সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারপারসন অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, যদি ঢাকা ক্লাব কিংবা গুলশান ক্লাবের সদস্যদের ওপর জরিপ করা হয়, তাহলে দেখা যাবে, শতভাগ সদস্যই তাদের সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ান। নব্বই দশকের যারা বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করেছেন, তারা এখন সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি করেন। এখন মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণিও ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে পড়াতে চায়। বর্তমানে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে। এর পেছনে কাজ করছে মার্কেট মেকানিজম। ফলে পুরো সমাজ এখন বিভক্ত হয়ে গেছে।  এই বিভক্ত সমাজের প্রতিচ্ছবি বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা। এখান থেকেই বৈষম্যের শুরু হয়েছে।

গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী কেন্দ্রে ‘শিক্ষার হালচাল ও আগামীর ভাবনা’ শীর্ষক আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। এতে সভাপতিত্ব করেন এই অর্থনীতিবিদ। ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশন (সিএএমপিই) এ আয়োজন করে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা.

বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শারমিন্দ নিলোর্মী প্রমুখ। এ ছাড়া সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কনসালটেশন কমিটির আহ্বায়ক ড. মনজুর আহমদ এবং সিএএমপিইর উপপরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

রেহমান সোবহান বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইউরোপীয় সমাজে আমাদের বর্তমান সমাজের মতো অনেক বৈষম্য ছিল। কিন্তু যুদ্ধের পর ইউরোপীয় দেশগুলো বৈশ্বিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও একজন বাসচালকের সন্তান একই ধরনের শিক্ষা পেত। চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশও এদিকে ধাবিত হচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায়ও সবার জন্য সমান বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। 

বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, বিভিন্ন দল তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসে। তাদের দাবিগুলো সাংঘর্ষিক। এক দলের দাবি মানলে আরেক দল অসন্তুষ্ট হয়। এতে করে সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এ লক্ষ্যে আমি কিছু আমলাকে খুঁজে পাই, যারা প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করেছেন। আমি সবার দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে বলেছিলাম, সরকারের পক্ষে যা করা সম্ভব, সে বিষয়ে পরামর্শ দিতে। তারা অনেক খেটে কিছু সুপারিশ করেছেন, সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে। 

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, দেশের মাদ্রাসাগুলোকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনতে হবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে আইন হতে পারলে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে কেন নয়? মাদ্রাসাগুলো রেজিস্ট্রেশনের মধ্যে আনলে শিক্ষকদের দাবি-দাওয়াগুলো আরও ভালোভাবে উঠে আসবে। শিক্ষকদের ক্লাসরুমের বাইরেও অনেক কাজ করতে হয়। তাদের বোঝা কমাতে হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

হস্তক্ষেপ নয়, পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী টিম ডিরেক্টর রাজ্জা

সংবাদ সম্মেলন তখন শেষ। আব্দুর রাজ্জাককে মনে করিয়ে দেওয়া হলো, ‘‘বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর কিন্তু টসেও ইনপুট দিতেন। আপনি কি…?’’ রাজ্জাক মুখে হাসি আটকে রাখেন। এই পদে আসন্ন আয়ারল‌্যান্ড সিরিজে দায়িত্ব পাওয়া রাজ্জাক স্রেফ এতোটুকুই বলতে পারেন, ‘‘আমাদের থেকে এমন কিছু কখনোই দেখতে পারবেন না। আমরা নতুন কিছু নিয়ে ভাববো।’’ 

জাতীয় দলকে নিয়ে সেই ভাবনা থেকেই ‍আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বোর্ড একজনকে টিম ডিরেক্টর নিয়োগ দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের জাতীয় পুরুষ দলের ব‌্যর্থতার কারণে আলোচনা হচ্ছিল, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ওপরে একটি ছায়া বিভাগ থাকবে যারা সরাসরি জাতীয় দল পর্যবেক্ষণ করবে।

সেই ছায়া বিভাগে সাবেক ক্রিকেটাররাই থাকবেন। প্রথম টিম ডিরেক্টর হিসেবে রাজ্জাক পেলেন দায়িত্ব। কেন টিম ডিরেক্টর নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব হলো সেই প্রশ্ন করা হয় তাকে। নাজমুল হাসান বোর্ড সভাপতির দায়িত্বে থাকার সময় টিম ডিরেক্টর পদটি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। সাবেক অধিনায়ক ও বোর্ড পরিচালক খালেদ মাহমুদ এই দায়িত্ব পালন করেছেন বিশ্বকাপসহ বেশ কয়েকটি সিরিজে। দলের সঙ্গে গভীরভাবে মিশে যেতেন তিনি। টস থেকে শুরু করে টিম মিটিংয়ে দিতেন ইনপুট। যা নিয়ে পরবর্তীতে অভিযোগ করেছিলেন কোচ ও অধিনায়ক।

তবে রাজ্জাক নিজের কাজ, পরিধি এবং দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন বলেই নিশ্চিত করলেন,"অন্যান্য যে কোনো টিম ডিরেক্টরের মতোই হবে আমার কাজ। আমি সব কিছু পর্যবেক্ষণ করব, সব কিছুতে নজর রাখব। আর কখনও যদি টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করে আমার কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন, তাহলে সেটিও দেওয়ার চেষ্টা করব। তাদের সাহায্য প্রয়োজন হলে আমি করব।"

"ক্রিকেট বোর্ডের মনে হয়েছে, দলের সঙ্গে একজন টিম ডিরেক্টর থাকলে ভালো হবে। এই পদটি কিন্তু আগেও ছিল। অনেক দিন ধরেই ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বোর্ড পরিচালকের সংখ্যা কম থাকায় হয়তো দলের সঙ্গে কেউ যায়নি। তবে এর আগে প্রায় সিরিজেই দলের সঙ্গে টিম ডিরেক্টর থাকত।" - যোগ করেন তিনি।

ঢাকা/ইয়াসিন 

সম্পর্কিত নিবন্ধ