পুতুল সাজিয়া সুলতানা। নন্দিত কণ্ঠশিল্পী, লেখক ও উপস্থাপক। গতকাল প্রজেক্ট রেজা পুতুল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর নতুন একক গান ‘শীতের একলা রাতে’। এ আয়োজন, বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে।

যে ভাবনা থেকে ‘শীতের একলা রাতে’ গানের জন্ম সেই গল্পটা জানতে চাই...
জীবন বিষাদে ভরে গেলেই যে মানুষ একাকিত্ব বেছে নেয়, এটা ভাবা ভুল। জীবনকে দারুণভাবে অনুভব করার জন্যও অনেকে একা হয়ে যায়; সেই কথাটাই ‘শীতের একলা রাতে’ গানটিতে তুলে আনা হয়েছে। এ গানের জন্ম নিয়েও আলাদা কোনো গল্প নেই। বলতে শোনা যায়, কল্পনার জাল বুনতে বুনতেই গানটি লিখে ফেলা। এরপর সৈয়দ রেজা আলী আমার লেখা গীতিকথায় সুর বসিয়ে সংগীতায়োজনের মধ্য দিয়ে গানটি পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়েছে।    

সৈয়দ রেজা আলীর সঙ্গে জুটি বেঁধে বেশ কিছু একক গান তৈরি করেছেন। একক গানের বাইরে অ্যালবাম নিয়ে কখনও ভেবেছেন?  
একটি ইপি [এক্সটেন্টেড প্লে] অ্যালবাম করা যায় কিনা, তা নিয়ে দু’জনেই বেশ কিছুদিন ধরে ভাবছি। যেখানে ‘শীতের একলা রাতে’সহ আরও চারটি গান রাখতে চাই। গান যেহেতু তৈরি করাই আছে, সে ক্ষেত্রে এ বছরের যে কোনো সময় অ্যালবাম রিলিজ করতে পারি। তবে চূড়ান্ত ঘোষণাটা দিতে চাই আগে অ্যালবামের নামকরণ করার পর। 

সবসময় মেলোডি গানকে প্রাধান্য দিতে দেখা যায়। অ্যালবামের গান নিয়েও কি একই রকম পরিকল্পনা আছে?
শ্রোতাদের প্রত্যাশা তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত নানা ধরনের গান করেছি। কিন্তু যখন স্পষ্ট হয়েছে, শ্রোতারা আমার কণ্ঠে মেলোডি সুরের গান শুনতে বেশি পছন্দ করেন, তখন থেকে তাদের ভালোলাগাকেই প্রাধান্য দিয়ে আসছি। কারণ, শ্রোতাই আমার শক্তি-সাহস-অনুপ্রেরণার উৎস। 

স্টেজ শোর এ মৌসুমে অনেকে নানা প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু আপনাকে টিভি আয়োজনে বেশি দেখা যাচ্ছে, কারণ কী?
স্টেজ শো একটু কম করছি। যেখানে গান শুনিয়ে নিজে আনন্দ পাই, সে ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে পারফর্ম করি। অন্যদিকে টেলিভিশনের ব্যস্ততা সারাবছরই থাকে। সেখানে নানা ধরনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দর্শক-শ্রোতার ভালোবাসা কুড়ানোর মধ্যে অন্যরকম এক আনন্দ আছে। তাই টেলিভিশন আয়োজনগুলো কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারি না। 

এবার লেখক পুতুলের খবর জানতে চাই। আপনার ‘শিল্পীসত্তার ব্যবচ্ছেদ’ বইটি নিয়ে পাঠকদের প্রতিক্রিয়া কেমন?
‘শিল্পীসত্তার ব্যবচ্ছেদ’ নিয়ে পাঠকদের কী প্রতিক্রিয়া– তা এখনও জানার সুযোগ হয়নি। একুশে বইমেলার প্রথমার্ধ তো সেভাবে জমেনি। বাকি অর্ধেকটায় বইপ্রেমীদের সমাগম বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে হিসেবে দুই সপ্তাহ পর পাঠক প্রতিক্রিয়া কিছুটা বোঝা যাবে। সে যা-ই হোক, যশ-খ্যাতির মোহে লেখালেখি করি না বলে এসব নিয়ে ভাবছিও না। লেখালেখিটা নেশা, তাই লেখার মধ্য দিয়ে এমন কিছু তুলে ধরতে চেয়েছি, যা পাঠককে কিছুটা হলেও যাপিত জীবন, সমাজ-সংসার নিয়ে কিছুটা হলেও ভাবাবে। তাই শিল্পীজীবনের অভিজ্ঞতার আলোকেই ফিকশন লেখা শুরু করেছিলাম। এখন ‘শিল্পীসত্তার ব্যবচ্ছেদ’ বইটি যদি পাঠকদের কিছু আনন্দ দেয়, ভাবনার খোরাক জোগায়– তা হলেই খুঁজে পাব সৃষ্টির আনন্দ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