ইবি শিবিরের বিজ্ঞান উৎসবে লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা
Published: 10th, February 2025 GMT
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে ‘বিজ্ঞান উৎসব-২০২৫’ আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ২১ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি তিন দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে সংগঠনটি।
এতে বিজয়ীদের জন্য থাকবে ১ লাখ টাকার পুরস্কার। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে প্রতিযোগীদের ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুঠোফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আয়োজকরা জানান, প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, প্রজেক্ট প্রদর্শনী, রুবিক্স কিউব প্রতিযোগিতা ও বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডসহ এই চারটি ক্যাটাগরিতে এ বিজ্ঞান উৎসব আয়োজিত হবে। এর মধ্যে প্রোগ্রামিং কনটেস্ট ও প্রজেক্ট প্রদর্শনীতে দলীয়ভাবে সর্বোচ্চ তিনজন করে এবং রুবিক্স কিউব প্রতিযোগিতা ও বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে এককভাবে অংশ নিতে হবে। রেজিষ্ট্রেশন ফি হিসেবে প্রোগ্রামিং কনটেস্টে ৩০০ টাকা, প্রজেক্ট প্রদর্শনীতে ৫০০ টাকা, রুবিক্স কিউব ও বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে ১০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
তারা আরও জানান, প্রোগ্রামিং কনটেস্টে প্রথম পুরস্কার ৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৩ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ২ হাজার টাকা এবং চতুর্থ ও পঞ্চম পুরস্কার হিসেবে থাকবে ১ হাজার ৫০০ টাকা। প্রজেক্ট প্রদর্শনীতে প্রথম পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ১২ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ৮ হাজার টাকা এবং চতুর্থ থেকে দশম পুরস্কার হিসেবে থাকবে ১ হাজার টাকা। এছাড়া রুবিক্স কিউব প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার ৩ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ২ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ১ হাজার টাকা এবং চতুর্থ থেকে দশম পুরস্কার হিসেবে থাকবে ৫০০ টাকা।
এছাড়া বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল পর্যায়ে পৃথকভাবে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার ৪ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৩ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ২ হাজার টাকা এবং চতুর্থ থেকে দশম পুরস্কার হিসেবে থাকবে ১ হাজার টাকা। কলেজ পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার ৩ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ২ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ১ হাজার টাকা এবং চতুর্থ থেকে দশম পুরস্কার হিসেবে থাকবে ৫০০ টাকা।
এছাড়া স্কুল পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার ৩ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ২ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ১ হাজার টাকা এবং চতুর্থ থেকে দশম পুরস্কার হিসেবে থাকবে ৫০০ টাকা। একইসঙ্গে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর জন্য সার্টিফিকেট, নাস্তা ও বিশেষ উপহারের ব্যবস্থা রেখেছে সংগঠনটি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “তথ্য-প্রযুক্তির উৎকর্ষ ও বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার এ সময়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের মানচিত্রে শ্রেষ্ঠ হিসেবে উপস্থাপন করতে বিজ্ঞান চর্চা ও বিকাশ অবিকল্প শক্তি। বিশ্বে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিজ্ঞানী তৈরি ও ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের উৎসাহ যোগাতে আমাদের এ ব্যতিক্রমী ও অনন্য আয়োজন।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ হবে বিশ্বের অনবদ্য বিজ্ঞান নগরী। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা শানিত হবে এই প্রজন্মের হাত ধরে। আমরা মনে করি, ধর্মীয় অনুশাসন ও বিজ্ঞানের মধ্য কোন সংঘাত তো নেই-ই বরং ধর্মই বিজ্ঞানের পথচলার রাজপথ নির্মাণ করে দিয়েছে। বর্তমানে তথাকথিত প্রগতির নামে ধর্মকে বিজ্ঞানের পরিপন্থি হিসেবে তুলে ধরে যে অপচেষ্টা, তা মূলত প্রগতির নামে দুর্গতি।”
