রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের খেলা শেষে স্লেজিং (কটু কথা) করাকে কেন্দ্র করে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক শিক্ষকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

আজ রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবাই গণিত বিভাগের। আহত শিক্ষক অধ্যাপক জাকির হোসেন মাথায় আঘাত পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আহত শিক্ষার্থীরা হলেন শহীদ আখতার, মানিক বাবু, সাইদ সিয়াম, মনির আহমেদ, আলী আহসান, সানাউল্লাহ, হাসিব মেজবাহ, অর্ণব, আল আরাফ, সাব্বির, লিখন, নাঈম, মুহিত প্রমুখ। তাঁদের মধ্যে শহীদ, মানিক, সাইদ, মনির, আরাফ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুরে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ ও গণিত বিভাগের মধ্যে খেলা ছিল। খেলায় গণিত বিভাগ তিন রানে জয়ী হয়। খেলা শেষে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সমর্থকেরা স্টেডিয়াম ত্যাগ করার সময় স্লেজিং করা নিয়ে গণিত বিভাগের সমর্থকদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান। পরে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সমর্থকেরা স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে গণিত বিভাগের সমর্থকের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। একপর্যায়ে তাঁরা স্টেডিয়ামের উত্তর পাশের ফটক ভেঙে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে ভেতরে ঢোকেন। দুই বিভাগের সমর্থকেরা মুখোমুখি অবস্থান নিলে কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা। এ সময় ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সমর্থকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে গণিত বিভাগের সমর্থকদের ওপর হামলা করেন। পরে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এতে গণিত বিভাগের অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে স্টেডিয়ামের মধ্যে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল। একপর্যায়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে, এতে সাত থেকে আটজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে এই মুহূর্তে সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। এ ধরনের খেলায় দুই গ্রুপের শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু খেলায় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষকদের পর্যাপ্ত উপস্থিতি ছিল না।

জানতে চাইলে গণিত বিভাগের সভাপতি আসাবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, স্টেডিয়াম থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। হামলায় তাঁদের এক শিক্ষকসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি শেখ শামসুল আরেফিন বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। প্রথমে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাঁদের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ইটপাটকেল ছোড়েন। তাঁদের হতাহতের সংখ্যা এই মুহূর্তে বলতে পারছেন না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণ ত ব ভ গ র

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।

ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র‍্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র‍্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।

যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।

আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র‍্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই শিশুর ঝগড়ায় জড়ালেন বড়রা, বড় ভাইয়ের হাতে খুন ছোট ভাই
  • রাজশাহীতে ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার