নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে অবৈধভাবে প্রবেশ করে একটি চক্র পারশে মাছের পোনা নিধন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ চক্রের ১০ জেলেকে এরইমধ্যে আটক করেছে বন বিভাগ।

বৃহস্পতিবার রাতে পশুর নদী সংলগ্ন বগুরা খাল এলাকায় বন বিভাগের দুটি ক্যাম্পের বনরক্ষীরা যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার পারশে মাছের পোনা জব্দ করা হয়। পূর্ব সুন্দরবনের ঢাংমারী ফরেস্ট স্টেশনের অফিসার (এসও) সুরজিৎ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আটককৃত জেলেরা হচ্ছেন- ইউসুফ শেখ (৪৩), হাফিজ গাইন (৪৫), কামাল সানা (৪২), হালিম শেখ (৪০), শামিম শেখ (২৭), আজিজ গাজী (৩৮), জামাল শেখ (৪৫), হাবিবুর গাজী (৬৫), পিন্টু সানা (৪০) ও হাবিবুর রহমান সানা (৫০)। তাদের সবার বাড়ি খুলনা জেলার দাকোপ থানার বিভিন্ন এলাকায় বলে জানা গেছে।

বন কর্মকর্তা সুরজিৎ চৌধুরী আরও জানান, একটি পারশে মাছের পোনা আহরণের বিপরীতে কমপক্ষে ১১৯ প্রজাতির চিংড়ি, ৩১২ প্রাণী কণা ও ৩১টি অন্য প্রজাতির মাছের পোনা ধ্বংস হয়। পারশের পোনা নিধনে জেলেরা নিষিদ্ধ মনোফিলামেন্ট বা মশারি জাল ব্যবহার করায় শতাধিক প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের পোনা নষ্ট করছে। এতে সুন্দরবন এলাকায় আশঙ্কাজনকহারে মাছের উৎপাদন কমছে। এজন্য পারশে মাছের পোনার পাশাপাশি সুন্দরবনের অভ্যন্তরে সব মাছের রেণু পোনা ধরা বা শিকার সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে একদল অসাধু জেলে পারশে মাছের পোনা শিকার করে পশুর নদী হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। গোপনে এ সংবাদ পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পশুর নদী সংলগ্ন বগুরা খাল এলাকা থেকে ১০ জেলেকে আটক করা হয়।

আটক ১০ জেলেকে সিওআর (কম্পাউন্ড অফেন্স রিপোর্ট) মামলার মাধ্যমে অর্থদণ্ড ও মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে কোথাও পারশে পোনা ধরার অনুমতি দেওয়া হয় না। কেউ আইন অমান্য করে বেআইনিভাবে মাছের পোনা শিকার করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন দরবন আটক স ন দরবন র ১০ জ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে

দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।

খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।

উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।

সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।

উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনের মধুসহ ২৪ পণ্য পেল জিআই সনদ
  • সুন্দরবনে হরিণ শিকারে যাওয়া ব্যক্তির লাশ উদ্ধার, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
  • ‘তোর সময় শেষ’ লেখা চিঠির সঙ্গে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে সাংবাদিককে হুমকি
  • কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
  • সৌন্দর্যের সন্ধানে সুন্দরবনের গহীনে : দ্বিতীয় পর্ব
  • সুন্দরবনে অস্ত্রসহ বনদস্যু আটক
  • উপকূল রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ধস, প্লাবনের আশঙ্কা সুন্দরবন তীরবর্তী জনপদে