দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার জন্য বাংলাদেশ এখনও প্রস্তুত কি না ভাবতে হবে। কারণ উন্নত রাষ্ট্রসমূহেও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদে গুরুত্বপূর্ণ আইন পাস করতে দীর্ঘ জটিলতায় পড়তে হয়।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) নির্বাচন ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে এবি পার্টির মূল্যায়ন জানাতে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এ ব্যাপারে মন্তব্য করেন এবি পার্টির নেতৃবৃন্দ।

দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে পুরো রিপোর্ট নিয়ে পার্টি'র মূল্যায়ন ও বক্তব্য তুলে ধরেন এবি পার্টি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ পুনর্গঠন বা রাষ্ট্র সংস্কারের যে জনদাবি ছিলো সেটাকে সামনে রেখে সরকার বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। অতীতে সরকার যত কমিশন গঠন করেছিলো তার রিপোর্ট কখনো জনগণের সামনে আসেনি। এই প্রথম সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট জনগণের সামনে উপস্থাপিত হওয়ায় সংস্কার কমিশন ও সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এবি পার্টি। 

সংবিধানের মূলনীতিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আলোকে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারকে যুক্ত করায় কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, “এটি আমাদের সুপারিশ ছিলো।” 

তিনি বলেন, “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ দেখলেই মনে আসতো জনগণ মানেই প্রজা, যার ফলশ্রুতিতে শাসকরা রাজা বনে যেতেন। তাই আমরা এটা সংশোধন করতে জনগণতন্ত্র করার মত দিয়েছিলাম। এটা সংস্কার কমিশন গ্রহণ করেছে।”

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার জন্য বাংলাদেশ এখনো প্রস্তুত কি না ভাবতে হবে। কারণ উন্নত রাষ্ট্র সমূহেও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদে গুরুত্বপূর্ণ আইন পাশ করতে দীর্ঘ জটিলতায় পড়তে হয়।”

তিনি বলেন, “দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা না করে এক কক্ষ বিশিষ্ট আইন সভায় নারীদের সংরক্ষিত ৫০ আসনের পাশাপাশি আরো ৫০টি সংরক্ষিত আসন রেখে তা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের জন্য উন্মুক্ত রাখার প্রস্তাব করেছিলাম আমরা।” 

তিনি বলেন, “নির্বাচনে প্রার্থীর বয়সের চেয়ে প্রার্থীর বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী নির্ধারণকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।” 

সাংবাদিকদের পুলিশ, র‍্যাব ও আনসারের পোশাক পরিবর্তন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, “পোশাক কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে বাহিনী গুলোর আচরণ, সার্ভিস ও দেশের প্রতি কর্তব্যপরায়ণতার মাধ্যমে।”

নির্বাচন কেন্দ্রিক এক প্রশ্নের জবাবে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “আমরাই প্রথম নির্বাচনের সময়সীমা ২ বছরের কথা বলেছিলাম, ঘুরে ফিরে এখন সেই বিষয়টিই আলোচিত হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “কেউ কেউ প্রশ্ন করেন এই সরকারের ম্যান্ডেট কি? আমরা সুস্পষ্ট ভাবে বলতে চাই গণঅভ্যুত্থান নিজেই একটি স্বতন্ত্র ম্যান্ডেট। জনগণ একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকার গঠন করেছে, যার ফলে এটি জনগণেরই সরকার।” 

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- এবি পার্টি’র চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার, ভাইস চেয়ারম্যান লে.

কর্নেল অব. দিদারুল আলম, লে. কর্নেল অবঃ হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইমন 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ষ ট আইনসভ র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ড. ইউনূসকে দেশের কাজে যুক্ত রাখতে চায় বিএনপি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ আছে। বিএনপিকে জনগণ যদি ভোট দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনে, তাহলে অবশ্যই দেশের জন্য ড. ইউনূসকে কাজে লাগানো হবে। দেশকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়– এ ব্যাপারে তাঁর পরামর্শ নেওয়া হবে। এ রকম আরও যারা আছেন তাদের মতামত নিয়ে কাজ করতে চান তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির গতকাল শুক্রবার সমকালকে এ কথা বলেন। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে আলোচনার প্রথম পর্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে দলের প্রতিনিধি হিসেবে হুমায়ুন কবিরও ছিলেন। 
তারেক রহমানের পররাষ্ট্র-বিষয়ক উপদেষ্টা আরও বলেন, তারেক রহমান মনে করেন, জাতীয় স্বার্থে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রয়োজন আছে। যদি জনগণের ভোটে বিএনপি নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারে, তাহলে তারেক রহমান সবাইকে নিয়ে কাজ করবেন। তিনি সেটাই উপস্থাপন করেছেন।  

এর আগে গত বুধবার লন্ডনে চ্যাথাম হাউসে অনুষ্ঠিত সংলাপে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের পর গঠিত পরবর্তী সরকারের অংশ হওয়ার কোনো আগ্রহ তাঁর নেই। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ হলো সফল ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা, যা নির্বাচন দ্বারা সম্পন্ন হবে।’ 
গতকালের বৈঠক সূত্র জানায়, আলোচনায় তারেক রহমান বিএনপির পূর্বঘোষণা এবং ৩১ দফা অনুযায়ী সব দলমতের মানুষকে নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন। সেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিকে আগামীর রাষ্ট্র বিনির্মাণে পাশে চান তিনি। তাঁর মতো অন্য যোগ্যদেরও দেশ গঠনে সম্পৃক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করেন তারেক রহমান। 

নির্বাচনের বাইরে আর কী বিষয়ে আলাপ হয়েছে– জানতে চাইলে হুমায়ুন কবির বলেন, স্বাভাবিকভাবে ব্যক্তিগত আলাপে অনেক কিছু উঠে এসেছে। যেটা জেনেছি, খুবই ফলপ্রসূ ও আন্তরিক আলাপ হয়েছে। দেশ নিয়ে গঠনমূলক চিন্তা বিনিময় হয়েছে। কীভাবে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়েও কথা হয়েছে।  
হুমায়ুন কবির বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থে নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা একটা জায়গায় আসতে পেরেছি। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’    
 

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
  • লন্ডন বৈঠকে কারও দায়মুক্তির প্রসঙ্গ ছিল না: সালাউদ্দিন আহমেদ
  • মিনেসোটায় আইনপ্রণেতা ও তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা, সন্দেহভাজন আটক
  • নাগরিক সমাজ শাসকদের পক্ষে থাকে কেন?
  • ইরানের শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান সাবেক শাহের পুত্রের
  • আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • গণঅভ্যুত্থানে আহত সামিউলের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়
  • বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান
  • ড. ইউনূসকে দেশের কাজে যুক্ত রাখতে চায় বিএনপি