Risingbd:
2025-11-03@13:49:49 GMT

কৃষকের আতঙ্ক ‘খোরশেদের জঙ্গল’

Published: 14th, February 2025 GMT

কৃষকের আতঙ্ক ‘খোরশেদের জঙ্গল’

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা মিতরা ইউনিয়নের তালিফাবাদ গ্রামের কৃষক মানিক মিয়া দক্ষিণ চক এলাকায় মুলার চাষ করেছেন। উন্নত জাতের বীজ বপন, সার প্রয়োগ ও আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও তিনি গত তিন বছর কাঙ্ক্ষিত ফলন পাচ্ছেন না। 

মানিক মিয়ার কৃষিজমির দক্ষিণ পাশে একই এলাকার খোরশদ মিয়ার একখণ্ড জমি রয়েছে। ওই জমিতে তিন বছর আগে খোরশেদ মিয়া চাষাবাদ করলেও এখন তিনি করেন না। ফলে কৃষিজমি জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। কৃষকেরা অনেক অনুরোধ করেও খোরশেদ মিয়াকে ওই জমিতে চাষাবাদে ফেরাতে পারেননি, জঙ্গলও পরিষ্কার করাতে পারেননি। 

খোরশেদ মিয়ার জমিতে জঙ্গল হওয়ায় শুধু মানিক মিয়া নন,  আশেপাশের কৃষকও বিগত তিন বছর হলো সঠিক ফলন পাচ্ছেন না। অনেক কৃষক এ কারণে ওই জঙ্গলের আশেপাশের জমিতে আর চাষ করছেন না। তালিফাবাদ গ্রামের দক্ষিণ চক এলাকার কৃষকদের কাছে ‘খোরশেদের জঙ্গল’ আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। 

খোরশেদের জঙ্গলের পশ্চিম পাশের জমির মালিক আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘‘চলতি মৌসুমে আমার জমিতে ফুলকপি চাষা করি। জঙ্গলের গাছপালা থাকায় অনেক ফসল খেকো পাখির বিচরণ হয়। পাখি আমার ফুলকপি অর্ধেক খেয়ে ফেলেছে। ফলে চালানের টাকাও ওঠে নাই। এই জঙ্গল থাকলে আগামী বছর আমি আর চাষ করবো না।’’ 

খোরশেদর জঙ্গলের দক্ষিণ পাশে আব্দুল মিয়া মুলা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গলে শেয়ালের আনাগোনা থাকায় মুলার ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। যখন খোরশেদ নিজে চাষ করতো তখন এমন সমস্যা হয়নি। এখন জমিটা চাষাবাদও করে না, জঙ্গলও পরিষ্কার করে না। জমি চাষ বা জঙ্গল পরিষ্কার করার  অনুরোধ করলেও পাত্তা দেয় না। ফলে আমরা পড়েছি বিপদে।’’

বাচ্চু মিয়া নামে এক কৃষক বলেন, ‘‘খোরশেদের ঘাড় ত্যাড়ামির ল্যাইগা ম্যালা কৃষকের জমির ফসল নষ্ট অইতাছে। তারে কিছু কইলে বড় বড় নেতা, উকিলের ডর দেহায়। তার জমি মন চাইলে চাষ করবো, না চাইলে করবো না। তাই বইলা জঙ্গল বানাই রাখবো এডা কেমন কতা? জঙ্গলের ল্যাইগা আমাগো জমির সর্বনাশ অইতাছে। কার কাছে বিচার দিমু, খোরশেদের বিচার করবো ক্যারা?’’

মানিকগঞ্জ কৃষি জমি সুরক্ষা কমিটির সমন্বয়কারী মো: নজরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ওই কৃষকের অঢেল সম্পদ ও পেশি শক্তি হওয়ায় এমন আচরণ করছেন। একজন কৃষক কখনো আরো দশজন কৃষকের সমস্যার কারণ হতে পারে না। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’’

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড.

রবীআহ নুর আহমেদ বলেন, ‘‘কৃষকদের কৃষিকাজ যেনো ব্যাহত না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ 

চন্দন//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ষ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সেই রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যা ঘটেছিল

২৩ আগস্ট রাতে আমাদের গ্রেপ্তার

সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ,  ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামন, এই লেখক শেখ আবদুল আজিজ ও আবদুস সামাদ আজাদ—এই ৬ জনকে ১৯৭৫ সালের ২৩ আগস্ট একসঙ্গে গ্রেপ্তার করে আমাদের পল্টনে কন্ট্রোল রুমে একটি ভাঙা বাড়িতে নেওয়া হয়। আমরা বসা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি সৈয়দ আহমদকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জনৈক কর্নেল ফারুককে অনুরোধ করেছিলেন।

কর্নেল ফারুক উত্তরে বলেছিলেন, ‘আপনাদের সবার ট্রায়াল এখানে হবে।’ আমাদের উদ্দেশ করে বলা হয়েছিল, ‘ইউ উইল হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইয়োর করাপশন।’ এ কথা শুনে আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম, এটা কোর্ট নয়, আদালত নয়, কীভাবে এখানে বিচার হবে? এই পরিস্থিতিতে আমাদের পরস্পরের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ইতিমধ্যে মেজর ডালিম এসে এইচ এম কামারুজ্জামানের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগল। কামরুজ্জামান ডালিমকে বলেছিল, ‘এ রকম তো কথা ছিল না!’ তারপর ডালিম চলে গেল। আমাদের সামনে আমাদের সহানুভূতিশীল পুলিশ কর্মচারীরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। কিছু সময় পর তারা এসে বলল, ‘আপনারা এই গাড়ি ও মাইক্রোবাসে তাড়াতাড়ি ওঠেন; সেন্ট্রাল জেলে যেতে হবে।’ আমরা গাড়িতে উঠলাম এবং ভাবলাম, বেঁচে গেলাম। সেন্ট্রাল জেলে প্রবেশ করলাম। আমাদের নতুন জেলে থাকার জায়গা করে দেওয়া হলো।

শেখ আবদুল আজিজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