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য লিংকে ক্লিক করতে বলা হয়েছে।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কনট স ট ৫০০ ট ক পর য য়
এছাড়াও পড়ুন:
ফসলের ক্ষেতে আশার আলো
বৈশাখ মাস, চারদিকে উৎসবের আমেজ। সেই উৎসবের ঢেউ লেগেছে শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জে। নতুন ধান ঘরে তোলার ধুম লেগেছে হাওর অঞ্চলে; বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি এলাকায়। হাওরের পুবালি বাতাসে এখন পাকা ধানের ম-ম গন্ধ। বৈশাখ এলেই সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে চিরচেনা এ রূপ চোখে পড়ে। ঠা-ঠা রোদ মাথায় নিয়ে ক্ষেতে ধান কাটেন কৃষক। অন্যদিকে চলে মাড়াই। কিষানিরা মনের আনন্দে মাড়াই করা ধান শুকান। বিকেলের শান্ত রোদে শুকনো ধান মাথায় নিয়ে ঘরে ফেরেন।
ধান কাটা উৎসবে শুধু কিষান-কিষানি নন, সব বয়সী মানুষই যোগ দেন। হাওরে এটি এক অনন্য উৎসব। চলে বৈশাখজুড়ে। এ উৎসবের কাছে কাঠফাটা রোদ, ঝড়-বৃষ্টি যেন তুচ্ছ। ধানের সবুজ শীষের রং যখন লালচে হতে শুরু করে, তখন কৃষকের মনের রং বদলায়। চোখ-মুখ খুশিতে ভরে ওঠে। লোকমুখে প্রচলিত– বছরের প্রথম দিনে ঘরে ফসল তুললে সারাবছর অভাব থাকে না। তাই তো হাওরে চলছে পাকা ধান কাটার উৎসব। তবে চলতি মৌসুমে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ধান তলিয়ে যায়। যাতে অনেক কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
আনন্দ-বেদনার এ বৈশাখে প্রকৃতি নতুন বিন্যাসে সাজে। বসন্তে প্রকৃতিতে যে রং লাগে, তা পূর্ণতা পায় বৈশাখে। অসীম আকাশে নানা বর্ণের মেঘের আনাগোনা আমাদের মনে সঞ্চারিত করে সঞ্জীবনী মন্ত্র। চোখে প্রশান্তি এনে দেয় সর্ববিস্তৃত প্রকৃতি। এ সময় চারদিকে আগুন ছড়ানো কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, জারুল, বাগানবিলাসসহ প্রকৃতিতে রঙের ছড়াছড়ি। দেখা মেলে আম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুলসহ মধুমাসের বিভিন্ন ফলের। কৃষিনির্ভর গ্রামবাংলা মেতে ওঠে উৎসব আমেজে। বৈচিত্র্যময় সমারোহে বসে বৈশাখী মেলা। এতে লোকগান, পুতুলনাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, সার্কাস ইত্যাদি আকর্ষণ করে সবাইকে।
ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে রুদ্রমূর্তির বৈশাখে প্রকৃতিতে থাকে ভিন্ন চেহারা। কালবৈশাখী আসে তীব্রবেগে। উড়িয়ে নিয়ে যায় অভাগীর জীর্ণ কুটির। উপকূলে বিপদ হয়ে আসে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস। গ্রীষ্মের তাপদাহে তটস্থ হয় মানুষ। এ সময় আবহমান গ্রামবাংলার ছোট নদী, খালবিল, ডোবা শুকিয়ে যায়। কৃষকরা পড়েন বিপাকে। আবার এ সময়ে প্রকৃতি সাজে নতুন করে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ একটু স্বস্তি পেতে আশ্রয় নেয় সবুজ প্রকৃতির শীতল ছায়ায়। একদিকে বৈশাখ খরতাপ ছড়ায়, অন্যদিকে প্রকৃতির প্রশান্তির শীতল ছোঁয়া দেয় পরম আনন্দ। বৈশাখ আসে নতুন করে সব গড়তে। শীর্ণ-জীর্ণতায় সবুজ সতেজ করে তুলতে। ‘নূতনের কেতন উড়ে’ কালবৈশাখীতে। একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে শুরু হয় নবজীবনের হিসাবনিকাশ। স্বপ্নমুখর বৈশাখের রং তাই একটু বেশিই উজ্জ্বল। প্রকৃতি সজীব সতেজ আর মানুষেরা প্রাণচঞ্চল।
সুহৃদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়