রপ্তানি হচ্ছে শিবগঞ্জের কুমড়া-আলু
Published: 28th, January 2025 GMT
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি ও আলু সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ কয়েকটি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। কৃষকদের ন্যায্য মূল্য পাওয়া এবং দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে বাররুন এগ্রো ফার্ম নাম একটি প্রতিষ্ঠান। এ সব সবজি রপ্তানিতে সার্বিক সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
শিবগঞ্জ বাজারে মেসার্স সাগর ট্রেডার্সের আড়তে এ সব সবজি কেনা হচ্ছে। কৃষক তাদের ক্ষেত থেকে আলু, বাঁধাকপি ও মিষ্টি কুমড়া এ আড়তে নিয়ে আসছে। পাইকারি বাজার থেকে এখানে কৃষকেরা মণপ্রতি ১০০ টাকা বেশি দাম পাচ্ছে। বাজারে প্রতি মণ আলু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। আর সাগর ট্রেডার্সে এসব কেনা হচ্ছে সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মণ দরে।
চলতি রবি মৌসুমে সাগর ট্রেডার্স এ উপজেলার প্রায় ১ হাজার কৃষকের কাছ থেকে আলু, মিষ্টি কুমড়া ও বাঁধাকপি কিনছেন। এসব সবজি বাররুন এগ্রো ফার্ম নামের ঢাকার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে। কৃষকদের সুবিধার্থে মাঠ থেকে আলু গাড়িতে লোড করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আলু, মিষ্টি কুমড়া ও বাঁধাকপি বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে এবং ভালো দাম পাওয়ায় খুশি উপজেলার কৃষকেরা।
আলু চাষি মোকারম হোসেন বলেন, ‘‘এবার আমি ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে কিন্তু বাজারে দাম নেই। আমরা লোকসানের আশঙ্কা করছি। তবে বর্তমান আমরা অনেক খুশি, কেননা আমাদের উৎপাদিত আলু বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। বাজারের চেয়েও এখানে মণে ১০০ টাকা বেশি দাম পাচ্ছি।’’
বেলাল, একাবুলসহ কয়েকজন কৃষক জানান, এভাবে প্রতি বছর ফসল বিদেশে রপ্তানি করা হলে ভালো দাম পাওয়ায় ফসল ফলাতে আগ্রহ বাড়বে।
মেসার্স সাগর ট্রেডার্সের মালিক সাগর আহমেদ বলেন, ‘‘শিবগঞ্জ উপজেলার মাটি উর্বর। এখানে সব ধরনের সবজির চাষ হয় এবং ফলনও ভালো হয়। অনেক সময় কৃষকেরা ন্যায্য মূল্য পান না। তাই আমি ক্ষেত থেকে বেশি দামে আলু, বাঁধাকপি ও মিষ্টি কুমড়া কিনছি। এ সব পণ্য বাররুন এগ্রো ফার্ম প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছি।’’
বাররুন এগ্রো ফার্মের নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বাংলাদেশে আমরাই একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যে দেশের বিভিন্ন কাঁচা পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে থাকি। আমরা আলু, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি, টমেটো ও কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন সবজি রপ্তানি করি। এ সব সবজি সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়ায় কাতারসহ কয়েকটি দেশে রপ্তানি করছি। বর্তমান এ সব আলু চট্টগ্রাম হয়ে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করা হবে।’’
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল হান্নান বলেন, ‘‘চলতি রবি মৌসুমে এ উপজেলায় ১৮ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ১৯ হাজার ৪০০ হেক্টরে। ইতোমধ্যে ৮২০ হেক্টর জমির আলু তোলা হয়েছে। সাগর ট্রেডার্স আমাদের কাছ থেকে এর আগে মিষ্টি কুমড়া ও বাঁধাকপি রপ্তানির প্রত্যয়ন নিয়েছে। বর্তমান তারা আলু বিদেশে রপ্তানি করছে। এ উপজেলায় পর্যাপ্ত আলু চাষ হয়ে থাকে।’’
তিনি আরও বলেন, যদি প্রতি বছর এভাবে আলু বিদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে তাহলে কৃষকেরা লাভবান হবেন। অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে।
ঢাকা/মোসলেম/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ বগঞ জ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।