প্রতিবছরের মতো এবারও গত মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) উৎসাহ-উদ্দীপনা ও নানা আয়োজনে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন ডে-২৫ উদ্‌যাপন করা হয়েছে। একই সঙ্গে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রয়াত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইমামুল কবীর শান্ত’র ৭৩তম জন্মদিন উদ্‌যাপন করা হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তরায় ক্রিয়েটিভ দ্য আর্ট গ্যালারিতে প্রিয় প্রতিষ্ঠাতার প্রায় ১০০ রকমারি পোর্ট্রেট নিয়ে চিত্র প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ অনুষ্ঠান। পরদিন ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরে ‘ইমামুল কবীর শান্ত স্মৃতি মিউজিয়াম’ পরিদর্শন ও বিকেলে শ্যামলবাগ, উত্তরখানে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.

ইমামুল কবীর শান্ত বৃদ্ধাবাসন’ উদ্বোধন করা হয়। তৃতীয় দিন ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে বনানী কবরস্থানে সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষে কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পায়রা অবমুক্ত, শান্ত-মারিয়াম একাডেমির শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, জন্মদিনের কেক কাটা ও প্রিয় প্রতিষ্ঠাতার স্মরণে স্মৃতিচারণামূলক আলোচনা ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্‌যাপন করা হয়। ফিতা কেটে বিভিন্ন পর্বের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ও আলোচনায় অংশ নেন শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন ও সুন্দরবন কুরিয়ারের চেয়ারম্যান আহসানুল কবির, শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান চিত্রশিল্পী অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক, উপাচার্য অধ্যাপক মো. শাহ-ই-আলম, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক সেন্টার ও রিসার্চ সেন্টারের অধ্যাপক এম এ রশিদ ও সাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক।

আরও পড়ুনষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির প্রশ্নের ধরন, নম্বর বিভাজন ও মূল্যায়ন নির্দেশিকা প্রকাশ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য, ট্রেজারার, ডিন, রেজিস্ট্রার, শিক্ষক ও কর্মকর্তা এবং সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। দিবসটি উপলক্ষে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং মসজিদ ও মাদ্রাসায় পবিত্র কোরআন খতম করে দোয়া পরিচালনা ও বিভিন্ন দৈনিকে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • সুন্দরবনের বড় গেছো প্যাঁচা