Samakal:
2025-12-13@10:18:38 GMT

সন্দেহ গুজবের বিপিএল

Published: 23rd, January 2025 GMT

সন্দেহ গুজবের বিপিএল

চারপাশের সন্দেহ আর গুজবে বিপিএল এখন যেন কানকথার টুর্নামেন্ট! রাজশাহীর ক্রিকেটারদের সম্মানী না পাওয়ার বাস্তবতা দিয়ে নেতিবাচক শিরোনামে আসে এ আসরটি। এরপর সন্দেহ দানা বাঁধে বিভিন্ন ম্যাচে অদ্ভুত সব ওয়াইড দেখে। এরপরই শুরু হয় গুজবের হাওয়া। মিডিয়াকুলে ফিসফিস– দলের ভেতরে কোন্দল, টিম হোটেলের পেমেন্ট ঝামেলায় দুর্বার রাজশাহীর মালিককে নজরদারিতে রাখা, লঙ্কান ক্রিকেটারের ম্যাচ বয়কটের মতো সব ঘটনা। বিষয়গুলো যাচাই করতে গিয়ে বেশির ভাগ ঘটনার সত্যতা মেলেনি। 

বিপিএলে যে কারণে সন্দেহ: ঢাকা ক্যাপিটালের পেসার আলাউদ্দিন বাবু কেন মাঠে নেই– এ নিয়ে নানা গুঞ্জন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। আলোচনা থেকে সন্দেহ দানা বাঁধে। সাংবাদিকদের মুখে মুখে ফিরতে থাকে নানা কথা। বাধ্য হয়েই আলাউদ্দিন বাবুকে ফোন করা। কেন মাঠে আসেননি– জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি ১৫ জনে নেই। আমাকে তাই হোটেলে রেখে গেছে। এখানে অন্য কোনো কারণ নেই।’ ১৫ জনে জায়গা না পেলে অনেক ক্রিকেটারকেই হোটেলে থাকতে হয়। 

আলোচনায় উসমান, ফার্নান্দো: চিটাগং কিংসের পাকিস্তানি ব্যাটার উসমান খান দারুণ একজন ব্যাটার। চলমান বিপিএলে সেঞ্চুরিও আছে একটি। গতকাল তাঁকে হোটেলে রেখে ম্যাচ খেলতে গিয়েছিল দল। হোটেলে রেখে যাওয়া হয়েছিল ফার্নান্দো বিনুরাকেও। এ দুই বিদেশি ক্রিকেটারের মাঠে না যাওয়া নিয়ে বিসিবি-সংশ্লিষ্ট সবার মুখে মুখে শোনা গেছে, সম্মানী না দেওয়ায় হোটেলে থেকে গেছেন এ দুই বিদেশি। 

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে চিটাগং কিংসের মালিক সামির কাদের চৌধুরী বলেন, ‘বিদেশি দুই ক্রিকেটারের মাঠে না যাওয়া নিয়ে নানা কথা শুনছি। সবার উদ্দেশে বলতে চাই, পেমেন্টের কোনো ইস্যু নেই। ফার্নান্দো মাঠে যায়নি, কয়েক দিন আগে তাঁর পরিবারে বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটেছে। আর উসমান ভালো করতে না পারায় বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। আমরা বিদেশিদের ৭০ শতাংশ টাকা দিয়েছি। দেশি কয়েক ক্রিকেটারের পেমেন্ট কম দেওয়া হয়েছে। সুতরাং যেগুলো বাইরে শোনা যাচ্ছে, তা গুজব।’

বিতর্কে চিড়ে চ্যাপ্টা রাজশাহী: ক্রিকেটারদের সম্মানীর চেক বাউন্স করার প্রতিবাদ ও টাকার দাবিতে প্র্যাকটিস বয়কটের মধ্য দিয়ে আলোচনায় দুর্বার রাজশাহী। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের হস্তক্ষেপে ২৫ শতাংশ সম্মানী নগদ দেওয়া হলে ম্যাচ খেলেন ক্রিকেটাররা। 

গতকাল চট্টগ্রামের আলোচিত ছিল রাজশাহীর হোটেল ভাড়া নিয়ে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কান পাতলেই শোনা গেছে, হোটেল ভাড়ার চেক বাউন্স করায় ভ্যালেন্টাইন গ্রুপের এমডি শফিকুর রহমানকে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। 

যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে রাজশাহীর অন্যতম এ মালিক বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি, বিপিএলের নিয়মকানুন সম্পর্কে ভালো জানাশোনা নেই। শুধু তো খেলোয়াড়দের টাকা নয়, আরও অনেক খরচ আছে। সেগুলোও তো পরিশোধ করতে হয়। আমরা ধাপে ধাপে তা করছি। হোটেলের সঙ্গে চুক্তি ৫০ শতাংশ টাকা দেব, বাকিটা পরে। সেভাবে পেমেন্ট করা হয়েছে। গাড়ি ভাড়া কত দিয়েছি তা তো ড্রাইভার, হেলপার জানবে না। জানবে কোম্পানি। অথচ এগুলোকে ইস্যু করা হচ্ছে নিউজ বানিয়ে। আমরা খেলোয়াড়দের ২৫ শতাংশ টাকা দিয়েছি, ঢাকায় গিয়ে ২৫ শতাংশ দেব। বল ধার করে অনুশীলন কেন করতে হবে রাজশাহীকে। আগের রাতেই তো বল পৌঁছে গেছে। আর অধিনায়ক পরিবর্তনের বিষয়টিও নিয়মমাফিক হয়েছে।’
 
বিসিবি এসিইউ বলছে, অতিরঞ্জিত: মূলধারার গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, দেশি-বিদেশি ৪০ জন বিপিএল ক্রিকেটারকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সন্দেহের জালে কেউ কেউ আটকেও গেছেন বলে খবর। বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্মকর্তারাও কয়েকজন বোলারকে স্পট করেছেন। সন্দেহজনক ওভারগুলো পর্যালোচনা করে বিসিবিকে নোট দিয়েছেন তারা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তদন্তের অনুমতি চাওয়া হয়েছে বলে জানান এক এসিইউ কর্মকর্তা। 

৪০ ক্রিকেটারের দিকে সন্দেহের তীর– এ প্রশ্ন করা হলে এসিইউপ্রধান মেজর (অব.

) রায়ান আজাদ বলেন, ‘যা কিছু দেখছেন অতিরঞ্জিত। সন্দেহ থেকে যে যার মতো ব্যাখ্যা করছে। আমরা বা আপনাদের সন্দেহ হলেও প্রমাণ ছাড়া কোনো কিছু বলা যাবে না। কেউ সাহায্য চাইলে আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করি। একে ধরছি, ওকে ধরছি, বিষয়টি ঠিক না।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন মাদক এমডিএমবি জব্দ, চক্রের হোতাসহ গ্রেপ্তার ৪

দেশে প্রথমবারের মতো নতুন ধরনের মাদক এমডিএমবির চালান জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ভেপ বা ই-সিগারেটের মধ্যে গোপনে এই মাদক সরবারহ করা হতো।মালয়েশিয়া থেকে সংগ্রহ করা এই মাদকের হোতাসহ চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত খন্দকার তৌকিরুল কবির তামিম (২৬), মেহেদী হাসান রাকিব (২৬), বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলস ও মার্কেটিং কর্মকর্তা মাসুম মাসফিকুর রহমান ওরফে সাহস এবং সম্প্রতি ভারতে পড়ালেখা করে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করা আশরাফুল ইসলাম।

আরো পড়ুন:

টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ৫০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার

উখিয়ায় ৩ লাখ ৬০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার

তাদের কাছে পাওয়া গেছে, ৩৪০ মিলিলিটার এমডিএমবি, গাঁজার চকলেট, ভেপ ডিভাইস, ই-লিকুইড ও এমডিএমবি বিক্রির জন্য প্রস্তুত খালি ক্যানিস্টার।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিএনসির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসির মহাপরিচালক হাসান মারুফ বলেন, “সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে তরুণ সমাজের মধ্যে ই-সিগারেট ও ভেপের ব্যবহার উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসবের (ভেপ) ভেতরে ইদানিং নতুন সাইকোঅ্যাকটিভ পদার্থসহ (এনপিএস) এমডিএমবির ব্যবহার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আইএনসিবি বিশ্বব্যাপী একটি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও এমডিএমবির বিস্তার রোধে নজরদারিতে নামে ডিএনসি ঢাকা গোয়েন্দার একটি চৌকস দল। তাদের তৎপরতায় উন্মোচিত হয় ভয়ংকর মাদক এমডিএমবি-পিনাকা ছড়িয়ে পড়ার বাস্তব চিত্র।”

