ঝিনাইদহের শৈলকুপায় চরমপন্থী সংগঠন জাসদ গণবাহিনী হত্যাকাণ্ড ও সারা দেশে ক্রমাগত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি মিছিল শুরু হয়ে কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘বামপন্থী সন্ত্রাসবাদ, নিপাত যাক নিপাত যাক’, ‘লাল সন্ত্রাসের ঠিকানা, বাংলাদেশে হবে না’, ‘বামপন্থী জঙ্গিরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘রেড কার্ড রেড কার্ড, লাল সন্ত্রাসকে রেড কার্ড’, ‘লাল সন্ত্রাসীরা মানুষ মারে, ইন্টেরিম কি করে’, ‘লাল সন্ত্রাসের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী নাজমুল হাসানের সঞ্চালনায় নগর ও অঞ্চল বিভাগের শিক্ষার্থী সুয়াইব হাসান বলেন, “উগ্রবাদ এবং জঙ্গিবাদী লাল সন্ত্রাসীদের হাতে তিনজন মানুষ নির্মমভাবে খুন হয়েছে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর এ দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ আমরা কোন লাল সন্ত্রাসের হাতে তুলে দিতে পারি না। বরং এ সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ জারি থাকবে।”

তিনি বলেন, “আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কতিপয় শিক্ষার্থীরা লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিচ্ছে। এ হত্যাকাণ্ডে তাদের কোন ভূমিকা আছে কিনা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যাতে সেটা তদন্ত করে  দেখে। জাহাঙ্গীরনগরে এ সন্ত্রাসীদের আনাগোনা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।”

শাখা শিবিরের ছাত্রকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদ হাসান বলেন, “বর্তমানে আইন- শৃঙ্খলার অবনতি দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে কলুষিত করছে। ধর্ষণ, গুম-খুন বেড়েই চলছে। ঝিনাইদহে জাসদ নেতাদের তিনজনকে নির্মমভাবে হত্যা কেবল একটি সাধারণ হত্যাকাণ্ড নয়, বরং এটি আদর্শিক জায়গা থেকে সন্ত্রাসবাদ কায়েমের প্রচেষ্টা, যা তারা চীন, কিউবাসহ বিভিন্ন দেশে ঘটিয়েছে। সুতরাং ইন্টেরিম সরকারকে বলব, দেশের স্বার্থে এ লাল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিতে হবে।”

তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “ঝিনাইদহে সন্ত্রাসী সংগঠন জাসদ গণবাহিনী কর্তৃক হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর তারা আবার দায় স্বীকার করে অনলাইনে প্রকাশ করেছে। এ ধরনের কার্যক্রম দেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে। আমরা সংস্কার চাই, কিন্তু তার আগে চাই জীবনের নিরাপত্তা। অতিসত্বর আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি না হলে আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অফিস ঘেরাও করতে বাধ্য হব।”

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি)  ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর মাঠে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা হানিফ আলীসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা করেছে চরমপন্থী সংগঠন জাসদ গণবাহিনীর নেতা কালু। পরে দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটস অ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে তা প্রচার করেন তিনি।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঝ ন ইদহ

এছাড়াও পড়ুন:

এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো। আইএমএফের প্রভাবে বাজেটে স্থানীয় শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি হ্রাস পেয়েছে। ট্রাম্প সাহেবকে খুশি করার চেষ্টা ছিলো এই বাজেটে। 

আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আনু মুহাম্মদ বলেন, বাজেটে আয়ের জন্য ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মার্কিন কোম্পানির কাছে আমাদের যে ক্ষতিপূরণ তা আদায় করতে হবে। মাগুরছড়া ও টেংরাটিলায় গ্যাস বিস্ফোরণে সম্পদ ও প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংসে যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ আদায়ের কোন সরকারই চেষ্টা করেনি। এই ক্ষতিপূরণ আদায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ডিপি ওয়ার্লডের কাছে ছেড়ে দেওয়া তো শেখ হাসিনার প্রকল্প ছিল। ড. ইউনুস কেন তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইছেন? 

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের বাজেটে সেই পরিবর্তনের সূচনা ঘটানোর কথা নেই। সম্পদ সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের কাছ থেকে গিয়ে কিছু মানুষের কাছে পুঞ্জীভূত হয়। এবারের বাজেটেও সেই প্রবণতা দেখা গেছে।

তিনি আরও বলেন, এবারের বাজেটে প্রতারণা ও অস্বচ্ছতার যে চিত্র ফুটে উঠেছে, সেটা অব্যাহত থাকুক আমরা চাই না। আগামী ২২ জুন বাজেট অনুমোদনের আগে এর ত্রুটিগুলো দূর করতে হবে। বাজেটে জাতীয় সক্ষমতা সৃষ্টির ন্যূনতম উদ্যোগ নিতে হবে।

সভায় আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ার ড. গোলাম রসুল বলেন, সত্যিকার অর্থে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই বাজেটে তেমন কিছু নেই। কৃষিক্ষেত্রে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। কৃষিকে আমরা নানাভাবে আন্ডার ভ্যালু করে দিচ্ছি। স্বাস্থ্যখাতে এবার জনপ্রতি বাজেট বেড়েছে ২২ টাকা।

ট্রাম্পের পালটা শুল্ক বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার বুঝেও না বুঝার ভান করছে। এটা আমাদের বিশাল বিপদে ফেলবে। 
সভায় আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহা মির্জা,  চিকিৎসক ডা. হারুণ অর রশীদ, লেখক-গবেষক প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা ও মাহতাব উদ্দীন আহমেদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ আসামিকে বাদ দিতে হলফনামা, বাদী কৃষক দল নেতাকে শোকজ
  • এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