ছিনতাইকারী হলেই কি পিটিয়ে মারা যাবে
Published: 26th, February 2025 GMT
বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেগুলোতে ছিনতাইয়ের অভিযোগে ধরা পড়া ব্যক্তিদের নির্মমভাবে পেটানোর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। প্রচুর মানুষ এতে উল্লাস করছেন এবং মারধরে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যাও সেখানে কম নয়। সেসব ভিডিওর নিচে যেসব মন্তব্য আছে তাতেও প্রচুর মানুষের উল্লাস লক্ষণীয়। অর্থাৎ, একটা বড় অংশের মানুষ এই ঘটনায় খুশি এবং তাঁরা মনে করেন ছিনতাইকারীদের এভাবেই শাস্তি দেওয়া উচিত। এটাই ‘উচিত’ বিচার।
এর আগে কয়েক দিন ধরে রাজধানীসহ সারা দেশে ছিনতাই ও ডাকাতির ভিডিও আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখতে পেয়েছি। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষ ভীষণ উদ্বিগ্ন। সারা দেশে এমন ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নারীরা সন্ধ্যার পর পারতপক্ষে ঘর থেকে বের হতে চাইছেন না।
যদিও আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের থেকে অনেক উন্নত হয়েছে এবং এটা আরও উন্নত হতে থাকবে।’ হয়তো তাঁর কথাই ঠিক। মানুষের উদ্বিগ্ন হওয়ারও হয়তো কারণ নেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো মানুষ এই কথা অবাস্তব বলে ধরে নিয়ে তাঁর ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। মানুষ ঠিকই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কদিন আগে চলন্ত বাসে তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের অদূরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভুয়া পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে ডাকাতি হয়েছে। এমনকি গাজীপুর জেলায় প্রকাশ্যে ২০–২৫ জন মানুষ রামদা নিয়ে বাজারে স্লোগান দিতে দিতে চাঁদাবাজি করছে, এমন দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এসব প্রকাশ্য চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা আমরা জানি না। ফলে, উদ্বেগ কমছে না।
এরপরও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যখন দাবি করেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ‘আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে’ তখন আর কীই-বা বলার থাকতে পারে! যদিও ‘গত ছয় মাসে ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনায় মামলা হয়েছে ১ হাজার ১৪৫টি, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি।’ (‘অপরাধীরা বেপরোয়া, আতঙ্কে মানুষ’, প্রথম আলো, ২৫ ফেব্রুয়ারি) এই পরিসংখ্যান পুলিশের।
আমরা জানি, ঝামেলার ভয়ে ছোটখাটো চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ জানাতে সাধারণ লোক অনেক সময় থানায় যায় না। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্রটি এর চেয়ে অনেক খারাপ হওয়ারই কথা।
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার জন্য বিএনপিকে দায়ী করত, সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও খারাপ পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন। অনেকেই দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইতে পারে সেটা অস্বাভাবিকও নয়। নানা লোকের নানা স্বার্থ থাকবে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাজই হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ঠিক রাখা। কাউকে দোষ দিয়ে নিজের দায়মুক্তির সুযোগ নেই এখানে।
আরও পড়ুনবাস ডাকাতিতে পড়ার অভিজ্ঞতা ও কিছু সমাধান২০ ঘণ্টা আগেস্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাত তিনটায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে চেয়েছেন, তাঁরা শুধু দিনেই কাজ করেন না, রাতেও কাজ করেন। কিন্তু মানুষ ‘কাজ’ দেখার চেয়ে কাজের ফলাফল দেখতে বেশি আগ্রহী। আমাদের দেশে দায়িত্বপ্রাপ্তরা সাধারণত নিজেদের কাজ নিয়ে সর্বদা খুশি থাকেন, দায় নেওয়ার সংস্কৃতি এখানে গড়ে ওঠেনি। ফলে এসব গালভরা কথার চর্চাই যে চলতে থাকবে ভবিষ্যতে—এমনটা মনে করাই সংগত। যাহোক, দেশের মানুষ এ মুহূর্তে নিরাপত্তা নিয়ে ভীষণ শঙ্কায় আছে, এটা হলো বাস্তবতা।
