ডিবির অভিযানে দিনমজুরের মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা
Published: 26th, January 2025 GMT
শরীয়তপুরের জাজিরায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযান চলাকালে মিলন বেপারী (৫৫) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের কালু বেপারী কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবারের দাবি, ডিবির মারধরে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়।
গোয়েন্দা পুলিশ, স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে জাজিরা পদ্মা সেতু এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালান জেলার গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক নওশের আলীসহ আট সদস্য। অভিযান চলাকালে মোজাম্মেল নামে এক ব্যক্তিকে গাঁজাসহ আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কালু বেপারী কান্দি এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জামাল বেপারীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় জামালের প্রতিবেশী ও মামা মিলন বেপারী আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয় বলে দাবি করে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে পরিবারের অভিযোগ, ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাঁকে ঘর থেকে বের করে মারধর করা হলে তিনি অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরবর্তী সময়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
নিহতের স্ত্রী রেনু বেগম অভিযোগ করে বলেন, ডিবি পরিচয়ে রাতে বাড়ি তল্লাশি করার পর আমার স্বামীকে মারধর করা হয়েছে। মারধর করায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। স্বামী হত্যার বিচার চাই।
নিহতের ছেলে আল-আমিন বলেন, আমাদের সামনে বাবাকে ডিবির লোকজন মারধর করেছে। মারধরের ফলে তাঁর মুখ দিয়ে রক্ত পড়ে মারা গেছেন। ডিবির লোকজন আমার বাবাকে মেরেছে।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আরএমও আকরাম এলাহী বলেন, শনিবার রাতে মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছিল। ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন এলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।
জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক আবু বকর মাতুব্বর বলেন, পদ্মা সেতু এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জামাল বেপারীর বাড়িতে অভিযান চলাকালে তার মামা মিলন বেপারী খবর পেয়ে ছুটে আসার সময় আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ডিবির সদস্যরা তাঁর পরিবারকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসি। পরে শুনতে পাই তিনি নাকি মারা গেছেন। তবে ডিবির মারধরের বিষয়টি সত্য নয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলার পর ইউক্রেন–যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি সই
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলার পর দেশ দুটি একটি চুক্তিতে সই করেছে। এর ফলে ওয়াশিংটন কিয়েভের মূল্যবান দুর্লভ খনিজসম্পদে প্রবেশাধিকার পাবে ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে তার পুনর্গঠনে তহবিল জোগান দেবে।
গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এ চুক্তি সই হয়। এ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে জোর দরকষাকষি করে দুই দেশ। চুক্তি সই হওয়ার ব্যাপারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কিছু অনিশ্চয়তা থাকলেও অবশেষে এটি সম্পন্ন হয়।
যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ চুক্তি একটি অগ্রগতি নির্দেশ করছে। গত মার্চে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বৈঠকের পর এ সম্পর্ক তলানিতে নেমেছিল।
চুক্তি সইয়ের ঘোষণা দিয়ে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল’ প্রতিষ্ঠা রাশিয়ার প্রতি একটি বার্তা যে, ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘমেয়াদে এক স্বাধীন, সার্বভৌম ও সমৃদ্ধ ইউক্রেন গড়ার শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ চুক্তি একটি অগ্রগতি নির্দেশ করছে। গত মার্চে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বৈঠকের পর এ সম্পর্ক তলানিতে নেমেছিল।স্কট বেসেন্ট আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের জনগণের মধ্যে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার এ ভাবনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের; যা একটি টেকসই শান্তি ও সমৃদ্ধ ইউক্রেনের প্রতি উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতিই প্রতিফলিত করে।’
‘স্পষ্ট করে বলতে গেলে, রাশিয়ার যুদ্ধচেষ্টায় অর্থ বা অন্যান্য সহায়তাদানকারী কোনো রাষ্ট্র বা ব্যক্তিকে ইউক্রেনের পুনর্গঠন থেকে উপকৃত হতে দেওয়া হবে না’, বলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী।
ট্রাম্প প্রশাসন এ চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।
ইউক্রেনের অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ইউক্রেন পুনর্গঠন তহবিলে’ যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি বা সামরিক সহায়তার মাধ্যমে অবদান রাখবে এবং কিয়েভ তার প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে পাওয়া রাজস্বের ৫০ শতাংশ তহবিলে দেবে।
স্পষ্ট করে বলতে গেলে, রাশিয়ার যুদ্ধচেষ্টায় অর্থ বা অন্যান্য সহায়তাদানকারী কোনো রাষ্ট্র বা ব্যক্তিকে ইউক্রেনের পুনর্গঠন থেকে উপকৃত হতে দেওয়া হবে না।স্কট বেসেন্ট, মার্কিন অর্থমন্ত্রীমন্ত্রণালয় আরও জানায়, তহবিলের সম্পূর্ণ অর্থ প্রথম ১০ বছর শুধু ইউক্রেনে বিনিয়োগ করা হবে, এরপর ‘লাভ অংশীদারদের মধ্যে বণ্টন করা হতে পারে’। তহবিলে দুপক্ষের সমান সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকবে। এ চুক্তি শুধু ভবিষ্যতের মার্কিন সামরিক সহায়তায় নজর দেব, অতীতের সহায়তা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়।
ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সিরিদেনকো বলেন, ‘আমরা শুধু বিনিয়োগই পেতে যাচ্ছি না; বরং এমন একটি কৌশলগত অংশীদারকেও পাচ্ছি, যারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনে সহায়তা করতে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার ফাঁকে এক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গতকাল ভ্যাটিকান সিটিতে