নারী ফুটবলাররা বাটলারকে কোচ হিসেবে না চাওয়ার যত কারণ
Published: 31st, January 2025 GMT
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সদস্যরা ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি, ২০২৫) সন্ধ্যার আলো আঁধারে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ভবনের নিচে এক অপ্রত্যাশিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার তাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা আগেও প্রধান কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। গত বছর অক্টোবরে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ চলাকালীন সময়ে কোচ ও সিনিয়র ফুটবলারদের মধ্যে এই দূরত্ব সবার নজরে আসে। তবে সেই সংঘর্ষ পেছনে ফেলে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ শিরোপা ধরে রাখে। এর পরেই জানুয়ারিতে বাফুফে কোচ বাটলারের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করে। তবে চুক্তির পরও কোচ ও খেলোয়াড়দের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা কমেনি, বরং তা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। গত সোমবার, ইংলিশ কোচ ঢাকায় ফিরে পরদিন যখন তিনি টিম মিটিংয়ের আহ্বান করেন, অনেক খেলোয়াড় তাতে যোগ দেননি। এই পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে বাটলারের অধীনে অনুশীলন ক্যাম্পে অংশ না নেওয়ার পাশাপাশি একযোগে অবসরের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
“প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
আরো পড়ুন:
হামজার সঙ্গে সাক্ষাৎ বাফুফে সভাপতি তাবিথের
লেস্টার সিটির হামজা এখন বাংলাদেশের
সালাম নেবেন। একটা ক্রান্তিকালে আপনাদের সামনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষ জেনেছে কতটা প্রতিকূল পথ পাড়ি দিয়ে আমরা টানা দুইবার দেশের মানুষের জন্য সাফ শিরোপা এনে দিয়েছি। এই পর্যায়ে আসতে আমাদের কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছে, কত বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে, এ সবকিছুই আপনাদের জানা। গত বছর অক্টোবরে নেপালের কাঠমন্ডুতে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আরেকবার প্রমাণ দিয়েছি, আমরাই সেরা। সেই টুর্নামেন্ট চলাবস্থায় দলের কোচ পিটার বাটলারের সঙ্গে দলের খেলোয়াড়দের দূরত্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। ইচ্ছেমতো একাদশ গড়ে তিনি দলকে ডোবাতে চেয়েছিলেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে কোচের সিনিয়র ফুটবলারদের বাদ দেওয়া একাদশ যে ভুল ছিল, সেটা সবাই দেখেছে। কারণ, ওই ম্যাচ আমরা হারতে হারতে কোনোরকমে ড্র করেছিলাম। ভারতের বিপক্ষে আমাদের চাপে তিনি একাদশ বদলাতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং সিনিয়রসমৃদ্ধ বাংলাদেশ দল ভারতকে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়েছিল। এটাই প্রমাণ করে আমরাই সঠিক ছিলাম। কিন্তু ওই ম্যাচে নামার আগেই জানতাম কোচের বিরুদ্ধে একরকম বিদ্রোহে এই একাদশ তৈরি হয়েছিল। আমরা যদি ব্যর্থ হই, বাফুফে কর্তারা এবং দেশের মানুষের কাছে আমরা ভিলেন হয়ে যেতাম। ওই ম্যাচেই আমাদের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেত। এটা বুঝেও আমরা ঝুঁকি নিয়েছিলাম দেশের হয়ে লড়াই করার জন্য। দেশের জন্য আমাদের এই লড়াই ও আবেগ, ভালোবাসার মূল্য ফুটবল ফেডারেশন থেকে আশা করেছিলাম।
সেটা হয়নি। বরং সাফ থেকে ফেরার পর যা হলো, তার জন্য আমরা মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। এই বিতর্কিত ব্যক্তির সঙ্গে আরও দুই বছরের চুক্তি নবায়ন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এই সিদ্ধান্তে মেয়েদের দাবি-দাওয়াকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছে।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, বাটলারকে কেন আমরা কোচ হিসেবে চাই না? সেটা জানাতেই আমাদের আজকের প্রয়াস—
১.