এমন বাস্তবতায় মানুষের মধ্যে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। জায়গায় জায়গায় ‘মব’ তৈরি হয় এবং ‘গণপিটুনির’ মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। তখন দেখা যায় অনেক নিরীহ মানুষও আক্রান্ত হন। ২০১৯ সালের ১৮ থেকে ২০ জুলাই ছেলেধরা সন্দেহে তিনজন পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার মধ্যে রাজধানীর বাড্ডায় তাসলিমা বেগম রেনু (৪০) নামের এক নারীকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। তখনো দেশের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাসংকট তৈরি হয়েছিল এবং সারা দেশে ছেলেধরা আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। এবারের আতঙ্কের নাম ‘ছিনতাইকারী’।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের পুলিশের দুর্বলতার সুযোগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ে—এটা সত্য। কিন্তু প্রায় সাত মাস পার হওয়ার পরও পরিস্থিতি ঠিক না হওয়াটা কোনো কাজের কথা নয়। ৫ আগস্টের পর থানা থেকে লুট হওয়া সব অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি। এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্র নিয়ে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড জড়িত হচ্ছে অপরাধীরা। পুলিশের উচিত হবে এই অস্ত্র উদ্ধারে গুরুত্ব দেওয়া। থানা লুট করে কারা অস্ত্র নিয়েছে, সেটা বের করতে তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য নিতে হবে। এতসংখ্যক অস্ত্র অপরাধীদের হাতে রেখে দেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা কঠিন হবে।
সে ক্ষেত্রে পুলিশ যেন ঠিকঠাক কাজ করে, আইনের ফাঁক গলে যাতে প্রকৃত অপরাধীরা ছাড়া পেতে না পারে, আমাদের সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশের জবাবদিহি নিশ্চিত করার পাশাপাশি আইনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সেটাই হবে টেকসই ব্যবস্থা। সেটা না করে রাস্তায় ছিনতাইকারীদের পিটিয়ে মেরে ফেলা কোনো সমাধান হতে পারে না।আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর যখন মানুষের আস্থা কমে যায়, তখনই দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়। এমন অবস্থার সুযোগ নিয়ে শত্রুতার জেরে রাস্তায় ‘মব’ তৈরি করা সহজ হয় এবং অনেকেই সেই সুযোগ নেন।
প্রশ্ন হলো—ছিনতাইকারী বা অপরাধী হলেই কি এভাবে মেরে ফেলা যাবে অথবা পেটানো যাবে? এককথায় এর উত্তর—‘না’। কোনো অবস্থাতেই সাধারণ মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। বিচারের জন্য দেশে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ আছে। আইন প্রয়োগ করার জন্যও সংস্থা আছে। কাজগুলো তাদের। কোনোভাবেই সাধারণ মানুষের নয়। অপরাধী ধরা পড়লে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে, কোনো অবস্থাতেই পেটানো বা পিটিয়ে মেরে ফেলা যাবে না।
অনেকেই হয়তো বলবেন পুলিশ ঘুষ খেয়ে অপরাধীদের ছেড়ে দেয়। আইনের ফাঁকফোকর গলে বাইরে এসে অপরাধীরা আবার একই অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। কথাগুলো অনেক ক্ষেত্রেই সত্য।
সে ক্ষেত্রে পুলিশ যেন ঠিকঠাক কাজ করে, আইনের ফাঁক গলে যাতে প্রকৃত অপরাধীরা ছাড়া পেতে না পারে, আমাদের সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশের জবাবদিহি নিশ্চিত করার পাশাপাশি আইনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সেটাই হবে টেকসই ব্যবস্থা। সেটা না করে রাস্তায় ছিনতাইকারীদের পিটিয়ে মেরে ফেলা কোনো সমাধান হতে পারে না। সভ্য রাষ্ট্র হতে হলে আগে নিজেদের সভ্য হতে হবে। আত্মরক্ষার জন্য যতটুকু বল প্রয়োগ করা উচিত ততটুকু করা মানুষের অধিকার। কিন্তু অপরাধীদের বেঁধে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মেরে ফেলা বা মব তৈরি করা বন্ধ করতে হবে।
মেহেদি রাসেল কবি ও প্রাবন্ধিক
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স থ ত র ই ব যবস থ আম দ র স অপর ধ র র জন য ক জ কর হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
অজ্ঞাতনামা লাশ আর কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে, শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় জনমনে সন্দেহ: এমএসএফ
চলতি অক্টোবর মাসে দেশে অজ্ঞাতনামা লাশ এবং কারা হেফাজতে মৃত্যু সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় বেশ খানিকটা বেড়েছে। এ তথ্য তুলে ধরেছে মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। প্রতিষ্ঠানটির অক্টোবর মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এমএসএফ বলেছে, এসব ঘটনায় জনজীবনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জোরালোভাবে সবার সামনে প্রতিফলিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ দুই ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জনমনে সন্দেহ আছে।
এমএসএফ প্রতি মাসে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে। আজ শুক্রবার অক্টোবর মাসের প্রতিবেদন গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং নিজস্ব তথ্যানুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করে এমএসএফ মানবাধিকার প্রতিবেদন তৈরি করে।
