এ সময় সর্দি–কাশি থেকে বাঁচতে কী করবেন
Published: 24th, February 2025 GMT
শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম—সব ঋতুতেই এখন সর্দির সৃষ্টি হয়। অনেক সময় সর্দি লাগলে কানে ব্যথা করে এবং নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। ফলে অনেক সমস্যা, যেমন সাইনোসাইটিস হতে পারে। শীত ও বসন্তে কাশির প্রকোপও বেড়ে যায়। ফলে বুকে ও গলায় ব্যথা দেখা দেয়। অতিরিক্ত কাশিতে ঘুমের ব্যঘাত ঘটে। অনেক সময় কাশির সঙ্গে কফ ও রক্তও বের হতে পারে।
সংক্রমণ ছড়ায় কীভাবে
সাধারণ সর্দি–কাশি মূলত ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে হয়। সাধারণত রাইনোভাইরাস ও অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাসগুলোর সংক্রমণ থেকে হয় এটি। সংক্রমণ মূলত যেসব উপায়ে ছড়ায় তা হলো, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়ানো ভাইরাসে, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে, দূষিত বায়ুতে, দূষিত জায়গায় হাত দিয়ে পরে সেই হাত নাক বা মুখে লাগালে। ভাইরাসের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও হতে পারে।
আরও পড়ুনশিশুর ঠান্ডা-সর্দিতে নাজাল স্প্রে বা ড্রপ ব্যবহারে ক্ষতির আশঙ্কা কত?০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪লক্ষণ
নাক দিয়ে পানি পড়া।
নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
হাঁচি, বিশেষ করে সকালে।
গলাব্যথা বা গলা শুকিয়ে যাওয়া।
চোখ লাল হয়ে যাওয়া বা পানি ঝরা।
ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করা।
চিকিৎসা ও প্রতিকার
সাধারণ ঠান্ডা ও কাশি সাধারণত ৭-১০ দিনে ভালো হয়ে যায়। তবে আরাম পেতে কিছু ঘরোয়া ওষুধের চিকিৎসা করা যেতে পারে, যেমন:
ঘরোয়া প্রতিকার: গরম পানি ও লবণ দিয়ে গার্গল গলায় ব্যথা ও জীবাণুর সংক্রমণ কমায়। মধু ও আদার রস কাশির আরামদায়ক প্রতিকার। তুলসী ও আদা–চা সর্দি–কাশিতে কার্যকর।
ওষুধের ব্যবহার: জ্বর ও ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল, নাক বন্ধ ও সর্দি কমাতে অ্যান্টিহিস্টামিন, শুকনা ও কফযুক্ত কাশির ধরন অনুযায়ী কাশির সিরাপ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি ও জিঙ্ক এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে।
আরও পড়ুনদিনে গরম, শেষ রাতে ঠান্ডা, এমন সময় যা মনে রাখবেন১১ নভেম্বর ২০২৪সতর্কতা ও কখন চিকিৎসক দেখাবেন
জ্বর ১০২ ডিগ্রি বা এর বেশি হলে ও তিন দিনের বেশি থাকলে।
শ্বাসকষ্ট বা বুকব্যথা অনুভব করলে।
ঘন হলুদ বা সবুজ কফ বের হলে।
শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী কাশিতে।
যদি উপসর্গ ৭-১০ দিনের বেশি স্থায়ী হয়, শ্বাসকষ্ট বা উচ্চমাত্রায় জ্বর দেখা দেয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
প্রতিরোধ
হাত পরিষ্কার রাখুন, সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে দূরে থাকুন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পুষ্টিকর খাবার খান।
হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা কনুই দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন।
অ্যালার্জিজাতীয় জিনিস থেকে দূরে থাকুন।
ডা.
এম আলমগীর চৌধুরী, অধ্যাপক, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক রমণ
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।