Samakal:
2025-05-01@04:54:33 GMT

নিয়োগ পেয়েও বঞ্চনা!

Published: 18th, February 2025 GMT

নিয়োগ পেয়েও বঞ্চনা!

মঙ্গলবার ১৩তম দিনের মতো আন্দোলন করেছেন তারা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারীরা রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনের সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। নানা ঝড়-ঝাপটা সহ্য করেও তারা দাবি আদায়ের আন্দোলনে অনড়। বারবার তারা পুলিশের লাঠিপেটা ও জলকামানের অভিযানের শিকার হয়েছেন। দিনের বেলা তারা শাহবাগে জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন; রাতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাতে ঘুমান। আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনেক নারীও আছেন। স্বাভাবিক কারণেই অনেকে তাদের বাচ্চা নিয়ে আন্দোলন করছেন। অথচ সঠিক সময়ে নিয়োগ পেলে এতদিনে হয়তো তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকতেন। 

তাদের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, একে দুর্ভাগ্যই বলতে হবে। এর আগে তিন ধাপে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে চূড়ান্ত শিক্ষক নিয়োগও সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। সমকালের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর চূড়ান্ত ফলে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন। যখন তাদের নিয়োগ হওয়ার কথা, তখনই নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে আদালত পুরো সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষকেরই নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন; একই সঙ্গে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাদের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে রায় দেন। সেই ৬ ফেব্রুয়ারি থেকেই তারা আন্দোলনরত।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর অবশ্য তাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে। মঙ্গলবার এ আপিলের ওপর আদালতে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও আদালত সেটি পিছিয়ে ২ মার্চ দিন ধার্য করেছেন। মঙ্গলবারই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা.

বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানিয়েছেন, আইনি প্রক্রিয়া মেনে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি এও বলেছেন, আমরা আন্দোলনরত সহকারী শিক্ষকদের প্রতি সহানুভূতিশীল। 

সমস্যা মূলত হয়েছে কোটা নিয়ে। আমরা দেখেছি, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকেই গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছিল। ২৪-এর জুলাইয়ের শুরু থেকে আন্দোলনটি তীব্র হলেও আওয়ামী লীগ সরকার কোটার বিষয়টি সমাধানের জন্য বারবার আদালতের দোহাই দিয়েছিল। আদালত শেষ পর্যন্ত ২৩ জুলাই কোটা সংস্কারের রায় দিয়েছিলেন বটে; ততদিনে গণহত্যা চালানোর কারণে পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট সরকারের পতন হয়। এখন যারা তৃতীয় দফা নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট করেছেন, তারা দাবি করছেন, ২৩ জুলাইয়ের রায়ের ভিত্তিতে এ ফল তৈরি করা হয়নি। আমার মতে, এই দাবি অযৌক্তিক এ কারণে যে, এই চাকরির জন্য ২০২৩ সালে প্রাথমিকের এ শিক্ষকদের চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। তখনকার নিয়ম অনুসারেই সবাই আবেদন করেন এবং বিভিন্ন দফায় উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্তভাবে তারা নির্বাচিত হন। তা ছাড়া তৃতীয় দফার এ নিয়োগ প্রথম দুই দফার অনুরূপ। সেখানে যখন সবার নিয়োগ হয়েছে, একই নিয়মে এই শিক্ষকরা নিয়োগ পাওয়ার দাবিদার। 

মনে রাখতে হবে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে ২০১৯ সালের নিয়োগ বিধিমালার আলোকে, যেখানে কোটার বিষয়ও সরকারি অন্য চাকরি থেকে ভিন্ন। সব মিলিয়ে আজকে যারা আন্দোলনকারী, তাদের নিয়োগ দেওয়ার বিষয় ন্যায্য বলে মনে হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্যেও তা স্পষ্ট। অর্থাৎ আইনি প্রক্রিয়া মেনেই শিক্ষকদের নিয়োগের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার আরেকটু উদ্যোগী হলে তাদের নিয়োগ নিশ্চিত হতে পারে। ২ মার্চ আদালতে তারা ন্যায়বিচার পাবেন– এটাই প্রত্যাশা।

মাহফুজুর রহমান মানিক: জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, সমকাল
mahfuz.manik@gmail.com

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন সরক র সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