Samakal:
2025-05-01@05:16:11 GMT

ত্বকের যত্নে কোরিয়ান পদ্ধতি

Published: 21st, January 2025 GMT

ত্বকের যত্নে কোরিয়ান পদ্ধতি

বাঙালি মেয়েরা কখনও ত্বকের যত্নে হলুদ ব্যবহার করেছেন, আবার মধু-চিনিতে ভরসা রেখেছেন। এখন বিশ্বায়নের যুগ। সৌন্দর্যচর্চা এখন কেবল দেশীয় উপাদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। দেশীয় ও ঘরোয়া উপাদান তো আছেই, সেই সঙ্গে মানুষ বেছে নিচ্ছে ভিন্ন দেশের রূপচর্চার বিভিন্ন পদ্ধতি। কয়েক বছর ধরে তরুণীদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে কোরিয়ান রূপচর্চার পদ্ধতি। শুধু বাঙালির মধ্যেই নয়; এ পদ্ধতি হাইপ তুলেছে বিশ্বজুড়ে। লিখেছেন ফারহানা রুমি

রূপসচেতন নারীর মধ্যে রূপচর্চা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার শেষ নেই। যুগ যুগ ধরে এই চর্চা চলমান। বাঙালি মেয়েরা কখনও ত্বকের যত্নে হলুদ ব্যবহার করেছেন, আবার মধু-চিনিতে ভরসা রেখেছেন। এখন বিশ্বায়নের যুগ। সৌন্দর্যচর্চা এখন কেবল দেশীয় উপাদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। দেশীয় ও ঘরোয়া উপাদান তো আছেই, সেই সঙ্গে মানুষ বেছে নিচ্ছে ভিন্ন দেশের রূপচর্চার বিভিন্ন পদ্ধতি। কয়েক বছর ধরে তরুণীদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে কোরিয়ান রূপচর্চার পদ্ধতি। শুধু বাঙালির মধ্যেই নয়; এ পদ্ধতি হাইপ তুলেছে বিশ্বজুড়ে। 
কোরিয়ান বিউটিকে সংক্ষেপে ‘কে-বিউটি’ বলে। জিনগত কারণে বিভিন্ন দেশের মানুষের ত্বকে ভিন্নতা রয়েছে। এ ছাড়া আবহাওয়া একটি বিশাল প্রভাব রাখে। কোরিয়া, জাপান, হংকং, চীনের মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে এবং জীবনযাত্রায় খাদ্যাভ্যাসের জন্য শারীরিক গঠন এবং ত্বকের টেক্সচার ভিন্ন হয়।
তাদের ত্বকের যত্নও তাই একটু ভিন্ন ধরনের। স্কিন কেয়ারে কোরিয়ান নারীরা প্রাকৃতিক উপাদান ব‍্যবহার করেন। এভাবেই সৌন্দর্য ধরে রাখেন বছরের পর বছর। 
স্কিন কেয়ারে তারা ডাবল ক্লিনজিং, টোনার, ময়েশ্চারাইজিং, স্কিন রিপেয়ারিং  সিরাম ব্যবহার, এসেন্স, আই কেয়ার ক্রিম, সানস্ক্রিন, শিট মাস্ক (সপ্তাহে ২ দিন), রাইস ফেসমাস্ক (সপ্তাহে ২-৩ দিন) ব্যবহার করেন। 
কোরিয়ানদের ত্বকচর্চার বিভিন্ন ধাপ  
এক্সফোলিয়েশন
ত্বক এক্সফোলিয়েট করার জন‍্য ঘরে বানানো উপাদান দিয়ে তারা তৈরি করেন প্যাক। চিনি বা কফির সঙ্গে যে কোনো তেল মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করা যায়। বাসায় সুজি থাকলে সেটিও এ কাজে ব্যবহার করা যাবে। মুখে ভালোভাবে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করতে হবে। তারপর স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। মেকআপ ডাস্ট, অতিরিক্ত তেল, মৃত চামড়া, হোয়াইট বা ব্ল্যাক হেডস সবকিছু পরিষ্কার করা যায়। সপ্তাহে দু’বারের এক্সফোলিয়েশন বেশি করা যাবে না।
