Samakal:
2025-05-01@09:25:01 GMT

সড়ক ও নদীর পার কেটে মাটি বিক্রি

Published: 25th, January 2025 GMT

সড়ক ও নদীর পার কেটে মাটি বিক্রি

অবৈধ ইটভাটার জন্য সড়কের পাশে জমি ও নদীর পাড় কেটে মাটি পাচার করা হচ্ছে। আবার সড়কের ইছামতী নদী থেকে দেদার বালু উত্তোলন চলছে। এ কারণে রাঙামাটির কাউখালী-রানীরহাট সড়কটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এক্সক্যাভেটর দিয়ে রাত-দিন সমানতালে নদীর পাড় কাটা এবং মেশিন দিয়ে বালু তোলার ফলে ভারী যান চলাচলের কারণে যে কোনো মুহূর্তে রাস্তা ধসে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া নদী থেকে বালু উত্তোলন, রাস্তার পাড় ও নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে একটি চক্র। এ চক্রটি বেশ কিছুদিন ধরে মাটি কেটে ট্রাকে করে প্রকাশ্যে বিক্রি করছে, যা দেখার যেন কেউ নেই। 
জানা গেছে, রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হচ্ছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা। এই দুই সীমান্তবর্তী উপজেলার মাঝখান দিয়ে কাউখালী উপজেলা সদর থেকে রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট পর্যন্ত একটি সড়ক করা হয়েছে; যা কাউখালী-রানীরহাট সড়ক হিসেবে পরিচিত। মূলত এ সড়কটি চট্টগ্রাম-রাঙামাটির সড়কে গিয়ে পড়েছে; যা এ সড়কটি কাউখালী উপজেলাবাসীর যোগাযোগের অন্যতম সড়ক। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে শত শত যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু কাউখালী-রানীরহাট সড়কের বহরাতল থেকে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের কাউখালী রাস্তার মাথা পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে মাটি কাটায় বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যে কোনো মহূর্তে সড়কটি বিচ্ছিন্নের আশঙ্কা রয়েছে। অভিয়োগ রয়েছে, এলাকার সিংহভাগই পাশের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রশাসনের আওতায় থাকায় কাউখালী উপজেলা প্রশাসন থেকে বারবার মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হলেও অদৃশ্য কারণে মাটি এবং বালু পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না হয়নি। 
অপরদিকে, ইছামতি নদী থেকে মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে কাউখালী উপজেলা সদরের কাউখালী কেন্দ্রীয় কবরস্থান, কাউখালী বাজার কবরস্থান, বগাবিলি উচ্চ বিদ্যালয় এলাকার সম্মুখভাগসহ আশপাশের বহু এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে নদীর নির্দিষ্ট কিছু এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করার জন্য প্রতি বছর নামমাত্র মূল্যে ইজারা প্রদান করা হলেও, প্রতি বছর শতকোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে এলাকাবাসীর। এলাকা নির্দিষ্ট করে বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা দেওয়া হলেও প্রভাবশালীরা এসব তোয়াক্কা করছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। 
সরেজমিন পরিদর্শন দেখা গেছে, কাউখালী উপজেলার পাশের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বহরাতল থেকে কাউখালী রাস্তার মাথা এলাকা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের পাড়, নদীর পাড় কেটে মাটি ও ইছামতী নদী থেকে বালু উত্তোলন করে পাচার করছে একটি চক্র। এসব মাটির অধিকাংশ যাচ্ছে স্থানীয় ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকার ইটভাটায়। আধুনিক এক্সক্যাভেটর দিয়ে সড়কের পাশে জমির মাটি কাটায় কাউখালী-রানীরহাট সড়কটি যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে। আগামী বর্ষা মৌসুম শুরু হলে এ সড়ক আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে স্থানীয়দের আশঙ্কা। 
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহরাতল থেকে শুরু হয়ে রাস্তা ও নদীর পাড় কাটা এবং ইছামতি নদী থেকে বালু উত্তোলনের মহাযজ্ঞ চলছে। সড়কের পাশে বালুর স্তূপ এবং এর পাশেই মাটি কেটে গাড়ি যাওয়ার রাস্তা বানানো হয়েছে। সেখান থেকে খালের দিকে নজর দিলেই দেখা যায় বিশাল এলাকাজুড়ে এক্সক্যাভেটরের সাহায্যে নদীর পাড় কাটার গভীর চিহ্ন। একটি চক্র বেশ কিছুদিন ধরে মাটি কেটে ট্রাকে করে প্রকাশ্যে পাচার করছে। এতে রাস্তার পাশে এবং খালের পাড়ে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। ভারী এক্সক্যাভেটরের সাহায্যে মাটি কাটতে কাটতে একেবারে সড়কের পাশে চলে এসেছে। আগে আশপাশের নদীপাড়ে লতা, আলুসহ নানা ফসলের আবাদ হলেও, এই স্থানে মাটি কাটার ফলে তা সম্ভব হচ্ছে না। গভীর করে মাটি কাটায় ক্ষেত ভেঙে পড়ছে খাদে। 
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ভৌগলিকভাবে রাঙ্গুনীয়া উপজেলার শেষ সীমান্ত হওয়ায় এ স্থানে প্রশাসনের তদারকি কম। ফলে দিনের পর দিন এই অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে একটি চক্রটি। শুধু এ স্থানেই নয়, ইছামতী নদীর আরও বিভিন্ন পয়েন্টে একইভাবে বালু উত্তোলন করে এবং পাড়ের মাটি কেটে পাচার করা হচ্ছে। 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, একটি প্রভাবশালী মহল ইতিপূর্বে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করতো। এবার এখন  পাড়ের মাটিও কেটে বিক্রি করছে ইটভাটায়। গত ৫ আগস্টের পর আগের চক্রটি নেই, নতুন চক্র গড়ে উঠেছে। 
এ ব্যাপারে  কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্থা (ইউএনও) কাজী আতিকুর রহমান বলেন,  ‘কাউখালী-রানীরহাট সড়কের দুই পাশের মাটি কাটা, ইছামতি নদী থেকে মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে কাউখালীর বিস্তীর্ণ এলাকায় ভাঙন হচছে। পাশাপাশি কাউখালী-রানীরহাট সড়ক ঝুকিপূণ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি রাঙ্গুনিয়ার ইউএনওকে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।  প্রশাসনিকভাবে ওই এলাকাটি রাঙ্গুনীয়া উপজেলার আওতায়  পড়েছে, তাই সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 
রাঙ্গুনীয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘কাউখালী-রানীরহাট সড়ক, ইছামতী নদীর পাড়ের মাটি কাটা এবং বালু উত্তোলনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক র প শ প চ র কর উপজ ল র এ সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

