বরগুনা শহরে স্থাপিত দেশের একমাত্র নৌকা জাদুঘর ভেঙে ফেলেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এটি জেলা প্রশাসনের অধীন স্থাপনা হলেও গতকাল শনিবার বিএনপি কর্মীরা উচ্ছেদের নামে ভাঙচুর শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক নীরব থেকেছেন। নদীবহুল এলাকার ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলতে স্থাপিত এই জাদুঘর ভেঙে ফেলায় পর্যটনপ্রেমীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। 
জেলা প্রশাসন কার্যালয় সংলগ্ন পুরোনো গ্রন্থাগার চত্বরে ২০২০ সালে স্টিল দিয়ে নৌকার আদলে অবকাঠামো করে জাদুঘরটি করা হয়। নাম দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আন্দোলনকারীরা সেটির ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। এরপর থেকে সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের লোকজন স্টিল কেটে নৌকা অবকাঠামো অপসারণ শুরু করেন। স্থাপনার দুই পাশ কেটে নৌকার কাঠামো অপসারণ করা হয়। 

নদীবহুল এলাকার ঐতিহ্য নৌকাকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত এবং দেশি-বিদেশি পর্যটককে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সাগরপাড়ের শহর বরগুনায় জাদুঘর করা হয়। পাকা ভবন ঘিরে স্টিল দিয়ে তৈরি নৌকাটি ১৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের। ভেতরে ঐতিহ্যবাহী সাম্পান, বজরা পানসি, কোষা, ময়ূরপঙ্খি, গয়না, ডিঙিসহ বিভিন্ন প্রকার ১০১টি প্রতীকী নৌকা স্থাপন করা হয়। তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধানে স্থাপিত জাদুঘরটি উদ্বোধন করা হয় ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। বিনোদনপিপাসুদের কাছে এটি ছিল আকর্ষণীয় স্থান। 
জাদুঘরটির পাশাপাশি নৌকা গবেষণা কেন্দ্র, আধুনিক লাইব্রেরি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার, শিশুদের বিনোদনের জন্য রাইড, থিয়েটার, ক্ষুদ্র ক্যাফেসহ নানা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের আশ্বাস ছিল। তবে উদ্বোধনের চার বছরে তা বাস্তবায়ন হয়নি।

পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফুর রহমান বলেন, বরগুনা উপকূলীয় জেলা। নৌকা আমাদের ঐতিহ্য। একটি রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে না দেখে ঐতিহ্য হিসেবে দেখলে জাদুঘরটি রক্ষা করা যেত। প্রয়োজনে নামের পরিবর্তন করা যেত। জাদুঘরটি জেলা প্রশাসনের অধীনে। অপসারণ, নতুন পরিকল্পনা বা ডিজাইন করার প্রয়োজন হলে তারাই করতে পারত।   
বরগুনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান টিপন সাংবাদিকদের বলেন, নৌকা জাদুঘরের নামে ১০টা জাদুঘরের চাঁদা উঠানো হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি দখল করে এটি করা হয়েছে। তাই জনগণ ভেঙে ফেলেছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম স্বপন বলেন, নৌকা জাদুঘর জনরোষে পড়েছে। তবে পুরোটা ভাঙা হয়নি। দুই পাশে নৌকার ডিজাইন ভাঙা হয়েছে। সেখানে গণপাঠাগার করা হবে। 
যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুরাদ খান বলেন, আগে সেখানে পৌরসভার পরিচালনায় গণপাঠাগার ছিল। ২০২০ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক তোষামোদি করতে গিয়ে পাঠাগার বন্ধ করে বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর করেছেন। ৫ আগস্ট জনরোষে সেটি ভাঙচুর এবং সংগৃহীত নৌকা লুটপাট হয়। এরপর সেখানে মাদক কারবারি ও কিশোর গ্যাং আস্তানা গাড়ে। স্থানীয় জনগণ এতে অতিষ্ঠ হয়ে সেটা অপসারণ করে আবার পাঠাগার চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। মুরাদ আরও বলেন, পাঠাগারের পাশাপাশি আরেকটি নৌকা জাদুঘর করার জন্য তারা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানাবেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো.

শফিউল আলম কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ জ দ ঘরট জ দ ঘর বরগ ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা আরও কমেছে। তাঁর জনসমর্থনের হার নেমে ৪০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর জনপ্রিয়তা এখন সবচেয়ে কম। অর্থনীতি ও অভিবাসন ইস্যু সামলাতে তাঁর দক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন নাগরিকেরা। রয়টার্স/ইপসোসর করা এক নতুন জনমত জরিপে এমন তথ্য জানা গেছে।

তিন দিন ধরে জরিপটি চালানো হয়। গত সোমবার শেষ হয় জরিপের কাজ। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ১ হাজার ২৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক জরিপে অংশ নেন। এতে ট্রাম্পকে ঘিরে বিভক্ত একটি জাতির চিত্র উঠে এসেছে। জরিপে অংশ নেওয়া ৮৩ শতাংশ রিপাবলিকান ও ৩ শতাংশ ডেমোক্র্যাট তাঁর কর্মকাণ্ড সমর্থন করেছেন। অন্যদিকে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ স্বতন্ত্র ভোটার তাঁর কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি জোরদার করা ও কঠোর অভিবাসনের নীতি গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন। জরিপে দেখা গেছে, এ দুটি বিষয়ে তাঁর প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিলেও মার্কিনরা এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৩৮ শতাংশ উত্তরদাতা ট্রাম্পের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। জুলাইয়ের মাঝামাঝি করা জরিপে এই হার ছিল ৩৫ শতাংশ। অভিবাসন ইস্যুতেও তাঁর জনপ্রিয়তা সামান্য বেড়েছে—সেখানে ৪৩ শতাংশ উত্তরদাতা তাঁর পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন। আগের জরিপে এই সংখ্যা ছিল ৪১ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে
  • ইরানের ভুলে আজারবাইজান যেভাবে ইসরায়েলের দিকে ঝুঁকে পড়ল
  • কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী
  • জুলাই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়াবেন না: টুকু
  • সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য
  • নওগাঁয় স্কুলছাত্র হত্যায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড, দুজনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড
  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান
  • সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
  • ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তি’, শিক্ষার্থীরা পাবেন ২ ক্যাটাগরিতে