ডাবল ক্লিনজিং
কোরিয়ান স্কিন কেয়ারে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ডাবল ক্লিনজিং। দু’বার করে ত্বক পরিষ্কার করাকে ডাবল ক্লিনজিং বলা হয়। কোরিয়ানরা ন‍্যাচারাল ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ তেল দিয়ে ম্যাসাজ করে। সেটি অলিভ অয়েল, খাঁটি নারকেল তেল, সরিষার তেল হতে পারে। তেল ম্যাসাজ করতে হবে ‘আপার স্ট্রোকে’ অর্থাৎ নিচে থেকে ওপরে ২-৩ মিনিট। তারপর তুলা হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে ফেস ক্লিন করতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপে ঘরে তৈরি ফেসওয়াশ ব্যবহার করে, মধুর সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এতে সামান্য পরিমাণে হলুদ মিশিয়ে ভালো করে মিশিয়ে সেটি দিয়ে আপার স্ট্রোকে ফেস ম্যাসাজ করে ক্লিন করতে হবে। এরপর স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। 
স্কিন টোনিং
স্কিন টোনিং করতে টোনার হিসেবে কোরিয়ান স্কিন কেয়ারে ব্যবহার হয় চাল ধোয়া পানি। প্রথম দু’বার চাল ধোয়ার পর পানি ফেলে দিয়ে তৃতীয় বার চাল কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে যে পানি বের হবে সেই পানি নিতে হবে। চাল ধোয়া পানিতে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, সি, ই ও মিনারেলস। এটি টোনার হিসেবে ভালো কাজ করে। এটি ত্বকের হাইপার পিগমেন্টেশন কমায়, স্কিনকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়িয়ে দেয়। একটি কটন প‍্যাড বা টিস্যুর সাহায্যে এই চালের পানি সোক করে ত্বকে সুন্দর করে লাগাতে হবে। এ ছাড়া শসার রস, গোলাপজল, বেদানার রস, আপেল সাইডার ভিনেগার ব‍্যবহার করা যায়।
এসেন্স 
কোরিয়ান স্কিন কেয়ারে এসেন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এসেন্সের প্রধান কাজ– এটি ত্বককে আর্দ্র করে, ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে। এক চামচ গোলাপজলের সঙ্গে আধা চামচ মরক্কোর আরগান তেল মিশিয়ে এটি ব্যবহার করতে হবে। গোলাপজল ত্বকের পোরস মিনিমাইজ করবে এবং আরগান তেল সঠিকভাবে হাইড্রেট করে ত্বকে উজ্জ্বলতা আনে। এ কারণে এ তেলকে ‘লিকুইড গোল্ড’ বলা হয়। একটি কটন প‍্যাডের সাহায‍্যে এ তরল প্রয়োগ করতে হবে।
আরগান গাছের ফল (বাদামজাতীয়) থেকে পাওয়া যায় এই তেল। বিশেষ পদ্ধতিতে তেল নিষ্কাশন করা হয়, যাতে প্রাকৃতিক গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকে। আরগান তেলে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-ই, ওমেগা ৬ ফ্যাটি এসিড, অলিক এসিড এবং লিনোলিক এসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
রাইস মাস্ক