সোনাপুর-নোবিপ্রবি সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণে অংশীজন সভা

নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গামী (নোবিপ্রবি) সড়কটি বাংলাবাজার পর্যন্ত চার লেনে উন্নীতকরণ বিষয়ে অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে নোবিপ্রবি উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রোসয়েল ফাউন্ডেশন কনসালটেন্ট এর আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইলের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহিনুজ্জামান, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তামজিদ হোছাইন চৌধুরী ও নোবিপ্রবি প্রধান প্রকৌশলী মো: জামাল হোসেন।

আরো পড়ুন:

নোবিপ্রবির পুকুরে ছাত্র-ছাত্রীদের গোসলের ছবি ভাইরাল, ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন

গ্রীষ্মের ছুটি বাতিল করেছে নোবিপ্রবি

এছাড়াও নোয়াখালী জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, নোয়াখালী পৌরসভা, গণপূর্ত অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, উপকূলীয় বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, নোয়াখালী সদর/সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, নোয়াখালী সদর/সুবর্ণচর উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে, সোনাপুর, নোয়াখালী প্রেসক্লাব, সোনাপুর পৌরবাজার কমিটি, সোনাপুর পৌর সুপার মার্কেট পরিচালনা কমিটি এবং প্রোসয়েল ফাউন্ডেশন কনসালট্যান্ট এর কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দোতলা বাসগুলো শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে। ফলে এ সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা অত্যন্ত জরুরি। আমরা যেন এ সড়কের কাজ দ্রুত শুরু করতে পারি, তার জন্য আপনাদের সবার সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।”

তিনি বলেন, “এই সড়ক চার লেনে উন্নীত করার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে আমাদের দিক থেকে যতটুকু সহযোগিতা লাগে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা করার চেষ্টা করবো। পাশাপাশি আপনাদের সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।”

সভায় সোনাপুর থেকে নোবিপ্রবি (বাংলাবাজার) সড়কাংশ চার লেনে উন্নীতকরণসহ বাংলাবাজার-সুবর্ণচর উপজেলা হেডকোয়ার্টার সড়ক (জেড-১৪৫১) যথাযথ মানে উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের ডিপিপি’র এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট প্রণয়নে মতামত প্রদান করেন বক্তারা। 

এছাড়া বক্তারা ওই সড়ক চার লেনে উন্নীত করার বিষয়ে একমত পোষণ করেন এবং নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সড়কটি নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বাধাগ্রস্ত হবেনা বলে জানানো হয়।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রৌমারীর সড়কটি কি এমন বেহাল থাকবে
  • সোনাপুর-নোবিপ্রবি সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণে অংশীজন সভা
  • ‘মরণ রাস্তার মোড়ে’ সড়ক দুর্ঘটনা, বিক্ষোভ
  • ২৪ কিলোমিটারের দুঃখ দুই উপজেলাবাসীর