শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
Published: 18th, February 2025 GMT
বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষকসংকট নিরসনের দাবিতে আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো কমপ্লিট শাটডাউন চলছে। তাঁরা শূন্য পদে শিক্ষক পদায়ন এবং যেসব শিক্ষককে অন্যায়ভাবে বদলি করা হয়েছে, তাঁদের আবার এই কলেজে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
এর আগে গতকাল সোমবার সকালে প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা দিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।
আজ সকালে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবন ও অধ্যক্ষের কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলছে। সেখানে ব্যানারে লেখা কমপ্লিট শাটডাউন। ক্যাম্পাসে পিনপতন নীরবতা। এমবিবিএস পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে, তত দিন আমাদের এই আন্দোলন চলবে।’
কলেজ প্রশাসন সূত্র জানায়, শিক্ষকসংকটে দেশের অন্যতম বৃহৎ চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজে শিক্ষাব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের ২৪৮টি পদের বিপরীতে কর্মরত মাত্র ৮৯ জন। ১৫৯টি পদেই নেই কোনো শিক্ষক।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, এমন অবস্থার মধ্যেই কিছু স্বার্থান্বেষী মহল শিক্ষার্থীদের ও সমন্বয়কদের নাম ভাঙিয়ে কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান এ কে এম আকবর কবীর, সহযোগী অধ্যাপক ও প্যাথলজি বিভাগের প্রধান প্রবীর কুমার সাহার বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানের বিপক্ষে থাকার মিথ্যা অভিযোগ দেয় মন্ত্রণালয়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত অক্টোবরে এ কে এম আকবর কবীরকে পটুয়াখালী ও প্রবীর কুমার সাহাকে সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়। এ ঘটনায় কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানালেও কাজে আসেনি। ফলে ওই দুটি বিভাগ এখন শিক্ষকশূন্য।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁরা শিক্ষকসংকট নিরসনে কলেজ প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। কিন্তু দাবি বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি নেই। এ জন্য আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও শিক্ষকসংকটের কথা স্বীকার করে কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়কে আমরা বারবার অবগত করেছি। আবারও আমরা নতুন করে কথা বলেছি। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
সরাইলে জমিজমার বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক, আটক ৭
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার পাকশিমুল বাজারে সরাইল-অরুয়াইল সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
পাকশিমুল গ্রামের নুরুল আমীন ও আকবর মিয়ার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় বাজারের একাধিক দোকান ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষ চলাকালে সরাইল-অরুয়াইল সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাকশিমুল বাজারের ২০ শতাংশ জমির দখল নিয়ে ২০১৬ সাল থেকে নুরুল আমীনের লোকজনের সঙ্গে আকবর মিয়ার লোকজনের বিরোধ চলে আসছিল। দুই মাস ধরে বিরোধ আরও বেড়ে যায়। এর জেরে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা নিয়ে সরাইল–অরুয়াইল সড়কের ওপর সংঘর্ষে জড়ান। সংঘর্ষ শুরু হলে বাজারের দোকানপাট ও সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ আহত হন। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুপুর ১২টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে আটক করা হয়।
নুরুল আমীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি আমাদের কেনা জায়গা। আকবর মিয়ার লোকজন অন্যায়ভাবে আমাদের জমি দখলে নিতে চায়। তারা আজ আমাদের ওপর দা-বল্লম নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমাদের লোকজন আত্মরক্ষার জন্য তাদের প্রতিহত করেছে। আমি চোখে আঘাত পেয়েছি। আমার দুই ভাই বল্লমের আঘাত পেয়েছে। গুরুতর আহত আমাদের আটজনকে জেলা সদরে চিকিৎসা দিচ্ছি।’
আকবর মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নুরুল আমীন ভূমি অফিসে চাকরি করেন। তিনি প্রতারণা করে জায়গাটি দখলে নিতে চান। তাঁর কাছে বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। আজ ওই জায়গা দখলে নিতে গেলে তাঁদের লোকজন বাধা দেন এবং তাঁর (আকবর) লোকজনের ওপর হামলা করেন। এতে নাঈম মিয়া (৩০) নামের এক যুবকসহ আহত সাতজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।