রাইস মাস্কের জন্য প্রথম দু’বার চাল ধোয়ার পর পানি ফেলে দিতে হবে। তৃতীয় বার চাল ভিজিয়ে রেখে সেই চালের পানিসহ সেদ্ধ করে নিতে হবে। যখন চালের পাতলা মাড় হবে, তখন নামিয়ে নিতে হবে। এরপর ঠান্ডা হলে এক চামচ মধু মিশিয়ে ব্লেন্ড করে আঠালো পেস্ট তৈরি করতে হবে। এটি ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। সপ্তাহে এক দিন এটি ব্যবহার করা যাবে।
রেডি শিট মাস্ক
ত্বকের আর্দ্রতার জন্য কোরিয়ানদের মধ্যে শিট মাস্কের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। এই শিট মাস্ক স্কিনের ধরন অনুযায়ী ব্যবহার করা যাবে। এটি সময় বাঁচায় এবং বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। শিট মাস্ক ব্যবহারে ত্বক দ্রুত আর্দ্রতা ফিরে পায়। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন এই শিট মাস্ক।
আই ক্রিম
চোখের নিচের ত্বকের যত্নে অর্থাৎ ডার্ক সার্কেল, ফোলা ভাব কমানোর জন্য আই ক্রিম ব্যবহার করা হয়। কারণ চোখের নিচের ত্বকের অংশ সবচেয়ে শুষ্ক হয়। 
এক চামচ অ্যালোভেরা জেল, এক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল, হাফ চামচ গ্লিসারিন, একটি ভিটামিন-ই সিরাম ভালো করে মিশিয়ে বানিয়ে নেওয়া যাবে ঘরোয়া আই ক্রিম। এটি ব্যবহার করার সময় আইবেল দুই আঙুল দিয়ে হালকা করে ম্যাসাজ করে নিতে হবে। এতে চোখে আরাম অনুভব হবে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য শসার রস, লেবুর রস খুব ভালো কাজ করে। ত্বকে ব্রণ বা র‍্যাশ দেখা দিলে নিমপাতার রস, হলুদের রস, গোলাপজল ব্যবহার করুন। শুষ্ক ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা জেল নিয়ম মেনে লাগাতে পারেন। বলিরেখার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে শসার রস, বেদানার রস, ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ব্যবহার করুন। 
সানস্ক্রিন
স্কিন কেয়ারের সর্বশেষ ধাপ হলো সানস্ক্রিন ব্যবহার। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। সানস্ক্রিন ব্যবহারে ত্বক রোদে পুড়ে যায় না। বিশেষ করে ঘর থেকে বাইরে গেলে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে।
ফেসমাস্কের জন্য
মধু ও গ্রিন টির ফেসপ্যাক 
গ্লাসের মতো চকচকে ত্বক পাওয়ার জন্য কোরিয়ানরা ফেসমাস্ক ব্যবহার করেন। বিশেষ করে মধু ও গ্রিন টির ফেসপ্যাক জনপ্রিয়। এক টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে এক টেবিল চামচ ঠান্ডা সবুজ চা নিন। এটি চোখ বাদে পুরো মুখে লাগান। ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে একবার বা দুইবার ব্যবহার করুন। 
অ্যালোভেরা ও শসার মাস্ক
দুই টেবিল চামচ তাজা অ্যালোভেরার জেলের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ শসার রস মেশান। এই মিশ্রণে একটি শিট মাস্ক ডুবিয়ে সেটি পুরো মুখে লাগান। ২০-৩০ মিনিট পর তা তুলে ফেলুন। v
লেখক: রূপবিশেষজ্ঞ

