নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেছেন, “আপনারা ইতোমধ্যে বারবার জেনেছেন, প্রধান উপদেষ্টাসহ দায়িত্বশীল সকলেই বলেছেন ডিসেম্বরের মধ্যেই সংসদ নির্বাচন হবে। কাজেই আমাদের প্রধান লক্ষ্য সংসদ নির্বাচন, স্থানীয় নির্বাচনের কথা এই মুহূর্তে আমরা চিন্তাভাবনা করছি না।”

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকার ধামরাই উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে, উপজেলা পরিষদ চত্বরে তাকে গার্ড অব অনার দেয় উপজেলা প্রশাসন।

নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, “স্থানীয় নির্বাচনের যে সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে, তাতেও কিন্তু নির্বাচনের জন্য সরকারের কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি। কোনো অনুরোধ আসেনি স্থানীয় নির্বাচন করার জন্য। স্থানীয় নির্বাচন বিভিন্ন ধাপে ধাপে করতে হয়, এতে প্রায় এক বছর লেগে যায়। কাজেই এই মুহূর্তে যদি আমরা স্থানীয় নির্বাচন করি, তাহলে আমাদের সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বর বা জানুয়ারির মধ্যে করা খুবই অসম্ভব এবং কঠিন।” 

তিনি বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য সংসদ নির্বাচন করা। আমরা এটা নিয়েই কাজ করছি। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। ভোটার লিস্ট জুনের মধ্যে চূড়ান্ত হয়ে যাবে। জুনের পর ডিসেম্বরে যদি আমাদের করতে হয়, তাহলে আমাদের অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। তার আগে স্থানীয় নির্বাচন করাটা এই মুহূর্তে আমাদের জন্য সম্ভব মনে করছি না।”

এসময় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ইসি বলেন, “আমরা আশা করি, আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ দিনকে দিন উন্নত হচ্ছে। এখানেও কথা বললাম, তারা বললেন, পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আমরা আশা করি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।” 

ধামরাই উপজেলা নির্বাচন অফিস পরিদর্শন শেষে ধামরাই পৌরসভার ঢুলিভিটা মুন্নু কমিউনিটি সেন্টারে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তিনি।

এসময় তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন, ধামরাই সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.

মো. সেলিম মিয়া, ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক প্রমুখ।

ঢাকা/সাব্বির/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কথার আগে গুলি চালায় ‘কাকন বাহিনী’, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় সাঁড়া ইউনিয়নের ইসলামপাড়া। পদ্মায় ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলছিলেন ইজারাদার সুলতান আলী বিশ্বাসের লোকজন। হঠাৎ নদীর কুষ্টিয়া প্রান্ত থেকে স্পিডবোট ও বড় নৌকায় আচমকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ছুটে আসে একদল দুর্বৃত্ত। আতঙ্কে শ্রমিকেরা দৌড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান। প্রায় ৫০টি গুলি করার ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও নদীপারের বেশ কয়েকটি বাড়ির টিনের বেড়া ও চালা গুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ ঘটনা ১৩ অক্টোবরের। স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীরা বলছেন, বালুমহালের ইজারাকে কেন্দ্র করে এভাবে হঠাৎ এসে গুলি ছুড়ে আতঙ্ক তৈরি করেন ‘কাকন বাহিনী’র সদস্যরা। বালু লুট, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, জমির দখল নিয়ে এই বাহিনীর সদস্যদের নামে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তাঁদের কাছে এখন রাজশাহীর বাঘা, নাটোরের লালপুর, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বিস্তীর্ণ পদ্মার চরের মানুষেরা জিম্মি।

সর্বশেষ গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) দৌলতপুরের পদ্মা নদীর দুর্গম চরে এই বাহিনীর গুলিতে দুই কৃষক নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুজন। নিহত দুজন মণ্ডল গ্রুপের আমান মণ্ডল (৩৬) ও নাজমুল মণ্ডল (২৬) বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি বলছে, একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে কাকন বাহিনীর সদস্য লিটনও (৩০) নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানের নাম অনুসারে বাহিনীর নাম ‘কাকন বাহিনী’। এই বাহিনী পদ্মা নদীতে স্পিডবোট নিয়ে নিয়মিত সশন্ত্র মহড়া দেয়। সম্প্রতি ড্রোন দিয়ে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা তার ভিডিও ধারণ করে প্রশাসনকে দিয়েছেন। এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তারপরও কাকন বাহিনীর দাপটে এলাকার কৃষকেরা তাঁকে চাঁদা না দিয়ে ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। গত সোমবার কাশবন দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই গোলাগুলির সূত্রপাত ঘটেছিল।

বাহিনীটির বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক) মোহাম্মদ শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আপনারা দেখতে পাবেন, পুলিশ এদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে।’

আরও পড়ুনদুজনকে হত্যার ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ কাকনকে প্রধান আসামি করে মামলা২৯ অক্টোবর ২০২৫

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গম চরে একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এসব বাহিনীর সদস্যরা চরের বালু ও জমি দখল নিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটান। তাঁরা এক চরে অপরাধ করে আরেক চরে গিয়ে আশ্রয় নেন। কখনো চরের বিশাল কলাবাগান, আবার একেবারে সীমান্তের শূন্যরেখায় মাঠের মধ্যে গিয়ে আস্তানা গড়ে তোলেন তাঁরা।
চার জেলাজুড়ে বিস্তৃত পদ্মার দুর্গম এই চরাঞ্চলে প্রায় ২০ বছর আগেও দুটি সন্ত্রাসী বাহিনীর উত্থান ঘটেছিল। তাদের ভাগ না দিয়ে কেউ চরের ফসল ঘরে তুলতে পারতেন না। এ নিয়ে দ্বন্দ্বে তাদের হাতে ওই সময় ৪১ জন মানুষ খুন হন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। তখন চরের মাটিতে পা দিতে গা ছমছম করত। দুই বাহিনীর নাম ছিল ‘পান্না বাহিনী’ ও ‘লালচাঁন বাহিনী’। পান্নার ওস্তাদ ছিলেন এই কাকন।

২০০৫ সালের ২৫ এপ্রিল প্রথম আলোতে ‘বাঘা-লালপুর দৌলতপুরের তিন গ্রামে পান্না বাহিনীর সন্ত্রাস, ৬০ পরিবার বাড়িছাড়া’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার কিছুদিন পরেই ‘ক্রস ফায়ারে’ পান্না নিহত হন। একইভাবে তাঁর প্রতিপক্ষ লালচাঁনসহ দুই বাহিনীর অন্তত ২৫ জন সদস্য নিহত হন। তারপর শান্ত হয়েছিল পদ্মার চর।

যেভাবে উত্থান ‘কাকন বাহিনীর’বাহিনীর প্রধান মো. রোকনুজ্জামান কাকন ওরফে ইঞ্জিনিয়ার কাকন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘নির্বাচনের আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই দেওয়া হবে’ 
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
  • প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর জানাযায় মতি, কান্নাজড়িত কণ্ঠে চাইলেন ক্ষমা
  • সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
  • কষ্টি পাথরের শিবলিঙ্গসহ গ্রেপ্তার ৩
  • ১২ ও ১৩ নং ওয়ার্ডের পোলিং এজেন্টদের নিয়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত 
  • রূপগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরণ 
  • গণভোট নিয়ে উত্তাপ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: প্রেস সচিব
  • কথার আগে গুলি চালায় ‘কাকন বাহিনী’, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল