বঙ্গোপসাগরের চিসখালী থেকে ট্রলারসহ ১৫ জেলেকে অপহরণের ১৭ দিন পর মাথাপিছু ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে নয়জনকে মুক্তি দিয়েছে বনদস্যু মজনু বাহিনীর সদস্যরা।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ এলাকায় তাদের জঙ্গল থেকে উপরে উঠিয়ে দিয়ে যায় বনদস্যু মজনু বাহিনীর সদস্যরা। জেলেরা বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভোরে বাড়িতে পৌঁছায়।

গত ২৭ জানুয়ারি ভোরে সুন্দরবনের ডাকাত আব্দুল আলমি ওরফে দয়াল বাহিনীর সদস্যরা সুন্দরবনের দুবলার চরে নিরীহ জেলেদের উপর আক্রমণ করে। এ সময় জেলেরা আত্মরক্ষার্থে ডাকাতদের প্রতিহতের চেষ্টা করে এবং একইসঙ্গে দুবলার চরের কোস্টগার্ড স্টেশনে সাহায্য চেয়ে ফোন করে। হাতাহাতির একপর্যায়ে জেলেরা একটি বন্দুক ও ৩৬ রাউন্ড গুলিসহ তিন বনদস্যুকে আটক করে। পরে অস্ত্র ও গুলিসহ তাদের সুন্দরবনের কোস্ট গার্ডের কাছে সোপর্দ করে। কিন্তু এ সময় ডাকাতরা সেখান থেকে ১৫ জেলেকে ধরে নিয়ে যায়।

আরো পড়ুন:

সুন্দরবনে বাঘের মুখ থেকে জীবিত উদ্ধারের লোমহর্ষক ঘটনা

হরিণের মাংস জব্দ, শিকারি চক্রের ৩ সদস্য শনাক্ত

মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা জেলেদের মধ্যে সাত জনের বাড়ি আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নে। একজনের বাড়ি শ্যামনগরে ও আরেক একজনের বাড়ি খুলনায়। 

ফিরে আসা জেলেরা হলেন, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আজাহারুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, হাফিজুর রহমান, শাহীনুর আলম, রাসেল, শাহাজান ঢালী, নুরে আলম এবং শ্যামনগর উপজেলার শাহ্ আলম। একজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

এদিকে, মুক্তিপণের টাকা দিতে না পারায় ছয়জন জেলে বনদস্যু মজনু বাহিনীর কাছে আটক রয়েছে। তাদের মধ্যে আশাশুনির চাকলা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, একই গ্রামের অরাফাত হোসেন ও শাহাজান গাজী।

অপহৃত চাকলা গ্রামের শাহাজান গাজীর স্ত্রী নাজমা খাতুন জানান, স্বামী বাড়ি আসছে খবর পেয়ে রাত ৩টা পর্যন্ত জেগে বেড়িবাঁধের উপর বসে ছিলেন। প্রতাপনগরের সাতজন আসলেও চাকলা গ্রামের তিনজন ফিরে আসেনি। এত টাকা তার পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব না।

প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি মেম্বর গোলাম রসুল জানান, মাথাপিছু ২ লাখ ৮৫ হাজার অর্থাৎ মোট প্রায় ২৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে অপহৃত ১৫ জেলের মধ্যে নয়জনকে মুক্তি দিয়েছে ডাকাতরা। বাকি ছয়জনের মধ্যে আমার গ্রামের তিনজন রয়েছে। মুক্তিপণের টাকা দিতে না পারায় তাদের এখনো জিম্মি করে রেখেছে ডাকাতরা।

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালী তার ইউনিয়নের সাতজন জেলে ফিরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাকিদের কাছে নৌকা থাকায় এবং মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ না হওয়ায় ডাকাতরা তাদের ছাড়েনি।
 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরবন স ন দরবন উপজ ল র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের বিএসএফের হাতে আটক ১৯ বাংলাদেশি মৎস্যজীবী

অবৈধভাবে ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশের অভিযোগে ১৯ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের উত্তাল নদীতে দীর্ঘক্ষণ ধাওয়া করে তাদের আটক করা হয়।  ধৃত মৎসজীবীরা বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলার পুরালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। মাছ ধরার ট্রলার ও জালসহ তাদেরকে আটক করা হয়। 

আরো পড়ুন:

কলকাতায় সম্মিলিত সেনা সম্মেলন উদ্বোধন নরেন্দ্র মোদির

অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি নরম হওয়ার দিন শেষ: ট্রাম্প

বিএসএফ জানায়, রবিবার সীমান্তের সুন্দরবন অংশে রুটিন টহল দেয়ার সময় গোসাবা রেঞ্জের বাঘমারি জঙ্গল এলাকায় বাংলাদেশি অবৈধ ট্রলারের উপস্থিতি নজরে আসে বিএসএফ জওয়ানদের। বিএসএফ জওয়ানদের পেট্রোল বোট ট্রলারটির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতেই ট্রলারটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। দ্রুততার সঙ্গে ট্রলারের পিছু ধাওয়া করা হয়। দীর্ঘক্ষণ ধাওয়া করে পরবর্তীতে পাকড়াও করা হয় বাংলাদেশি ট্রলারটিকে। অবৈধ অনুপ্রবেশ এর অভিযোগে আটক করা হয় এতে থাকা ১৯ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে। বাজেয়াপ্ত করা হয় ট্রলারটি।

বিএসএফ আরো জানায়, আটকের পর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগের বিপরীতে কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারেনি। ফলে জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাদের স্থানীয় সুন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আজ সোমবার তাদের আলিপুর আদালতে তোলা হবে।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ছুটে গিয়ে দেখি, একটি হরিণ ঝুলছে শিকারির ফাঁদে’
  • সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
  • সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের বিএসএফের হাতে আটক ১৯ বাংলাদেশি মৎস্যজীবী