অনলাইন-ডার্ক ওয়েবে নজরদারি 
আইএনসিবির নির্দেশনার পর ডিএনসির অতিরিক্ত পরিচালক (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ বদরুদ্দীনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঢাকার গোয়েন্দা দল অফলাইন ও অনলাইন মার্কেটপ্লেস, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডার্ক ওয়েবে নজরদারি শুরু করে। এ সময় ভেপের মাধ্যমে গোপনে ছড়িয়ে পড়া নতুন ধরনের সিনথেটিক মাদক এমডিএমবির সন্ধান পাওয়া যায়।খুচরা বিক্রেতা হিসেবে তামিমকে চিহ্নিত করা হয় এবং সোর্স ব্যবহার করে তার কাছে স্যাম্পল অর্ডার করা হয়। অর্ডারকৃত মাদক ডেলিভারির মুহূর্তে ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে, ঢাকা মেট্রো উত্তর ও ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের একটি সমন্বিত দল ১০ ডিসেম্বর পল্লবীতে ২০ মিলি এমডিএমবিসহ প্রথম সরবরাহকারী তামিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও তার ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বিশ্লেষণ করে এই ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট মেহেদী হাসান রাকিবের অবস্থান চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তীতে গোয়েন্দা নজরদারি ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে ১০ মিলি এমডিএমবিসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মালয়েশিয়া থেকে সংগ্রহ করা হত এমডিএমবি
রাকিবের জবানবন্দি ও ডিভাইস বিশ্লেষণে উদঘাটিত হয় দেশের অভ্যন্তরে থাকা একটি এমডিএমবি–সাপ্লাই নেটওয়ার্ক। সেই সঙ্গে শনাক্ত করা হয় দেশে এমডিএমবি আনা দুই হোতার নাম- আশরাফ ও সাহস।

পরবর্তীতে সমন্বিত অভিযানে চক্রের দুই প্রধানকে গ্রেপ্তার করে তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালালে উদ্ধার হয়-৩১০ মিলিলিটার এমডিএমবি-পিনাকা (৫টি কন্টেইনারে), সিবিডি ইনফিউজড গাঁজার চকলেট, এমডিএমবি গ্রহণে ব্যবহৃত ৫টি ভেপ ডিভাইস, ই-লিকুইড এবং খালি ক্যানিস্টার।

সেগুনবাগিচায় ডিএনসির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মিরপুর সেনপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা আশরাফকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সমাজের এলিট শ্রেণির মাঝে সে এই ধরনের মাদক সরবরাহ করত। সে মূলত ই-সিগারেট ও ভেপ ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে তার সহযোগী সাহসের সমন্বয়ে এমডিএমবির মার্কেট তৈরির প্রচেষ্টা করছিল। বিভিন্ন সময় মালয়েশিয়ায় যাতায়াত করায় সেখান থেকে সে এই মাদক সংগ্রহ করে দেশে সরবরাহ করত।

এমডিএমবির ক্ষতিকর দিক
এমডিএমবির কয়েক ফোটাই মানুষের স্নায়ুতন্ত্র বিপর্যস্ত করতে সক্ষম। তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় ভেপ ডিভাইসকে আড়াল হিসেবে ব্যবহার করে এই মাদক দ্রুত নেশা ধরায়, হ্যালুসিনেশন, আক্রমণাত্মক আচরণ থেকে শুরু করে হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিক হওয়ার মতো মারাত্মক শারীরিক ঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণ ফ্লেভারড লিকুইডের মতো দেখতে হওয়ায় এটি চিহ্নিত করা প্রায় অসম্ভব। ফলে ব্যবহারকারীরা বুঝতেই পারে না যে তারা আসলে গ্রহণ করছে এক উচ্চমাত্রার প্রাণঘাতী মাদক, যা আন্তর্জাতিকভাবে নেক্সট জেনারেশন সিনথেটিক ড্রাগ হিসেবে শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রচলিত নিকোটিন সম্বলিত ভেপ লিকুইডের সঙ্গে শুধু ১-২ ফোটা এমডিএমবি যুক্ত করে এই মাদক সেবন করা হয়।

বিক্রয় কৌশল
চক্রটি অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুককে পুরোপুরি ‘অদৃশ্য বাজার’ হিসেবে ব্যবহার করত। ফেসবুকের ক্লোজড গ্রুপ, রিভিউ পেজ ও ভুয়া অ্যাকাউন্টে গোপন সংকেতভিত্তিক পোস্ট দিত তারা—যেখানে সাধারণ ফ্লেভার, গেমিং টুল বা ‘পোর্টেবল ডিভাইস’–এর আড়ালে বোঝানো হতো আসল পণ্য। আগ্রহী ক্রেতা ইনবক্সে মেসেজ পাঠালে তাকে নিয়ে যাওয়া হতো হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে, যেখানে কোডওয়ার্ডে দাম ঠিক করা হতো। অবস্থান শেয়ার, লাইভ ট্র্যাকিং এবং নির্দিষ্ট ইমোজি ব্যবহার করে সরবরাহ নিশ্চিত করা হতো—যা দেখে সাধারণ ব্যবহারকারী বুঝতেই পারত না যে এটি আসলে এমডিএমবির গোপন ডিজিটাল বিক্রয় নেটওয়ার্ক।

ঢাকা/এমআর/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনিয়ম রোধে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন
  • নতুন মাদক এমডিএমবি জব্দ, চক্রের হোতাসহ গ্রেপ্তার ৪
  • নির্বাচন ভবনে অতিরিক্ত নিরাপত্তা, কড়া নজরদারি