বেড়েছে অজ্ঞাতনামা লাশএমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসে মোট ৬৬টি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়; বরং নাগরিক জীবনে নিরাপত্তাহীনতার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত মাসে (সেপ্টেম্বর) এর সংখ্যা ছিল ৫২। এসব অজ্ঞাতনামা লাশের বেশির ভাগই নদী বা ডোবায় ভাসমান, মহাসড়ক বা সড়কের পাশে, সেতুর নিচে, রেললাইনের পাশে, ফসলি জমিতে ও পরিত্যক্ত স্থানে পাওয়া যায়। অল্পসংখ্যক মৃতদেহ গলাকাটা, বস্তাবন্দী ও রক্তাক্ত বা শরীরে আঘাতের চিহ্নসংবলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
এমএসএফ বলেছে, অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের ঘটনা বেড়েই চলেছে এবং তা জনজীবনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জোরালোভাবে সবার সামনে প্রতিফলিত হচ্ছে। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় উদ্ধারে অপারগতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১টি শিশু, ১ কিশোর, ১১ জন নারী ও ৫৩ জন পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ বছর বয়সী শিশু; ১৫ বছর বয়সী কিশোর; ২০ থেকে ৩০ বয়সী ১৫ জন পুরুষ ও ২ জন নারী; ৩১ থেকে ৪০ বয়সী ১৯ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী; ৪১ থেকে ৫০ বয়সী ১ নারী ও ৫ জন পুরুষ এবং ৫০ বছর বয়সের বেশি ১১ জন পুরুষ ও ১ নারী রয়েছেন। এর মধ্যে অজ্ঞাতনামা তিনজনের বয়স শনাক্ত করা যায়নি।
এমএসএফ বলেছে, শুধু অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না; বরং পরিচয় জানার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। পরিচয় উদ্ধার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য।
কারা হেফাজতে মৃত্যু বাড়ছেইএমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে কারা হেফাজতে মোট ১৩ জন বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। গত মাসে এ সংখ্যা ছিল মোট ৮। এ মাসে ছয়জন কয়েদি ও সাতজন হাজতির মৃত্যু হয়েছে।
কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চারজন কয়েদি ও দুজন হাজতি, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে একজন কয়েদি ও শেরপুর জেলা কারাগারে একজন কয়েদি মারা যান। এ ছাড়া খুলনা জেলা কারাগারে, টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে, চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে, সিরাজগঞ্জ কারাগারে ও মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে একজন করে হাজতি বন্দী মারা যান। সব বন্দীর মৃত্যু হয় কারাগারের বাইরে হাসপাতালে।
এমএসএফের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কারা হেফাজতে মৃত্যু এবং অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের সংখ্যা বৃদ্ধি মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতির চিত্র তুলে ধরে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই লাশ উদ্ধার করেই ক্ষান্ত হচ্ছে। কিন্তু এসব লাশ উদ্ধার করে তার পরিচয় শনাক্ত করা এবং সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করে মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন করাই শুধু নয়, এসব লাশ আত্মীয়-পরিজনের কাছে পৌঁছে দেওয়া এসব বাহিনীর কাজ। কিন্তু একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা করা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আর কোনো কাজ নেই।
সাইদুর রহমান বলেন, অজ্ঞাতনামা লাশের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং হেফাজতে মৃত্যু বৃদ্ধি জনমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করে।
গণপিটুনিতে হত্যা চলছেই, বেড়েছে রাজনৈতিক সহিংসতাঅক্টোবর মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৪৯টি ঘটনার শিকার হয়েছেন ৫৪৯ জন। এর মধ্যে ২ জন নিহত এবং ৫৪৭ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ এবং নিহত ব্যক্তিরা বিএনপির কর্মী–সমর্থক। সেপ্টেম্বর মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৩৮টি ঘটনা ঘটেছিল।
সহিংসতার ৪৯টি ঘটনার মধ্যে ১১টি ঘটনায় রাজনৈতিক বিরোধ ও সহিংসতাকে কেন্দ্র করে পার্টি অফিস, বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিকাণ্ড এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
অক্টোবর মাসে মোট গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে ৪৪টি। আগের মাসে এ ঘটনা ঘটেছিল ৪৩টি। এ মাসে গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ১২। আগের মাসে নিহত হয়েছিলেন ২৪ জন।