সত্যি বলতে আমরা অবাক হয়েছিলাম এবং অপেক্ষায় ছিলাম যে উনি কখন মিটিং ডাকবেন। কিন্তু ডাকেননি। বাংলাদেশে এসে বাফুফের এক সহ-সভাপতি আমাদের ইস্যু নিয়ে কোচের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং ওনাকে ওনার ব্যবহার আচার সম্পর্কে সতর্ক হতে বলেন। আমাদের প্রশ্ন হলো, ওনাকে কেন সতর্ক করতে হবে? ওনার নিজের কি কোনো জ্ঞানবুদ্ধি নেই যে ওনার কি করা উচিৎ, কি করা উচিৎ নয়?
২. বাংলাদেশের নারী ফুটবলে এই ঘটনা একেবারেই প্রথম। একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কোচ ভুলে যান যে তার হাতে ৫টা পরিবর্তন আছে। সাফের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা যখন ১-০ গোলে হারার পথে, তখন প্রধান কোচ সানজিদাকে নামানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নামানোর সময় দেখেন খেলোয়াড় বদলের কাগজ তার কাছে নেই। আগে তিনটা পরিবর্তন করায় সঙ্গে থাকা তিনটি কাগজই শেষ হয়ে গেছে। তখন ম্যাচের ৯৫ মিনিট চলে। যেখানে বাংলাদেশ ১-০ গোলে পিছিয়ে রয়েছে। তখনও বাংলাদেশের হাতে ২টা খেলোয়াড় পরিবর্তনের সুযোগ ছিল, কিন্তু কাগজ ছিল না। ব্যপারটা খুবই লজ্জাজনক ও হাস্যকর। এতো বড় ডিগ্রিধারী কোচের থেকে এটা আশা করা যায় না।
৩. ওই ম্যাচেই কৃষ্ণাকে নামানোর আগ মূহুর্তে এক সহকারী কোচ তার জার্সির নাম্বার জিজ্ঞেস করলে আরেকজন সতীর্থ খেলোয়াড় বলে দেয়। কৃষ্ণা তখনও সেভগার্ড পড়ায় ব্যস্ত থাকায় দ্বিতীয়বার আবার জিজ্ঞেস করেন জার্সি নাম্বার। আবারও অন্য সতীর্থ বলে দেওয়ায় কোচ রেগে কৃষ্ণার দিকে তেড়ে আসেন। মামুলি জার্সি নাম্বার না বলায় এরকম আচরণ কোনো কোচের পক্ষে সম্ভব কিনা আমাদের জানা নেই।
৪. কেবল মাঠ নয়, মাঠের বাইরেও প্রতিনিয়ত কোচ আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেন। দলের অভ্যন্তরে খেলোয়াড়দের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়রের কথা বলে বিভাজনের সৃষ্টি করেছেন। মেয়েদের পোশাক নিয়ে কথা বলতেও ছাড়েননি। বডি শেমিংও (অন্যের শারীরিক বৈশিষ্ট্য কিংবা অবয়ব নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য) করেছেন। মেয়েদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলেন, বাজে মন্তব্য করেন কোচ। আমাদের বিরুদ্ধে কোচ সব সময় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ করেন। এটা যে ডাহা মিথ্যা কথা, তার বড় প্রমাণ হলো, অতীতের কোনো কোচ মেয়েদের শৃঙ্খলা নিয়ে কখনো কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেননি। পিটাররে এরকম উল্টাপাল্টা আরচণের বিষয়গুলো সহকারী কোচরাও জানেন। কিন্তু তারা চাকরি যাওয়ার ভয়ে মুখ খোলেন না।
৫. আমাদের সঙ্গে কোচ যা যা ঘটিয়েছেন, তা জানিয়ে আমরা বাফুফের মাননীয় সভাপতির কাছে গত বুধবার একটি চিঠি দিয়েছি। যে চিঠিতে আমরা লিখেছি, "আমরা একটি জটিল বিষয় আপনার নজরে আনতে লিখছি। কোচ পিটারের আচরণ দলের মধ্যে মারাত্মক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে, যা একটি বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করেছে ক্যাম্পে। