মঙ্গলবার ১৩তম দিনের মতো আন্দোলন করেছেন তারা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারীরা রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনের সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। নানা ঝড়-ঝাপটা সহ্য করেও তারা দাবি আদায়ের আন্দোলনে অনড়। বারবার তারা পুলিশের লাঠিপেটা ও জলকামানের অভিযানের শিকার হয়েছেন। দিনের বেলা তারা শাহবাগে জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন; রাতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাতে ঘুমান। আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনেক নারীও আছেন। স্বাভাবিক কারণেই অনেকে তাদের বাচ্চা নিয়ে আন্দোলন করছেন। অথচ সঠিক সময়ে নিয়োগ পেলে এতদিনে হয়তো তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকতেন।
তাদের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, একে দুর্ভাগ্যই বলতে হবে। এর আগে তিন ধাপে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে চূড়ান্ত শিক্ষক নিয়োগও সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। সমকালের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর চূড়ান্ত ফলে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন। যখন তাদের নিয়োগ হওয়ার কথা, তখনই নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে আদালত পুরো সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষকেরই নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন; একই সঙ্গে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাদের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে রায় দেন। সেই ৬ ফেব্রুয়ারি থেকেই তারা আন্দোলনরত।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর অবশ্য তাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে। মঙ্গলবার এ আপিলের ওপর আদালতে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও আদালত সেটি পিছিয়ে ২ মার্চ দিন ধার্য করেছেন। মঙ্গলবারই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা.
সমস্যা মূলত হয়েছে কোটা নিয়ে। আমরা দেখেছি, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকেই গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছিল। ২৪-এর জুলাইয়ের শুরু থেকে আন্দোলনটি তীব্র হলেও আওয়ামী লীগ সরকার কোটার বিষয়টি সমাধানের জন্য বারবার আদালতের দোহাই দিয়েছিল। আদালত শেষ পর্যন্ত ২৩ জুলাই কোটা সংস্কারের রায় দিয়েছিলেন বটে; ততদিনে গণহত্যা চালানোর কারণে পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট সরকারের পতন হয়। এখন যারা তৃতীয় দফা নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট করেছেন, তারা দাবি করছেন, ২৩ জুলাইয়ের রায়ের ভিত্তিতে এ ফল তৈরি করা হয়নি। আমার মতে, এই দাবি অযৌক্তিক এ কারণে যে, এই চাকরির জন্য ২০২৩ সালে প্রাথমিকের এ শিক্ষকদের চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। তখনকার নিয়ম অনুসারেই সবাই আবেদন করেন এবং বিভিন্ন দফায় উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্তভাবে তারা নির্বাচিত হন। তা ছাড়া তৃতীয় দফার এ নিয়োগ প্রথম দুই দফার অনুরূপ। সেখানে যখন সবার নিয়োগ হয়েছে, একই নিয়মে এই শিক্ষকরা নিয়োগ পাওয়ার দাবিদার।
মনে রাখতে হবে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে ২০১৯ সালের নিয়োগ বিধিমালার আলোকে, যেখানে কোটার বিষয়ও সরকারি অন্য চাকরি থেকে ভিন্ন। সব মিলিয়ে আজকে যারা আন্দোলনকারী, তাদের নিয়োগ দেওয়ার বিষয় ন্যায্য বলে মনে হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্যেও তা স্পষ্ট। অর্থাৎ আইনি প্রক্রিয়া মেনেই শিক্ষকদের নিয়োগের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার আরেকটু উদ্যোগী হলে তাদের নিয়োগ নিশ্চিত হতে পারে। ২ মার্চ আদালতে তারা ন্যায়বিচার পাবেন– এটাই প্রত্যাশা।
মাহফুজুর রহমান মানিক: জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, সমকাল
mahfuz.manik@gmail.com
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
এশিয়া কাপে আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। চ্যাম্পিয়নস লিগে মাঠে নামবে ম্যানচেস্টার সিটি, নাপোলি, বার্সেলোনা।
সিপিএল: কোয়ালিফায়ার-১ গায়ানা-সেন্ট লুসিয়া
সকাল ৬টা, স্টার স্পোর্টস ২
আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা
রাত ৮-৩০ মি., টি স্পোর্টস ও নাগরিক
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ
বেলা ৩টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১
কোপেনহেগেন-লেভারকুসেন
রাত ১০-৪৫ মি., সনি স্পোর্টস ২
ম্যানচেস্টার সিটি-নাপোলি
রাত ১টা, সনি স্পোর্টস ১
নিউক্যাসল-বার্সেলোনা
রাত ১টা, সনি স্পোর্টস ২
ফ্রাঙ্কফুর্ট-গালাতাসারাই
রাত ১টা, সনি স্পোর্টস ৫