মডেল :: অন্তরা; মেকওভার :: জারা’স বিউটি লাউঞ্জ
ছবি :: ফয়সাল সিদ্দিক কাব্য  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম য স জ কর ন ব যবহ র এস ন স র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গান নিয়েই আমার সব ভাবনা

কর্নিয়া। তারকা কণ্ঠশিল্পী। অনলাইনে প্রকাশ পাচ্ছে বেলাল খানের সঙ্গে গাওয়া তাঁর দ্বৈত গান ‘তুমি ছাড়া নেই আলো’। এ আয়োজন ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তাঁর সঙ্গে–

‘ভাঙা ঘর’ ও ‘আদর’-এর পর প্রকাশ পাচ্ছে ‘তুমি ছাড়া নেই আলো’। একনাগাড়ে দ্বৈত গান গেয়ে যাচ্ছেন, কারণ কী? 

শ্রোতাদের চাওয়া আর নিজের ভালো লাগা থেকেই দ্বৈত গান গাওয়া, এর বাইরে আলাদা কোনো কারণ নেই। কারণ, সব সময় ভাবনায় এটাই থাকে, যে কাজটি করছি, তা শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ করবে কিনা। সেটি একক, না দ্বৈত গান– তা নিয়ে খুব একটা ভাবি না। তা ছাড়া রুবেল খন্দকারের সঙ্গে গাওয়া ‘ভাঙা ঘর’ ও অশোক সিংয়ের সঙ্গে গাওয়া ‘আদর’ গান দুটি যেমন ভিন্ন ধরনের, তেমনি বেলাল খানের সঙ্গে গাওয়া ‘তুমি ছাড়া নেই আলো’ অনেকটা আলাদা। আসল কথা হলো, যা কিছু করি, তার পেছনে শ্রোতার ভালো লাগা-মন্দ লাগার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। 

দ্বৈত গানের সহশিল্পী হিসেবে নতুনদের প্রাধান্য দেওয়ার কারণ?

সহশিল্পীর কণ্ঠ ও গায়কি যদি শ্রোতার মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার মতো হয়, তাহলে সে তরুণ, নাকি তারকা– তা নিয়ে ভাবার প্রয়োজন পড়ে না। এমন তো নয় যে, নতুন শিল্পীরা ভালো গাইতে পারে না। তা ছাড়া তারকা শিল্পী ছাড়া দ্বৈত গান গাইব না– এই কথাও কখনও বলিনি। তাই দ্বৈত গানে তারকাদের পাশাপাশি নতুনদের সহশিল্পী হিসেবে বেছে নিতে কখনও আপত্তি করিনি। 

প্রতিটি আয়োজনে নিজেকে নতুন রূপে তুলে ধরার যে চেষ্টা, তা কি ভার্সেটাইল শিল্পী প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য? 

হ্যাঁ, শুরু থেকেই ভার্সেটাইল শিল্পী হিসেবে পরিচিতি গড়ে তুলতে চেয়েছি। এ কারণে কখনও টেকনো, কখনও হার্ডরক, আবার কখনও ফোক ফিউশনের মতো মেলোডি গান কণ্ঠে তুলেছি। গায়কির মধ্য দিয়ে নিজেকে বারবার ভাঙার চেষ্টা করছি। সব সময়ই নিরীক্ষাধর্মী গান করতে ভালো লাগে। একই ধরনের কাজ বারবার করতে চাই না বলেই নানা ধরনের গান করছি। নিজেকে ভেঙে সব সময়ই নতুনভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা জারি রাখছি।

প্রযোজক হিসেবে নিজের চ্যানেলের জন্য নতুন কী আয়োজন করছেন? 

আয়োজন থেমে নেই। তবে কবে নতুন গান প্রকাশ করব– তা এখনই বলতে পারছি না। কারণ একটাই, অন্যান্য কাজের মতো গান তো ঘড়ি ধরে কিংবা সময় বেঁধে তৈরি করা যায় না। একেকটি গানের পেছনে অনেক সময় দিতে হয়। কোনো কোনো গানের কথা-সুর-সংগীতের কাটাছেঁড়া চলে দিনের পর দিন। এরপর যখন তা সময়োপযোগী হয়েছে বলে মনে হয়, তাখনই প্রকাশ করি। 

গান গাওয়ার পাশাপাশি মডেলিং বা অভিনয় করার ইচ্ছা আছে? 

সত্যি এটাই, গান নিয়েই আমার সব ভাবনা। তারপরও অনেকের অনুরোধে কয়েকটি পত্রিকার ফ্যাশন পাতার জন্য মডেল হিসেবে কাজ করেছি। তবে মডেল হব– এমন ইচ্ছা নিয়ে কাজ করিনি। অভিনয় নিয়েও কিছু ভাবি না। অন্য কোনো পরিচয়ে পরিচিত হতে চাই না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চিনি-লবণের অনুপম পাঠ
  • শততম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে চান ইয়ামাল
  • নির্মাতার ঘোষণার অপেক্ষায় চিত্রাঙ্গদা
  • শিশুর মাথা ঘামে কেন
  • কাঠফাটা রোদ্দুরে তপ্ত হাওয়া
  • গান নিয়েই আমার সব ভাবনা