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করছে। গত ছয় মাসে, পিটারের কাছ থেকে আমাদের অনেক গালি-গালাজ শুনতে হয়েছে। আমাদের মানসিক হয়রানি ও উৎপীড়নের একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছেন কোচ। তার কারণে ক্যাম্পে একটি আতঙ্ক বিরাজ করছে। খেলোয়াড়রাও তাতে ভীষণ অসম্মানিত ও হতাশার মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। খেলোয়াড়রা, বিশেষ করে দলের সিনিয়র সদস্যরা, ধারাবাহিক বৈষম্য ও অন্যায় আচরণের শিকার হচ্ছেন। কোচের এসব আচরণ কেবল অবমাননাকর নয়, দলগতভাবে পারফর্ম করার ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করেছে। এটা মানতে হবে যে, কোচিংয়ে শুধুমাত্র কৌশল ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকলেই হয় না বরং পারস্পরিক সম্মান, বিশ্বাস ও সমর্থনের পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষমতাও কোচের থাকতে হয়। দুর্ভাগ্যবশত, কোচ পিটারের নেতৃত্বে খেলোয়াড়রা বিচ্ছিন্ন ও হতাশাগ্রস্ত বোধ করে, যা একটি বাজে সংস্কৃতি তৈরি করেছে।"
৬. আমরা কোনো অবস্থাতেই দলে বিভাজন চাই না। তাই বিভাজন সৃষ্টি করা কোচকেও আমাদের প্রয়োজন নেই। কোচ পিটার দলের কিছু জুনিয়র ফুটবলারকে গুটি হিসেবে ব্যবহার করে দলের অভ্যন্তরে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। কিছু মেয়েদের ব্যবহার করে মিথ্যাচারও করছেন। তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, আমরা সিনিয়ররা নাকি জুনিয়র মেয়েদের চাপ দিচ্ছি যাতে তার অধীনে অনুশীলনে অংশ না নেয়। আমরা পরিষ্কার জানাতে চাই, আমাদের পক্ষ থেকে কাউকে কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। ভালো-মন্দের বিচার করার বয়স-জ্ঞান ক্যাম্পে থাকা প্রতিটি মেয়ের হয়েছে। সুতরাং, সবাই নিজ নিজ সিদ্ধান্তেই তাদের অবস্থান বেছে নিয়েছে।
পরিশেষে বলতে চাই, আমরা আশা করছি, বাফুফের মাননীয় সভাপতি (তাবিথ আউয়াল) বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে আশু সমাধানের ব্যবস্থা নেবেন। এর আগ পর্যন্ত আমরা বাটলারের অধীনে কোনো অনুশীলন ক্যাম্পে অংশ নিব না। যেহেতু গত অক্টোবরের পর কোনো ফুটবলারের সঙ্গে বাফুফে কোনো চুক্তি নবায়ন করেনি, তাই আইনত বাফুফে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখে না। তারপরও যদি সেরকম কিছু করার সিদ্ধান্ত হয় এবং বাটলারকেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তে বাফুফে অনড় থাকে, তবে আমরা একযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হব। ভেবে নিব, দেশের নারী ফুটবলে আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে।
সবাইকে ধন্যবাদ।”
বাটলারের অধীনে অনুশীলন ক্যাম্পে ৩০ জন ফুটবলারের মধ্যে ১৮ জন তাদের লিখিত বক্তব্যে স্বাক্ষর করেছেন। সকালে যখন বাটলার জিম সেশন আয়োজন করেন, তখন তাতে অংশগ্রহণ করেন মাত্র ১২ জন। সিনিয়র খেলোয়াড়রা অনুশীলন বর্জন করে, পরবর্তীতে সন্ধ্যায় গণমাধ্যমের সঙ্গে মুখোমুখি হন। এ সময় সানজিদা, কৃষ্ণা, মনিকা, মারিয়া, নীলা, তহুরা, শিউলি আজিম, ঋতুপর্ণা চাকমাসহ আরো ১৫ ফুটবলার উপস্থিত ছিলেন। যাদের বেশিরভাগই দুইবার সাফজয়ী দলের সদস্য।
ঢাকা/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ব যবহ র ফ টবল র কর ছ ন ন কর ন র জন য হয় ছ ল দল র ক
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।
ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।