Samakal:
2025-06-16@05:15:59 GMT

বসন্তে চুলের যত্ন

Published: 18th, February 2025 GMT

বসন্তে চুলের যত্ন

শীতের রুক্ষতা শেষে প্রকৃতিতে বসন্ত এসেছে। চুল পড়া, খুশকিসহ নানা ধরনের সমস্যা বেড়ে যায় শীতে। বসন্ত খানিকটা স্বস্তির শ্বাস ফেলার সময়। তাই বলে একেবারে চুলের যত্ন নেওয়া বন্ধ করলে হবে না। কেননা, এ সময় ভ্যাপসা গরমে চুলের বারোটা বাজে। তাছাড়া বাইরের দূষণ ও ধুলাবালি তো আছেই। প্রাণবন্ত ও সুন্দর চুলের জন্য যত্ন নিতে হবে নিয়মিত। নিয়মিত চুল আঁচড়ানোর পাশাপাশি চুলের ধরন বুঝে তেল মালিশ, শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।  
শোভন মেকওভারের কসমেটোলজিস্ট শোভন সাহা জানান, এ সময় নরমাল চুলের যত্নে ডিপ ক্লিনজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত। চুলে যেন রুক্ষভাব না আসে, এ জন্য কন্ডিশনার ময়েশ্চারাইজড হতে হবে। কন্ডিশনার ধোয়ার পর সিরাম দিয়ে চুল শুকিয়ে নিতে হবে। 
তিনি জানান, রঙিন চুলের যত্নে কালার প্রোটেক্টেড শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভালো। সেই সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে কালার প্রোটেক্টেড কন্ডিশনার। হিট প্রোটেক্টেড সিরাম দিয়ে চুল শুকিয়ে ফেলতে হবে। এ আবহাওয়ায় বেশি দেরি না করে এক দিন পরপর চুলে শ্যাম্পু করলে চুল ভালো থাকবে। যারা বাইরে কাজ করেন, ধুলাবালির মধ্যে দিয়ে যাওয়া-আসা করেন তাদের চুলে প্রতিদিন শ্যাম্পু করা উচিত। বাড়িতে সময় না পেলে এ সেবাগুলো পার্লার থেকেও নিতে পারেন। 
নির্জীব ও রুক্ষ চুলের যত্ন
শীত চলে গেলেও এ সময় চুলের সমস্যা রয়ে যায়। যত্নের অভাবে কারও কারও চুল অনেক রুক্ষ ও নির্জীব হয়ে পড়ে। আগা ফেটে যায়। গরম পড়তেই স্ক্যাল্প ঘামতে শুরু করে এবং চুলের গোড়া স্যাঁতসেঁতে ও ময়লা হয়ে যায়। এ জন্য নিয়ম মেনে চুলে শ্যাম্পু করতে হবে। চুল ধুতে ভারী কোনো শ্যাম্পু ব্যবহার না করাই ভালো। এতে চুলের স্বাভাবিক ময়েশ্চার নষ্ট হবে। খুশকি থাকলে শ্যাম্পু ব্যবহারের আগে মাথার ত্বকে কুসুম গরম তেল ম্যাসাজ করে নিতে পারেন। রূপবিশেষজ্ঞের ভাষ্যমতে, খুশকি তাড়াতে মেথি ও লেবুর রসও ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো আবার চুলকে রুক্ষ করে তোলে। তাই চুল ধোয়ার পর ভালো মানের কন্ডিশনার লাগালে উপকার পাবেন। 
নির্জীব চুলের যত্নে দুটি ডিমের কুসুমের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ মধু মিশিয়েও লাগাতে পারেন। এটি পুরো চুলে লাগিয়ে মিনিট পাঁচেক ম্যাসাজ করুন। এরপর শাওয়ার ক্যাপ পরে আধা ঘণ্টা রাখুন। শুকিয়ে গেলে চুল ধুয়ে নিন।   
কোন ধরনের হেয়ার প্যাক?
হেয়ার প্যাকের ঘরোয়া কনসেপ্টগুলো বিজ্ঞানসম্মত নয় বলে মনে করেন শোভন সাহা। তিনি মনে করেন, চুলের যত্নে বাজারে যেসব হেয়ার মাস্ক ও কন্ডিশনার পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করাই ভালো। কারণ হারবাল পণ্যগুলো বাস্তবে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারে না। তারপরও কেউ যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিছু প্যাক তৈরি করতে চান, সে ক্ষেত্রে রঙিন চুলের যত্নে মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। মধু চুলের কালারকে আরও উজ্জ্বল করবে। যাদের চুল স্বাভাবিক তারা চুলকে আরও সফট করার জন্য টকদই ব্যবহার করতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় এমন ধরনের হেয়ার মাস্ক বা প্যাক ব্যবহার করা, যেখানে চুলের জন্য উপকারী সব ধরনের প্রোটিন আছে।  
ডায়েটেও নজর রাখুন 
চুল ভালো রাখতে ডায়েটেও নজর রাখতে হবে। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, বায়োটিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড ইত্যাদি রাখতে হবে। এ জন্য তৈলাক্ত মাছ যেমন ইলিশ, কই, মলা, চাপিলা; সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যামন, টুনা ইত্যাদি খেতে হবে। এসব মাছ চুলকে ঘন ও কালো করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতে হবে। কেননা, ডিমে উৎকৃষ্ট পরিমাণে প্রোটিন ও বায়োটিন আছে। এ ছাড়াও আছে সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি-১২। তিসি, তিসির তেল, কুমড়ার বীজ, চিয়া বীজ, সয়াবিন ইত্যাদি খেতে হবে। ভেতর থেকে পুষ্টি জোগাতে আখরোট, চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম খেতে হবে। কেননা, বাদামে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৬ ফ্যাট থাকে। বিভিন্ন ধরনের সবজি যেমন ব্রকলি, ফুলকপি এবং রঙিন শাকসবজি যেমন পালংশাক, টমেটো, গাজর ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। সুন্দর চুলের জন্য প্রোটিন ও আয়রন দরকার। তাই স্বল্পমূল্যে প্রোটিন ও আয়রনের চাহিদা পূরণে ডাল খেতে পারেন। ডালে জিংক ও ফোলেটও রয়েছে। এ ছাড়া ছোলা, টক দই, টক ফল যেমন বরই, আমলকী, লেবু, কমলা, মাল্টা ইত্যাদি খেলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। v

