্জন প্রায় বন্ধ। এই রাস্তায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। মাইক্রোবাসের চালক রহিম জানান, ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে গাড়ির ক্ষতি হয়। প্রায়ই যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করতে হয়। এতে খরচ বেড়েছে, যা রোজগার হয় সবই গাড়ি সারাতেই খরচ হয়ে যায়।
আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন জানান, রাস্তাটি মেরামতের জন্য বারবার সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন। এর পরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী সাঈফুল আজম জানান, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেশি থাকায় ঠিকাদার কাজ করতে রাজি হননি। পরে আবারও রাজস্ব খাত থেকে মেরামতের চেষ্টা করলেও টাকা বেশি হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল