১৭তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী জজ হিসেবে দেশসেরা হয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হালিমাতুস সাদিয়া। আজ রোববার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শরীফ এ এম রেজা জাকের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।

হালিমাতুস সাদিয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার লোহালিয়া গ্রামে।

এর আগে টানা চারবার বিজেএস পরীক্ষায় প্রথম হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৩তম বিজেএস পরীক্ষায় শিউলী নাহার, ১৪তম বিজেএসে সুমাইয়া নাসরিন, ১৫তম বিজেএসে আশিক উজ জামান এবং ১৬তম বিজেএস পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নুসরাত জাহান। তবে এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পেছনে ফেলে প্রথম হলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হালিমাতুস সাদিয়া।

বিজেএস নিয়োগ পরীক্ষায় আজ ১০২ জনকে সহকারী জজ মনোনীত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাঁদের মধ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থী সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। হালিমাতুস সাদিয়া ছাড়া অন্য দুজন হলেন ৪৭তম সুব্রত পোদ্দার ও ৫২তম নূর-ই-নিশাত। সুব্রত পোদ্দার আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের এবং নূর-ই-নিশাত ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

হালিমাতুস সাদিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই অর্জন শুধু আমার একার নয়; এটি আমার মা–বাবা, শিক্ষক, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের সমর্থনের ফল। সবচেয়ে আনন্দ লাগছে এই ভেবে যে আমি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্বপালনের জন্য আমি সবার কাছে দোয়া চাই।’

৫২তম স্থান অর্জন করা নূর-ই-নিশাত বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত। আমার সফলতার পেছনে মা–বাবা ও শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সবাই চান, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে। সেটা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হচ্ছে বিচারালয়। আমি সে রকম একটি চাকরিতে যোগদান করতে চলেছি। আমার প্রথম ব্রত হবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট থাকা।’

আরও পড়ুনবিভাগে প্রথম, সহকারী জজ নিয়োগেও প্রথম নুসরাত২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শূচিতা শরমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দারুণ একটি সুসংবাদ পেয়ে আমরা অভিভূত ও অত্যন্ত আনন্দিত। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমন অভূতপূর্ব ফলাফল করেছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের শিক্ষার্থীরা যেকোনো জায়গায় যোগ্যতার প্রমাণ রাখতে সক্ষম। তারই উদাহরণ সহকারী জজে চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করা।’ ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই অসাধারণ সাফল্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল করার অনুপ্রেরণা দেবে। নবীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এমন কৃতিত্বে শিক্ষার্থীরা আনন্দিত-উচ্ছ্বসিত। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো.

সিয়াম বলেন, ‘এই ফলাফলে আমরা আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন য় গ পর ক ষ য় আনন দ ত ব জ এস বর ষ র প রথম সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন

সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

বুধবার সকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

এর ফলে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সুবিধা পাবেন। রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইব্রাহিম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকারি চাকরিজীবীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্ট। সংক্ষুব্ধ চাকরিজীবীদের এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

পরিপত্রে যা বলা হয়েছে
২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, একই পদে কর্মরত কোনো সরকারি কর্মচারী দুই বা তার চেয়ে বেশি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে থাকলে নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী তিনি উচ্চতর গ্রেড পাবেন না। তবে ইতোমধ্যে একটিমাত্র টাইম স্কেল অথবা সিলেকশন গ্রেড পেলে নতুন স্কেলে শুধু একটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন।

পরিপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মচারীদের প্রদত্ত এসব আর্থিক সুবিধা কোনোক্রমেই ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বরের আগে দেওয়া হবে না। পরবর্তী সময়ে পরিপত্রের এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সংক্ষুব্ধ সরকারি চাকরিজীবীরা।

মূল পে-স্কেলে যা বলা আছে
সরকারি চাকরিতে নিচের স্তরের কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ সীমিত। এসব পদোন্নতিবঞ্চিতদের আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার বহুল আলোচিত টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের পুরোনো প্রথা বাতিল করে। একইসঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড প্রথা প্রবর্তন করে। নতুন স্কেল অনুযায়ী, কোনো কর্মচারী একই পদে ১০ বছর চাকরি করার পর পদোন্নতি না পেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন। এরমধ্যে একটি পাবেন চাকরির ১০ বছর পর (১১তম বছরে)। আর অপরটি ১৬ বছর পর অর্থাৎ ১৭তম বছরে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মূল পে-স্কেলে এ বিধান করা হলেও এ সুবিধা কীভাবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কোনো দিক-নির্দেশনা ছিল না। এ প্রেক্ষাপটে মূল পে-স্কেলে উল্লেখিত নিয়ম কার্যকর করতে স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। মূল পে-স্কেল কার্যকর হওয়ার ৩ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে এটি জারি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন