চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলায় শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে চারটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সবগুলো দুর্ঘটনাই ঘটেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের ২ কিলোমিটার অংশে। কুয়াশা ও লবণপানিতে সড়ক পিচ্ছিল হওয়ায় বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৭টার দিকে চুনতি শাহ সাহেব গেট এলাকায় লবণবাহী ট্রাক ও চালবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই ট্রাকই উল্টে যায়, দুই চালক গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়ে। সকাল ৮টার দিকে চুনতির জাঙ্গালিয়া এলাকায় একটি ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সাড়ে ৮টার দিকে একই এলাকায় কক্সবাজারমুখী একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। চালক গুরুতর আহত হন।
সর্বশেষ রাত ৯টার দিকে চুনতি ফরেস্ট অফিসের সামনে গরুবোঝাই ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে গরুবোঝাই ট্রাকের চালক গাড়ির ভেতর আটকা পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তাকে উদ্ধার করেন।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘দুই লেনের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ছুটির দিনে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ থাকে। কুয়াশাচ্ছন্ন পিচ্ছিল মহাসড়কে ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।’
দুর্ঘটনা ও উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ রুবেল আলম বলেন, ‘আমাদের টিম আজ চারটি সড়ক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে। সবগুলো ঘটনায় চালকরা গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। প্রতিদিন এ সড়কে দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রাম- কক্সবাজার মহাসড়কে দুর্ঘটনার মূল কারণ দুই লাইনের অপ্রশস্ত সড়ক, লবণবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে পিচ্ছিল হয় সড়ক, অতিরিক্ত বাঁক, ওভারটেক করে চালকরা, দূরপাল্লার পর্যটকবাহী বাসের চালকদের এ সড়কে অনভিজ্ঞতা, সড়কের দুই পাশে (ফুটপাত) মাটি না থাকায় চাকা ছিটকে পড়লেই উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রুয়া নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। এর আগে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রুয়া অ্যাডহক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ মে পুনর্মিলনী এবং ১০ মে রুয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেন বিএনপিপন্থী সাবেক শিক্ষার্থীরা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই পক্ষের নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি যুক্তি চলতে থাকে।
এদিকে গতকাল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রুয়া নির্বাচন কমিশনের প্রধান কমিশনার পদত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে নোটিশ জারি করেন রুয়ার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করছেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘সিলেকশন না ইলেকশন, ইলেকশন ইলেকশন’, ‘প্রশাসন জবাব দে, রুয়া কি তোর বাপের রে’, ‘রুয়া নিয়ে টালবাহানা, চলবে চলবে না’, ‘অ্যাডহক না নির্বাচন, নির্বাচন নির্বাচন’, ‘সিন্ডিকেট না রুয়া, রুয়া রুয়া’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এ সময় ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা-কর্মীদেরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। পরে জামায়াত ইসলামীর কয়েকজন নেতাও কর্মসূচিতে যোগ দেন। একপর্যায়ে বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। বিকেল ছয়টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ মে রুয়া নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ সেই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাসের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছে। যারা রুয়া নির্বাচন দিতে পারে না, তারা রাকসু নির্বাচন কীভাবে বাস্তবায়ন করবে? ১০ মের নির্বাচন সেই একই তারিখে হতে হবে। এই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’