‘মওকা’ পেয়ে এবার ভারতকে নিয়ে মজা পাকিস্তানিদেরও
Published: 10th, February 2025 GMT
‘মওকা’, ‘মওকা’ বিজ্ঞাপনের কথা কি মনে আছে?
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে তৈরি হওয়া এই বিজ্ঞাপন তখন আলোচনার তুঙ্গে ছিল। এখন হয়তো এ নিয়ে আর আলাপ আগের মতো নেই। কিন্তু ‘মওকা’ বা সুযোগ পেলে কে আর ছাড়ে!
ভারতের দর্শকেরা পাকিস্তানকে বা পাকিস্তানের দর্শকেরা ভারতকে খোঁচানোর পেলে কি আর কে ছাড়ে! সবশেষ এই উপলক্ষটা এনে দিল ফ্লাডলাইট। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। দুই দেশের দুই স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট ম্যাচের মাঝপথে হঠাৎ নিভে যাওয়া নিয়ে এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি খোঁচাখুঁচি চলছে।
আরও পড়ুনউইলিয়ামসনের ‘মাস্টারক্লাস’, ফাইনালে নিউজিল্যান্ড২ ঘণ্টা আগেগত শনিবার গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের মাঝখানে ফ্লাডলাইটের আলো নিভে যাওয়া নিয়ে পাকিস্তানিদের সঙ্গে মজা নিয়েছেন ভারতের দর্শকেরা। ঠিক পরের দিনই গতকাল কটকের বরবাটি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভারতের ম্যাচে তাদেরও একই রকম পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে।
গতকাল ঘটনাটি ঘটে ম্যাচের সপ্তম ওভারের সময়। ৩০৫ রান তাড়া করতে নেমে তখন ৬ ওভার ১ বল খেলে ৪৮ রান করেছে ভারত, তখনই স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটের আলো কমতে থাকে। এরপর এক পর্যায়ে পুরো মাঠই হয়ে যায় অন্ধকার। আবার আলো ফিরতে ফিরতে লেগে যায় প্রায় ২০ মিনিট।
এমন ঘটনাটা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। পাকিস্তানের কিছু সমর্থক এটাকে বলতে থাকেন ‘কর্মফল’। কেউ আবার আইসিসিকে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কীভাবে এমন মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়। এমনকি কূটনীতিক সম্পর্ক নিয়ে খোঁচা দিয়ে এমন টুইটও দেখা গেছে, ‘আমরা কি চীন থেকে কিছু ফ্লাডলাইট এনে দেব?’
এই ঘটনায় যে শুধু পাকিস্তানের দর্শকেরা মজা করেছেন, তা নয়। এমনকি ভারতের সমর্থকদের অনেকেও ক্ষোভ ঝেড়েছেন এই বলে, বিসিসিআই টাকার জন্য ছোট শহরগুলোতে খেলা ফেলে তাদের দুনিয়ার সামনে লজ্জায় ফেলছেন। বোর্ডের কাছে এত টাকা থাকতেও সামান্য ফ্লাডলাইট ঠিক রাখতে পারছেন না, তা নিয়েও ক্ষোভ ছিল তাদের।
বিষয়টি পৌঁছে গেছে সরকারি পর্যায়েও। কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা ওডিশা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কাছে জানতে চেয়েছে রাজ্য সরকার। তারা অবশ্য কারণ হিসেবে বলেছে জেনারেটর নষ্ট হয়ে যাওয়াকে। কিন্তু ঘটনা যা ঘটার, তা তো এর মধ্যে ঘটে গেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস
বিংশ শতাব্দীর আগে পৃথিবীর মানচিত্রে কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান নামের এই পাঁচটি দেশ ছিলো না। মূলত ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই রাষ্ট্রগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে। পরে চীনের সহায়তায় ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলগুলো বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে পুনরুত্থান হয়েছে। এখন প্রশ্ন করা যেতে পারে, চীন কেন আবারও এই অঞ্চলগুলোকে শক্তিশালী করে তুলছে?
ঐতিহাসিকভাবে মধ্য এশিয়া অঞ্চল সিল্করোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো। যা চীনকে মধ্যপ্রাচ্য এবং রোমান সভ্যতার সাথে যুক্ত করেছিলো। বীজ গণিতের জনক আল খারিজমি, আবু সিনার মতো বিজ্ঞানীদের জন্ম হয়েছে এখানে। যাদের লেখা বই ইউরোপে শত শত বছর ধরে চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। চেঙ্গিস খানও এই অঞ্চলে তার সম্রাজ্যের নিদর্শন রেখে গেছেন। পাশাপাশি ঘোড়ার পিঠে আদিম যাযাবর জীবনের ঐতিহ্যও টিকে আছে এখানে।
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার বিরুদ্ধে এবার রোমানিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ
রাশিয়ায় ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামির সতর্কতা
রাজনৈতিক প্রভাব ও সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করেছিলো রুশরা। উপনিবেশিক শাসন এমনভাবে চালু করেছিলো, যা অনেকটা ব্রিটিশ বা ফরাসি সম্রাজ্যের মতো দেখতে।
রাজ্যগুলোকে শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নের ফলে বিশাল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এমনকি যাযাবর জাতিকে যুদ্ধ যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। আর যাযাবর জাতিকে বসতি স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছিলো। এরপর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ফলে কাজাখ জনগোষ্ঠীর চল্লিশ শতাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ অনাহারে মারা যায়। এবং যাযাবর জনগোষ্ঠীর যে অর্থনীতি, তা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। কারণ সোভিয়েত আমলে কাজাখ যাযাবররা যে পশুপালন করতো তার নব্বই শতাংশই মারা যায়। ফলে বাধ্য হয়ে কাজাখদের যাযাবর জীবনযাত্রা ছেড়ে দিতে হয়। বলতে গেলে সোভিয়েত আমলে কাজাখ সভ্যতা ও সংস্কৃতির বেদনাদায়ক পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
১৯৯১ সালে সোভিয়েন ইউনিয়নের পতন হয়, সৃষ্টি হয় এই পাঁচটি স্বাধীন দেশের। এই দেশগুলো স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন পরবর্তী বিশ্বে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের ব্যাপক সংগ্রাম করতে হয়। তবে বিগত কয়েক দশক ধরে মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতিগুলো নিজস্ব সীমানার মধ্যে এক অনন্য পরিচয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। যদিও তাদের ওপর বাইরের প্রভাবও রয়েছে। তুরস্ক এই অঞ্চলে নিজেদের উপস্থিতি আরও বেশি জানান দিচ্ছে। সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত মিল আছে। এমনকি শিক্ষাগত কাঠামোতেও মিল রয়েছে। তুরস্ক মধ্য এশিয়ায় রাশিয়ার পণ্য রফতানির একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হিসেবেও বিবেচিত।
জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় এক কোটি উইঘুর বাস করেন। যাদের বেশিরভাগই মুসলিম। এদের নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া উইঘুর পরিচয় মুছে ফেলতে তাদের পুনঃশিক্ষা শিবিরে আটকে রাখার অভিযোগও আছে। যদিও চীন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এর চীন মধ্য এশিয়ায় ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। এই অঞ্চলটিকে বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইছে, যা অনেকটা সিল্করুটের মতোই।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় প্রাচীন সিল্ক রোড পুনরুজ্জীবিত করার একটি সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এই রোড পুনরুজ্জীবিত হলে রাশিয়া আর চীনের প্রভাব বলয়ে থাকা এই অঞ্চলের ভূ রাজনৈতিক গুরুত্ব কতটা বাড়বে-সেটাও সময় বলে দেবে।
ঢাকা/লিপি