সঠিক সময়ে রোগনির্ণয়ই পারে ক্যানসার থেকে মুক্তি দিতে
Published: 6th, February 2025 GMT
‘আমাদের দেশে প্রতিবছর দেড় লাখ লোক ক্যানসারে আক্রান্ত হন। তাই শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী ক্যানসার–সচেতনতা নিয়ে কাজ করা হয়। যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগনির্ণয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়।’
গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ছিল বিশ্ব ক্যানসার দিবস। এ উপলক্ষে এসকেএফ অনকোলজি আয়োজন করে ‘বিশ্বমানের ক্যানসার-চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনা। অনুষ্ঠানের শুরুতে দেশের ক্যানসার রোগের এমন পরিসংখ্যান দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা.
নাসিহা তাহসিনের উপস্থাপনায় বাংলাদেশে ক্যানসারের বর্তমান অবস্থা, ডায়াগনোসিস, রোগনির্ণয়, প্রতিরোধব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে পরামর্শ দেন ডা. স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্বটি সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম এবং প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
উপস্থাপক নাসিহা তাহসিন এই দিবস প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিশ্ব ক্যানসার দিবসের সূচনা ১৯৯৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্ব ক্যানসারের বিরুদ্ধে শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে। সারা বিশ্বে ক্যানসার হলো মানুষের মৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ২০২০ সালে বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ মানুষ এ রোগে মারা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে ফুসফুস, স্তন, জরায়ুমুখ, গলা-মুখগহ্বর, খাদ্যনালি, কলোরেক্টাল, প্রোস্টেটসহ নানান ক্যানসারের ব্যাপকতা বেড়েই চলেছে। তবে সঠিক সময়ে রোগনির্ণয় হলে এতে বেঁচে থাকার হার অনেকাংশেই বেশি। এবারের ক্যানসার দিবসের প্রতিপাদ্য “ইউনাইটেড বাই ইউনিক’’ বা অনন্যতায় ঐকতান।’
ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিতে কারা বেশি? এ বিষয়ে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই যাঁরা বয়স্ক এবং প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ তামাক গ্রহণ করেন, তাঁরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।’
ক্যানসারের লক্ষণ বা উপসর্গ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ক্যানসারের উপসর্গ বিভিন্ন রকম। যদি আমি মোটাদাগে বলি, সেগুলো হলো কারণ ছাড়া ওজন কমে যাওয়া, প্রায় সময়ই জ্বরে ভোগা, চরম ক্লান্তি ভাব, যা বিশ্রাম নেওয়ার পরও দূর হয় না, ক্ষুধামান্দ্য, ত্বক পরিবর্তন হয়ে বিভিন্ন রং ধারণ করা, অন্ত্রের ক্রিয়া বা মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন, শরীরের কোনো ক্ষত যা সহজে ভালো হয় না, কাশি-মলদ্বার-প্রস্রাবের রাস্তা-স্তন দিয়ে অস্বাভাবিক রক্তপাত হওয়া, শরীরের যেকোনো স্থান শক্ত হয়ে যাওয়া, ক্রমাগত বদহজম বা কোনো কিছু গিলতে গেলে সমস্যা, টানা কাশি বা কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন ইত্যাদি উপসর্গ থাকতে পারে। এ ধরনের লক্ষণ দেখা গেলে কালক্ষেপণ না করে উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।’
ক্যানসারের স্ক্রিনিং ও ডায়াগনসিস কি একই বিষয়? উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘না, দুটি আলাদা বিষয়। স্ক্রিনিং হচ্ছে সোশ্যাল মেথডোলজি, যা কোনো উপসর্গ পাওয়ার আগেই নিয়মিত হেলথ চেকআপের জন্য করা হয়। আর ডায়াগনোসিস হচ্ছে উপসর্গ পাওয়ার পর চিকিৎসা শুরু করার প্রক্রিয়া।’ ক্যানসার ছোঁয়াচে কি না—এ প্রসঙ্গে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘একদমই না। ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়াবাহিত রোগগুলোকে বলা হয় ছোঁয়াচে। সে বিবেচনায় ক্যানসার কখনোই ছোঁয়াচে নয়।’
কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে স্তন ক্যানসারে সুস্থ হওয়ার হার ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ।
বিশ্ব ক্যানসার দিবস, বাংলাদেশে ক্যানসারের বর্তমান অবস্থা, ডায়াগনসিস, রোগনির্ণয় ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে পরামর্শ দেন ডা. স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপসর গ
এছাড়াও পড়ুন:
হজমের সমস্যা হলে বুঝবেন কীভাবে?
শরীরে কোনো ধরনের সমস্যা হলে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। অনেকেই সেসব লক্ষণকে পাত্তা দেন না। ধীরে ধীরে এসব সমস্যা বড় আকার নেয়। তাই যেকোন রোগের প্রাথমিক লক্ষণ জেনে রাখা জরুরি। শরীরে হজমজনিত সমস্যা হওয়া মানে অন্ত্রের স্বাস্থ্য দুর্বল হয়ে পড়া। তাই জটিল রোগ হওয়ার আগেই কিছু লক্ষণ জেনে রাখা দরকার। যেমন-
বদহজমের সমস্যা থাকলে সারাক্ষণই পেটে একটা চিনচিনে ব্যথা, অস্বস্তি হতে পারে। কিছু খেলেই মনে হবে পেটে ব্যথা হচ্ছে। এক্ষুনি বাথরুমে দৌড়াতে হবে। বদহজমের সমস্যা মানেই হচ্ছে খাবার সঠিক ভাবে হজম না হওয়া। এর ফলে অস্বস্তিকর ঢেকুর উঠতে পারে। তাই সারাক্ষণ ঢেকুর উঠতে থাকলে সাবধান হওয়া জরুরি।
যারা অনেকদিন ধরে বদহজমের সমস্যায় ভুগছেন পানি খেলেও তাদের মনে হয় অ্যাসিডিটি হচ্ছে। এমন হলে সতর্ক হওয়া জরুরি।
সামান্য কিছু খেলেও অনেকেরই ঢেকুর উঠতে থাকে। এর অন্যতম কারণ বদহজমের সমস্যা। এই লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
খাবার দেখলে অনীহা, খিদে না থাকা, গা-গোলানো এবং বমিভাবে এগুলি বদহজমের কারণেই দেখা যায়। এইসব উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা করবেন না।
বদহজমের সমস্যা থাকলে গ্যাসেরও সমস্যা হয়। সারাক্ষণ গলায় এক ধরনের চাপ অনুভূত হয়। এমন হলে সতর্ক হোন।
বদহজমের সমস্যা থাকলে সারাক্ষণ মনে হবে পেট যেন ফুলে ফেঁপে রয়েছে। সামান্য কিছু খেলেই অস্বস্তি হবে। এইসব উপসর্গ অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
দীর্ঘক্ষণ ধরে চলতে থাকা বদহজমের সমস্যা অবহেলা করলে পরবর্তীতা পেটের বড় রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ কারণে যাদের প্রচণ্ড অ্যাসিডিটি এবং গ্যাসের সমস্যা আছে তারা ভাজাভুজি, তেলমসলা, ঝাল খাবার এড়িয়ে চলুন। সহজপাচ্য খাবার খান। প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে পানি পান করুন।