মডেল: জান্নাত আরা
ছবি: কাব্য

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র করত চ ল র জন য চ ল র যত ন ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ভাই-ভাবি-ভাতিজার হামলায় আহত হয়ে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত মনির হোসেন উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি ছেলে আছে।

নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার (৫৫) স্ত্রী জুবায়দা বেগম (৪৫) একটি মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া বসতঘরে প্রবেশ করলে মনির আপত্তি জানান। এতে বাবুলের স্ত্রী উচ্চস্বরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মনির প্রতিবাদ করলে বাবুল মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৫) এগিয়ে এসে চাচা মনিরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাওন দা নিয়ে মনিরকে মারতে এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় বড় ভাই বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৩) ও ছেলে ইমন (২৬) এবং শাওন লাঠি ও কাঠ দিয়ে মনিরকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইট দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মনিরের মৃত্যু হয়।

হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সাতটার দিকে ইসিজি পরীক্ষায় কোনো স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।’

নিহত ব্যক্তির স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘বসতঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকবক করছিলেন। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে। স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে, “ওরে ধর বেশি করে বাইরা।” তখন বাকিরা লাঠি, কাঠ ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও স্বামীকে মারতে এসেছিল।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটির চুলার ধোঁয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি। নিরীহ ছেলেটাকে একা পেয়ে তারা সবাই মারধর করে মেরে ফেলেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাবুল মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা-পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম রকীব উর রাজা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সদর থানার কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