চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ মানেই যেন বৃষ্টি। মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে। এ নিয়ে চলতি আসরসহ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির তিন আসরে ৮ ম্যাচ খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার ৪ ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে।

বৃষ্টির এই বিঘ্নের কারণে অস্ট্রেলিয়া ২০১৩২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কোন ম্যাচ জিততে পারেনি। এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৫১ রান তাড়া করে সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে গেলেও রাওয়ালপিন্ডির বৃষ্টি টেনে ধরেছে অজিদের।

২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। অস্ট্রেলিয়া ওই ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করে ২৪৩ রান করেছিল। নিউজিল্যান্ড ৫১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ম্যাচ আর মাঠে গড়ায়নি। ওই আসরের বাকি দুই ম্যাচে ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের স্বাদ পায় অজিরা।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গত  আসর অর্থাৎ ২০১৭ সালের আসরে বৃষ্টি আরও নির্মম আচরণ করেছে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। সেবার বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচই পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

গ্রুপের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের ২৯২ রানের লক্ষ্যে নেমে ৫৩ রানে ৩ উইকেট হারায় অজিরা। এরপর বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পরের ম্যাচে বাংলাদেশ অজিদের বিপক্ষে মাত্র ১৮২ রান করে। অস্ট্রেলিয়া ১ উইকেটে ৮৩ রান করার পর বৃষ্টি নামলে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। গ্রুপের অন্য ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ এক জয় ও পরিত্যক্ত ম্যাচের এক পয়েন্ট থেকে চলে যায় সেমিফাইনালে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

১৪ বছর বয়সী বৈভবের বিশ্ব রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে উড়ে গেল গুজরাট

হারলে রাজস্থান রয়্যালসকে ছিটকে পড়তে হবে প্লে অফে ওঠার দৌড় থেকে। এমন ম্যাচে প্রতিপক্ষ আগে ব্যাটিংয়ে নেমে তুলেছে ৪ উইকেটে ২০৯ রান। রাজস্থানের ওপর চাপটা তাই অনেক বেশি ছিল। কিন্তু সেটা নাটকের প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় অর্থাৎ শেষ পর্ব যে এতটা জমজমাট হবে, তা কে জানত! ১৪ বছর বয়সী এক ছেলের ব্যাটের স্রেফ আগুন ঝরল, সেই আগুনের উত্তাপে রাজস্থানের ওপর জেঁকে বসা সব চাপ–টাপও যেন উবে গেল! কেউ কেউ বলছেন, বৈভব সূর্যবংশীর ব্যাটে আইপিএলের ইতিহাসেই অন্যতম অবিশ্বাস্য এক ইনিংসের জন্ম হলো!

১১ ছক্কা ও ৭ চারে ৩৮ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলা বৈভব ১১.৫ ওভারে যখন গুজরাট টাইটানসের পেসার প্রসিদ্ধ কৃঞ্চার বলে আউট হলেন, জয়ের জন্য ৪১ বলে রাজস্থানের প্রয়োজন ৫২ রান। হাতে ৯ উইকেট। রানের পাহাড় ডিঙিয়ে জয় তুলে আনার খুব কঠিন কাজটা মাত্র ১৪ বছর ৩২ দিন বয়সী বৈভবের ব্যাটে রাজস্থানের জন্য ততক্ষণে সহজ হয়ে এসেছে। যশস্বী জয়সোয়াল ও রিয়ান পরাগের তৃতীয় উইকেটে ২০ বলে ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে রাজস্থান শেষ পর্যন্ত জিতেছে ৮ উইকেটে, ২৫ বল হাতে রেখে।

দুই শর বেশি রান তাড়া করতে নেমে ৪ ওভারের বেশি বল হাতে রেখে রাজস্থানের এই দুর্দান্ত জয়ের শিরোনাম হতে পারে একটাই—বৈভবের আগুনে পুড়ল গুজরাট। তা নয় তো কী! ইনিংসের তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে খুলেছেন নিজের রানের খাতা। ইশান্ত শর্মার করা চতুর্থ ওভারে ওঠা ২৮ রানের ২৬ এসেছে বৈভবের ব্যাট থেকে। ফিফটি তুলেছেন ১৭ বলে, যেটা আইপিএলের এ মৌসুমে দ্রুততমও।

১০ম ওভারে গুজরাট পেসার করিম জানাতের কাছ থেকে একাই তুলেছেন ৩০ রান। পরের ওভারেই দ্বিতীয় বলে রশিদ খানকে ছক্কা মেরে আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি তুলে নেন বৈভব। ৩৫ বলে ১০০! আইপিএলে বৈভবের চেয়ে কম বলে সেঞ্চুরি আছে শুধু ক্রিস গেইলের। ২০১৩ সালে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ৩০ বলে। তারপর এই এক যুগে গেইলের মতো বিস্ফোরক ইনিংসের কাছাকাছি কেউ যেতে পারেননি, যেটা আজ পারলেন কি না এক ১৪ বছর বয়সী!

শুধু কী তাই, এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে নিজের তৃতীয় খেলতে নামা বৈভব এখন আইপিএলের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান। ২০০৯ সালে ১৯ বছর ২৫৩ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করা মনীশ পাণ্ডের রেকর্ডটি এখন বৈভবের। ছেলেদের টি–টোয়েন্টিতে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে সেঞ্চুরির রেকর্ডও এখন তার। ২০১৩ সালে সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে ১৮ বছর ১১৮ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করা ভিজয় জোলের রেকর্ডটি এখন বৈভবের।

গুজরাটের বোলারদের জন্য আজকের ম্যাচটি স্রেফ ভুলে যাওয়ার। ওপেনিং জুটিতেই ১৬৬ রান তুলেছেন বৈভব ও জয়সোয়াল। ৪০ বলে ৭০ রানে অপরাজিত জয়সোয়াল শেষ পর্যন্ত ছিলেন। ২ ছক্কা ও ৯ চারে ১৭৫ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করা জয়সোয়ালকেও বৈভবের সামনে কেমন ম্লান লেগেছে। কারণ বৈভবের ইনিংসের স্ট্রাইকরেট যে ২৬৫.৭৮! ভারতের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ক্রিকেটার যুবরাজ সিং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইয়ান বিশপের সেই কথাটা স্মরণ করে তাই লিখেছেন, ‘বৈভব সূর্যবংশী—রিমেম্বার দ্য নেম!’পরাগ অপরাজিত ছিলেন ১৫ বলে ৩২ রানে।

জয়পুরের মানসিংহ স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা গুজরাটের হয়ে ৫০ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক শুবমান গিল। ২৬ বলে ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন জস বাটলার। তবে বৈভব যে ইনিংস খেলেছে তাতে আজ বাকি সবাই যেন ম্লান। প্রশংসা এসেছে তার প্রতিপক্ষ শিবির থেকেও। গুজরাট অধিনায়ক শুবমান যেমন বলেছেন, ‘দিনটা সূর্যবংশীর ছিল। আইপিএলে আমার দেখা অন্যতম সেরা ইনিংস।’

বিস্তারিত আসছে...।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন
  • ১৪ বছর বয়সী বৈভবের বিশ্ব রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে উড়ে গেল গুজরাট