দেড় যুগেও সম্পূর্ণ হয়নি নোবিপ্রবির ওয়েবসাইট
Published: 21st, January 2025 GMT
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) নেই একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট। অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় তথ্যের বেশ অভাব রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রায়ই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
এদিকে, নতুন ওয়েবসাইটের কাজ চলমান রয়েছে, আগামী ১ মাসের মধ্যে চালু হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে দেখা যায়, বিভাগ ও অনুষদ ভিত্তিক শিক্ষকদের তালিকা থাকলেও শিক্ষকদের গবেষণা কার্যক্রম নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তথ্যগুলো হালনাগাদ করা নয়। রিসার্চ সেলের সেকশনে তাদের গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। এছাড়াও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেমন- ভর্তি নির্দেশিকা, ক্লাস রুটিন, পরীক্ষার ফলাফল ও নোটিশ। এসব যথাসময়ে আপডেট না হওয়ায় ও গবেষণার পরিপূর্ণ তথ্য না থাকায় শিক্ষার্থীরা বারবার ভোগান্তিতে পড়ছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের তথ্য, প্রশাসনিক কার্যক্রম, অনুষদের তালিকা, গবেষণার তথ্য ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য বিষয় অনেক ক্ষেত্রেই অসম্পূর্ণ বা পুরোনো। ওয়েবসাইট তথ্যসমৃদ্ধ না হওয়া ও প্রযুক্তিগত সমস্যাগুলো আধুনিক যুগেও তাদের পেছনে ফেলে দিচ্ছে। এটি শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, পুরো প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিকেই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে।
নোবিপ্রবির তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু তথ্য সরবরাহের মাধ্যম নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিচয়ও বহন করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এত বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট না থাকা হতাশাজনক। আমাদের পরীক্ষার সময়সূচি বা নোটিশের জন্য নির্ভর করতে হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ম্যানুয়ালি জানার ওপর। এতে সময় নষ্ট হয় এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস হয়ে যায়। আমি মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত এ বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া।”
ওয়েবসাইটে তথ্যের অপর্যাপ্ততা ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, “আমরা প্রযুক্তি শিক্ষায় এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু আমাদের নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনাই যদি দুর্বল হয়, তাহলে সেটি কতটা বাস্তবসম্মত? নোবিপ্রবির মতো একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি আধুনিক, স্বয়ংসম্পূর্ণ ওয়েবসাইট থাকা আবশ্যক। এটি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদের কাজ সহজ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটালাইজেশনের অভাব আমাদের আরও পিছিয়ে দিচ্ছে। আমি আশা করি, কর্তৃপক্ষ দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।”
এ বিষয়ে নোবিপ্রবি সাইবার সেন্টারের পরিচালক ইফতেখার মাহমুদ তৌহিদ বলেন, “নতুন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য আসার পর থেকে এটা নিয়ে আমাদের কাজ চলছে। ২ মাস আগে থেকে আমরা অফিসিয়ালি কাজ শুরু করেছি। আমরা আশা করছি, আগামী মাসে পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও আধুনিক ডিজাইন ডেটা চালু করতে পারব।”
নোবিপ্রবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।