সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় দেশসেরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হালিমাতুস সাদিয়া
Published: 23rd, February 2025 GMT
১৭তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী জজ হিসেবে দেশসেরা হয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হালিমাতুস সাদিয়া। আজ রোববার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শরীফ এ এম রেজা জাকের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
হালিমাতুস সাদিয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার লোহালিয়া গ্রামে।
এর আগে টানা চারবার বিজেএস পরীক্ষায় প্রথম হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৩তম বিজেএস পরীক্ষায় শিউলী নাহার, ১৪তম বিজেএসে সুমাইয়া নাসরিন, ১৫তম বিজেএসে আশিক উজ জামান এবং ১৬তম বিজেএস পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নুসরাত জাহান। তবে এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পেছনে ফেলে প্রথম হলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হালিমাতুস সাদিয়া।
বিজেএস নিয়োগ পরীক্ষায় আজ ১০২ জনকে সহকারী জজ মনোনীত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাঁদের মধ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থী সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। হালিমাতুস সাদিয়া ছাড়া অন্য দুজন হলেন ৪৭তম সুব্রত পোদ্দার ও ৫২তম নূর-ই-নিশাত। সুব্রত পোদ্দার আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের এবং নূর-ই-নিশাত ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
হালিমাতুস সাদিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই অর্জন শুধু আমার একার নয়; এটি আমার মা–বাবা, শিক্ষক, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের সমর্থনের ফল। সবচেয়ে আনন্দ লাগছে এই ভেবে যে আমি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্বপালনের জন্য আমি সবার কাছে দোয়া চাই।’
৫২তম স্থান অর্জন করা নূর-ই-নিশাত বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত। আমার সফলতার পেছনে মা–বাবা ও শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সবাই চান, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে। সেটা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হচ্ছে বিচারালয়। আমি সে রকম একটি চাকরিতে যোগদান করতে চলেছি। আমার প্রথম ব্রত হবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট থাকা।’
আরও পড়ুনবিভাগে প্রথম, সহকারী জজ নিয়োগেও প্রথম নুসরাত২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শূচিতা শরমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দারুণ একটি সুসংবাদ পেয়ে আমরা অভিভূত ও অত্যন্ত আনন্দিত। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমন অভূতপূর্ব ফলাফল করেছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের শিক্ষার্থীরা যেকোনো জায়গায় যোগ্যতার প্রমাণ রাখতে সক্ষম। তারই উদাহরণ সহকারী জজে চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করা।’ ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই অসাধারণ সাফল্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল করার অনুপ্রেরণা দেবে। নবীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এমন কৃতিত্বে শিক্ষার্থীরা আনন্দিত-উচ্ছ্বসিত। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন য় গ পর ক ষ য় আনন দ ত ব জ এস বর ষ র প রথম সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষ, আদেশ ৬ আগস্ট
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর আদেশের জন্য আগামী ৬ আগস্ট তারিখ ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ আজ বুধবার শুনানি শেষে আদেশের এই তারিখ ধার্য করেন।
গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য ১ জুলাই তারিখ ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার শুনানি হয়।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়; পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারীপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন। এ ছাড়া ইন্টারভেনার (ব্যাখ্যাকারী) হিসেবে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর আজ শুনানি শেষ হলো।